মহাকাশচর্চায় আমেরিকাকেও পিছনে ফেলল ভারত, ৫ বছরেই কামাল দেখালো ইসরোর স্পেস টেলিস্কোপ

হার মানল বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ-ও

নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ যা দেখতে পায়নি, তারই সন্ধান দিল ভারতীয় অ্যাস্ট্রোস্যাট

ভারতীয় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন বিরল একটি গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ

পৃথিবী থেকে ৯০৩ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই ছায়াপথটি

 

amartya lahiri | Published : Aug 26, 2020 10:19 AM IST / Updated: Aug 27 2020, 02:45 PM IST

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ হল নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ। কিন্তু, তাকে কাজে লাগিয়ে মার্কিন বিজ্ঞানীরাও যা করতে পারেননি, তাই করে দেখালেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি ভারতের বহু-তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পৃথিবীকে প্রদক্ষিণকারী স্পেস টেলিস্কোপ, 'অ্যাস্ট্রোস্যাট'-এর সাহায্য়ে ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন বিরল একটি গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ। পৃথিবী থেকে ৯০৩ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই ছায়াপথটির নাম দেওয়া হয়েছে এইউডিএফএস০১ (AUDFs01)।  

এই আবিষ্কারে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সহায়তা করেছেন সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং নেদারল্যান্ডসের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাও। তবে গবেষক দলটির নেতৃত্বে ছিলেন পুনের ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এর অধ্যাপক কনক সাহা। তাঁরা জানিয়েছেন, ছায়াপথটি এক্সট্রিম আল্ট্রাভায়োলেট স্পেকট্রাম বা চরম-অতিবেগুনী বর্ণালীর পরিবেশে রয়েছে। এই প্রথম চরম-অতিবেগুনী পরিবেশে নক্ষত্র গঠনের মতো কোনও গ্যালাক্সির খোঁজ পাওয়া গেল। সেই দিক থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে এই আবষ্কার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

২০০৩ এবং ২০০৪ সালের মধ্যে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ থেকে সংগৃহিত তথ্যের মাধ্যমে এইচইউডিএফ ফরেনাক্স নক্ষত্রপুঞ্জের ভিতর একটি ছোট অঞ্চলের মানচিত্র তৈরি করা হয়েছিল। একে বলা হয় হাবল হাবল আল্ট্রা ডিপ ফিল্ড বা এইচইউডিএফ। মহাকাশের এই অংশ হাজার হাজার ছায়াপথ রয়েছে। এটিই মহাকাশ চর্চার ইতিহাসে মহাকাশের সবচেয়ে দূর অঞ্চলের ছবি। তারও মধ্যে একটি ছোট জায়গা রয়েছে যেখানে ছায়াপথের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। একে বলা হয় এক্সট্রিম ডিপ ফিল্ড বা এক্সডিএফ। এই এক্সডিএফ এলাকাতেই এই নতুন গ্যালাক্সিটি আবিষ্কার করা হয়েছে। অর্থাৎ, হাবল টেলিস্কোপও এই ছায়াপথটির সন্ধান দিতে পারেনি।

২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে অ্যাস্ট্রোস্যাট এক্সডিএফ-এর একটি অংশে একটানা ২৮ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ চালিয়েছিল। সেই পর্যবেক্ষণের ফলে পাওয়া তথ্য নিয়ে দুই বছর ধরে গবেষকরা গবেষণা চালান। তারপরই এইউডিএফএস০১ ছায়াপথটির অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত বয়েছেন তাঁরা। এই কাজে যুক্ত গবেষকরা জানিয়েছেন হাবল টেলিস্কোপের ছবিতে ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ বেশি থাকে। তাই এই ছায়াপথ থেকে অতিবেগগুনি রশ্মির নির্গমন সে সনাক্ত করতে পারেনি। অ্যাস্ট্রোস্যাট-ই এই অনন্য কীর্তিটি অর্জন করল।

এক্সডিএফ এলাকায় প্রায় ৫,৫০০ টি ছায়াপথ রয়েছে। এগুলির মধ্যে কোনও কোনওটি প্রায় ১৩২০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে। জানা গিয়েছে মহাবিশ্বের বয়স মোটামুটিভাবে ১৩৭০ কোটি বছর পুরানো। অর্থাৎ এই ছায়াপথগুলি মহাকাশ গঠনের প্রায় একই সময়ে গঠিত হয়েছিল। এক্সডিএফ অঞ্চলের সর্বকনিষ্ঠ ছায়াপথটি তৈরি হয়েছিল বিগ ব্যাং অর্থাৎ মহাকাশের জন্মের প্রায় ৪ কোটি ৫০০ লক্ষ বছর পর।

Share this article
click me!