চিন ও পাকিস্তান সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে বিশেষ ড্রোনের ব্যবহার ভারতীয় বায়ুসেনার, কীভাবে কাজ করছে এটি

লং রেঞ্জ মিসাইল উইপন সিস্টেমে সজ্জিত চারটি হেরন মার্ক ২ ড্রোন উত্তর সেক্টরের ফরোয়ার্ড ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়েছে। এই ড্রোনগুলো স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন সক্ষমতায় সজ্জিত, সেক্ষেত্রে এগুলো অনেক দূর থেকে চালানো যায়।

Parna Sengupta | Published : Aug 13, 2023 11:38 AM IST

পাকিস্তান ও চিন উভয়ের ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপের উপর নজর রাখতে ভারতীয় বিমান বাহিনী তার অত্যাধুনিক হেরন মার্ক ২ ড্রোন মোতায়েন করেছে। বিশেষ বিষয় হল এই ড্রোনগুলিও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত এবং একবার উড়ানের সময় তারা চিন ও পাকিস্তান উভয়ের সীমান্ত পর্যবেক্ষণ করতে পারে।

একই সময়ে, লং রেঞ্জ মিসাইল উইপন সিস্টেমে সজ্জিত চারটি হেরন মার্ক ২ ড্রোন উত্তর সেক্টরের ফরোয়ার্ড ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়েছে। এই ড্রোনগুলো স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন সক্ষমতায় সজ্জিত, সেক্ষেত্রে এগুলো অনেক দূর থেকে চালানো যায়। এ ছাড়া তারা লেজার প্রযুক্তির সাহায্যে শত্রুর লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করতে সক্ষম যাতে যুদ্ধবিমান দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করে তাদের ধ্বংস করতে পারে। এই ড্রোনটি এতটাই শক্তিশালী যে এক জায়গা থেকে সারা দেশের ওপর নজর রাখতে পারে। ড্রোন স্কোয়াড্রনের কমান্ডিং অফিসার পঙ্কজ রানা বলেন, একটি ফ্লাইট দিয়ে একাধিক মিশন চালানো যায়। এটি গোয়েন্দা, নজরদারি এবং লক্ষ্য এই তিনটি কাজই করতে পারে।

সেনা সূত্রের খবর আগে ভারতের হাতে যে ড্রোনগুলি ছিল এগুলি তার থেকে অনেক বেশি উন্নত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে এই ড্রোনগুলি তুলে দিয়েছে। সীমান্তে চিনা বাহিনীকে প্রতিহত করতে সবমিলিয়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার যুদ্ধসরঞ্জাম কেনা হয়েছে।

হেরন ড্রোনের বিশেষত্ব

এটি চালকহীন অবস্থায় উড়তে পারে

মাটি থেকে ১০.৫ কিলোমিটার বা ৩৫ ফুট উচ্চতায় সহজেই উড়তে পারে

৫২ ঘণ্টা ঘরে আকাশে উড়ে নজরদারী চালাতে পারে।

একই সঙ্গে এটি বিশেষ অপারেশনও চালাতে পারে

ইসরায়ের প্রথম ২০০৫ সাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এজাতীয় ড্রোন কেনে। তারপর নিজেরাই ড্রোনটি নিয়ে একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষা করে আরও উন্নত তৈরি করেছে। হেরনে একটি অভ্যন্তরীন GPS নেভিগেশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এটি পূর্বে প্রোগ্রাম করা ফ্লাইট প্রোফাইল বা গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশন অর্থাৎ যেখান থেকে ড্রোনটির উড়ান শুরু হয়ে সেখান থেরে কন্ট্রোল করা যায়। এটির প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে গ্রাউন্ড স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে নিজে নিজে বেস বা ল্যান্ডে ফিরে আসতে পারে। এজাতীয় ড্রোনের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল স্টিস্টেমটি নিজেনিজেই পুনরুদ্ধার হতে পারে। আর সমস্ত আবহাওয়ায় এটি কার্যকর।

সেনা সূত্রে খবর এই ড্রোনটি ২৪ ঘন্টা নজরদারি করতে সক্ষম। এই ড্রোনটি যেকোনো আবহাওয়ায় চালানো যায় এবং এটি তার কাজ করতে সক্ষম। এটি বিমানবাহিনীর সবচেয়ে বড় মানবহীন যন্ত্রপাতি। এছাড়াও এই ড্রোনগুলি বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করা যেতে পারে যার মধ্যে রয়েছে আকাশ থেকে স্থল ক্ষেপণাস্ত্র, অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক অস্ত্র এবং বোমা। একজন পাইলট বলেছিলেন যে হেরনের নতুন সংস্করণটি পুরানোটির চেয়ে অনেক ভাল।

হেরন মার্ক ২ সাব-জিরো তাপমাত্রায়ও কাজ করতে পারে, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এটি বিমানবাহিনীর জন্য দারুণ সহায়ক হতে চলেছে। ভারতীয় বায়ুসেনা চিতা প্রকল্পে কাজ করছে। এর আওতায় প্রায় ৭০টি ড্রোনকে অস্ত্রে সজ্জিত করার কথা রয়েছে। এছাড়াও, ভারতীয় সেনাবাহিনী ৩১টি প্রিডেটর ড্রোনও পেতে চলেছে যা নৌবাহিনীর জন্য দারুণ সহায়ক হবে। ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছে এরকম ১৫টি ড্রোন থাকবে। এ ছাড়া অন্যান্য বাহিনীকে ৮-৮টি ড্রোন দেওয়া হবে।

Share this article
click me!