সেনাপ্রধান বলেন, ভারতীয় সেনা হাসপাতাল মাত্র ছয় ঘণ্টায় প্রস্তুত করা হয় এবং তুরস্কে অস্থায়ীভাবে ৩০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। এটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ছিল।
ভারতীয় সেনা মেডিকেল টিম ৬০ প্যারা ফিল্ড ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত তুরস্কে সহায়তা দেওয়ার পর মঙ্গলবার দেশে ফেরে। এই অসম সাহসী টিমকে সম্মানিত করেন সেনাপ্রধান মনোজ পান্ডে। তিনি সেনাবাহিনীর অপারেশন দোস্ত এবং কীভাবে এটি তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করেছে তার প্রশংসা করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে জানান এই সময়ে তুরস্কের মাটিতে দাঁড়িয়ে কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে ভারতীয় সেনার মেডিক্যাল টিমকে।
সেনাপ্রধান বলেন, ভারতীয় সেনা হাসপাতাল মাত্র ছয় ঘণ্টায় প্রস্তুত করা হয় এবং তুরস্কে অস্থায়ীভাবে ৩০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। এটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ছিল। গ্রাউন্ড হাসপাতালটি ১৪ দিনের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সেখানে নিয়োগ করা হয়েছিল। সেনাপ্রধান বলেন, হাসপাতালে প্রায় ৩,৬০০ রোগীর চিকিৎসা হয়েছে। আমরা তুর্কি নাগরিকদের কাছ থেকে তাদের প্রয়োজনের সময়ে সহায়তা প্রদানের জন্য তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার বার্তা পেয়েছি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার তুরস্কের ভূমিকম্পে ত্রাণ কাজে পাঠানো ভারতীয় উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে কথা বলেছেন। অপারেশন দোস্ত মিশনে যাওয়া ত্রাণ দলগুলিকে উত্সাহিত করে, প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন যে যখনই ভারতীয় দল তেরঙ্গা নিয়ে কোথাও পৌঁছায়, তখনই চারপাশে নিরাপত্তার অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে যে এখন সবকিছু ঠিক হয়ে যাচ্ছে। তেরঙ্গা নিয়ে পৌঁছে যাওয়া এই দলের ভূমিকা কয়েকদিন আগে ইউক্রেনে দেখা গিয়েছিল, এখন তা তুরস্কে প্রমাণিত হয়েছে।
মোদী বলেন যে অপারেশন দোস্ত মানবতার প্রতি ভারতের উত্সর্গের প্রতিশ্রুতিকেই প্রমাণ করে। দুর্দশাগ্রস্ত দেশগুলিকে সাহায্য করার জন্য ভারতের এই ভূমিকা বিশ্ব মঞ্চে প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন যে তুরস্কের ভূমিকম্পের পরে আপনারা যে গতিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন তা সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই ভূমিকা প্রশংসনীয়। আপনারা যে সব রকম পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত, তা প্রমাণ করে। প্রমাণ করে আপনাদের প্রশিক্ষণের দক্ষতা। দেশ যাই হোক না কেন, এটি যদি মানবতার, মানুষের সংবেদনশীলতার বিষয় হয়, তবে ভারত মানব স্বার্থকে সর্বাগ্রে রাখে। এটা আপনারা সারা বিশ্বকে দেখিয়েছেন।
তুরস্কে পঞ্চমবারের মতো আবারও ভূমিকম্প
তুরস্ক ও সিরিয়ায় সর্বশেষ চারটি ভূমিকম্পের পর পরিস্থিতি ঠিক ততটাই খারাপ ছিল। এর মধ্যেই সোমবার রাতে আর একটা ভূমিকম্প হয়। সোমবার আবারও ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যু হয় তিনজনের। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ ভূমিকম্পের বিপর্যয় থেকে কোনও দেশই আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
দুই দেশেই ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ৪৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, তুরস্কে প্রায় ২৬৪,০০০ অ্যাপার্টমেন্ট ধ্বংস হয়েছে এবং অনেক লোক এখনও নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।