চিনকে কি সত্যিই বয়কট করা যাবে, ভারতের অর্থনীতিতে কত টাকার বিনিয়োগ জিনপিং-এর দেশের

সাধারণ মানুষ সকলেই বলছেন বয়কট চায়না

সরকার বলছে অর্থনৈতিকভাবে চিনকে জবাব দেওয়ার কথা

কিন্তু সত্যি সত্যিই কি চিনকে বয়কট করা যাবে

ভারতে কত টাকার বিনিয়োগ আছে তাদের

 

amartya lahiri | Published : Jun 18, 2020 1:23 PM IST

গত সোমবার রাতে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সীমান্তে দুইপক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এরপরই গোটা দেশে আওয়াজ উঠেছে 'বয়কট চায়না'। অর্থাৎ চিনা পণ্য ব্যবহার বন্ধ করা হোক। মোদী সরকার-ও ইঙ্গিত দিয়েছে শুধু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সামরিক অভিযানে নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও চিনের উপর প্রতিশোধ নেওয়া হবে। কিন্তু, সত্যিই কি চিনকে বয়কট করা যাবে? অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রতিশোধ নেওয়া যাবে ২০ জওয়ানের মৃত্যুর? সীমান্ত পরিস্থিতির থেকেও কিন্তু এটা অনেক বড় প্রশ্ন।

বর্তমানে জিডিপির হিসাবে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা অর্থনীতির দেশ হল চিন। ২০০৮ সালে বিশ্বজুড়ে যে মন্দা দেখা দিয়েছিল, তারপর থেকে দারুণ গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে বেজিং-এর অর্থনীতি। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশই এই অর্থনৈতিক বৃদ্ধির ভাগ পেতে গত কয়েক বছরে চিনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করেছে। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়।

সরকারিভাবে, ভারতে চিনের মোট এফডিআই বা সরাসরি বিনিয়োগ এখন ২.৩ বিলিয়ন ডলার বা ১৭৫৪৭ কোটি টাকারও বেশি। তবে এছাড়াও পরিকাঠামোগত প্রকল্পে কর্পোরেট বিনিয়োগ ও ঘুরপথে বিনিয়োগ রয়েছে। যা মেলালে কারোর কারোর মতে ৬ বিলিয়ন (৪৫৭৭৫ কোটি টাকা) আবার কারোর মতে ৮ বিলিয়ন ডলার (৬১০৩৩ কোটি টাকা)। এরসঙ্গে প্রতিবছর চিনা পর্যটকদের হাত ধরে আসে অতিরিক্ত ৫৫০ মিলিয়ন ডলার বা ৪১৯৬ কোটি টাকা।

পেটিএম, ওলা, স্ন্যাপডিল বা সুইগি-র মতো ভারতীয় স্টার্টআপ সংস্থাগুলিতে বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে আলিবাবা, শাওমি, টেনসেন্ট, চিন-ইউরেশিয়া ইকোনমিক কোঅপরেশন ফান্ড, দিদি চুকসিং, শুনউই ক্যাপিটাল বা ফোসুন ক্যাপিটালের মতো চিনা সংস্থাগুলির। ভারতের স্মার্টফোন বাজারের ৫১ শতাংশ রয়েছে চিনা সংস্থাগুলির হাতে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ২০১৮ সালে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৫৭.৮৬ বিলিয়ন ডলারের। আবার ৫ জি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে চিনা প্রযুক্তি সংস্থা হুয়ায়েই-কে পরীক্ষামূলক পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে ভারত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ বারণ করেছিল। মোদী সরকার সেকথা শোনেনি।

ফলে বোঝাই যাচ্ছে, ভারতীয় অর্থনীতির অত্যন্ত গভীরে ঢুকে গিয়েছে চিন। খুব সহজে এই চিন নির্ভরতা কাটানো যাবে না। এদিন ভারতীয় রেলমন্ত্রক একটি চিনা সংস্থাকে বরাত দেোয়া প্রকল্প বাততিল করেছে। বিএসএনএল-কে বলা হয়েছে ৫জি পরিকাঠামো তৈরিতে চিনা সামগ্রী ব্যবহার না করতে বলা হয়েছে। তবে দু-একটি এই ছোটখাট নিষেধাজ্ঞায় চিনকে ধাক্কা দেওয়া যে যাবে না, তা উপরের পরিসংখ্য়ানেই প্রমাণিত। একমাত্র ভারত আত্মনির্ভর হলেই চিনকে সম্পূর্ণ বয়কট করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তবে, তাতে সময় লাগবে।

 

Share this article
click me!