সোমবার থেকে শুরু হল লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন। আর প্রথমদিনই নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রায় একমাস ধরে চলা প্রতিবাদ পৌঁছে দিল সংসদে। ফের একবার জেএনইউ-এর ছাত্র ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হল রাজধানীর রাজপথ।
এদিন সকালে ক্যাম্পাস থেকে মিছিল করে সংসদ ভবনে যাওয়ার পরিকল্পমনা নিয়েছিল জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদ। তাদের লক্ষ্য ছিল হস্টেলের ফি বৃদ্ধি-সহ নয়া যেসব বিধিনিষেধ চালু করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে, তার প্রতিবাদ ভারতের গণতন্ত্রের একেবারে উপর মহলে পৌঁছে দেওয়া।
এই মিছিলকে প্রতিরোধ করতে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে জেএনইউ ক্যাম্পাসের বাইরে আধ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ এলাকা জুড়ে ত্রিস্তর ব্যারিকেড গড়া হয়েছিল। জারি করা হয়েচিল ১৪৪ ধারা। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের জেদের সামনে সেই ব্যারিকেডের বাধা কাজে আসেনি। ছিল জল কামানও। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ হয়নি। ছাত্রছাত্রীরা সেইসব বাধা পেরিয়ে বের সরাই রোড ধরে এগোতে থাকেন।
অবস্তা বেগতিক দেখে খবর দেওয়া হয় আধা সেনাকে। সিআরপিএফ-এর বিশাল বাহিনী এসে বাবা গগননাথ মার্গের কাছে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের সামনে মিছিল আটকায়। নতুন করে ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। শিক্ষার্থীদের পিরে যেতে অনুরোধ করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। নাহলে গ্রেফতার করা হবে, এমন হুমকিও দেওয়া হয়।
তাতেও প্রতিবাদীরা না দমে যাওয়ায় পুলিশ এরপরই বেশ কয়েকজন ছাত্রকে আটক করেছে বলে জানা গিয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের দাবি তাদের অনেককেই আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু আটক ছাত্রছাত্রীদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা কিছুই জানানো হয়নি।
এর মধ্যে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জেএনইউ-তে স্বাভাবিক পঠন পাঠনের পরিবেশ ফেরাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় তার সুপপারিশ করার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হস্টেলের ফি একধাক্কায় প্রায় ২৯০০ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিবাদে ছাত্রছাত্রীদের এই প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল। এরপর তাদের প্রতিবাদের চাপে কর্তৃপক্ষ বর্ধিত বেতন কিছুটা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। একই সঙ্গে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য একটি প্রকল্প চালুর আশ্বাসও দেওয়া হয়। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা একে 'আইওয়াশ' হিসেবেই দেখেছে। তাদের দাবি বর্ধিত বেতনের সবটাই কমিয়ে বেতন আগের জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।