এতদিন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফসলের ক্ষতি দেখা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না ওয়ানাড়ের কৃষকদের। কেরালা হাইকোর্টের অনুমতিতে অবশেষে বন্য শুকরদের বিনা শাস্তির ভয়ে মারতে পারবে তারা।
স্বস্তি পেলেন কেরলের ওয়ানাড়ের কৃষকরা। শুক্রবার কেরল হাইকোর্ট এক অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে কৃষকদের তাদের কৃষিজমি রক্ষার্থে বন্য শুকর শিকার করার অনুমতি দিল। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের ১১ (১) (বি) ধারা অনুসারে তাদের এই অনুমতি দেওয়ার জন্য, রাজ্যের চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেনকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই আদেশ কার্যকর করে এক মাসের মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে। কেরল হাইকোর্ট আরও বলেছে, এই সমস্যার সমাধানে রাজ্য সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়াতেই এই নির্দেশ দিল তারা।
বিচারপতি পিবি সুরেশ কুমার এই অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ পাস করার সময় বলেন, বন্য শুকরের আক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সমাধান করতে রাজ্য প্রশাসন সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা স্বীকার করেই এই জাতীয় নির্দেশনা জরুরি ছিল। বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইনের ৬২ নম্বর ধারা অনুসারে বন্য শুকরকে 'শস্য়ের ক্ষতিকারী' হিসাবে ঘোষণা করার আর্জি জানিয়ে গত বছর কেরল হাইকোর্টে আবেদন করেছিল ছয় কৃষকের একটি দল। লিখিত আবেদনে তারা অভিযোগ করেছিল নিয়মিত তাদের ফসল নষ্ট হয় বন্য শুকরের আক্রমণে। কৃষকদের পক্ষে মামলাটি দায়ের করেছিলেন আইনজীবী অ্যালেক্স এম স্কারিয়া এবং আইনজীবী অমল দর্শন।
আবেদনকারীরা জানিয়েছিলেন, কোঝিকোড় জেলার পূর্বাঞ্চলের কৃষকরা ঘন ঘন বন্য শুকরের হানার শিকার হন। 'বন্য শুকর' বর্তমানে বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইনের দ্বিতীয় তফসিলের অন্তর্ভুক্ত। এমনকী জমি বা সম্পত্তির রক্ষার খাতিরেও যদি কেউ বন্য শুকরকে আক্রমণ করে বা হত্যা করে, তাহলে তাকে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হতে হবে। তাই, নিয়মিত বন্য শুকর এসে ফসল নষ্ট করে গেলেও, কৃষকদের অসহায়ভাবে দেখা ছাড়া কোনও উপায় নেই। বন্য শুকরের থেকে ফসল রক্ষা করতে গেলে ফৌজদারি শাস্তির মুখে পড়তে হবে। তারা চেয়েছিলেন বন্য শুকর, ইঁদুর, কাক, ফলখেকো বাদুড় ইত্যাদির মতো কয়েকটি প্রাণীকে ফসল ধ্বংসকারী হিসাবে ঘোষণা করা হোক, যাতে তাদের শিকার করা যায়। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের প্রতিক্রিয়া চেয়েছে আদালত।