'কাশ্মীরে জীবন অর্থহীন', দুদিন ধরে মৃত ভাইপোর মস্তিষ্ক কুড়োলেন কাকা

দুদিন ধরে খুঁজে বেরিয়েছেন ভাইপোর দেহাংশ

মাটি থেকে কাচিয়ে তুলতে হয়েছে তার মস্তিষ্ক

সেই ছেলের বাবা-ও এখন কর্মহীন

কাশ্মীরিরা কি এভাবে পড়ে পড়ে মরবেই

 

গত রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পাক সেনার ছোড়া গোলার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন তিন ভারতীয় নাগরিক। পাক রেঞ্জাররা বেছে বেছে বসত এলাকাগুলিকে নিশানা করছে বলে অভিযোগ করেছিল ভারতীয় সেনা। এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের খেলায় ঢুকতে একেবারেই নারাজ আব্দুল মজিদ কাটারিয়া। মৃত তিন ভারতীয়ের মধ্যে ছিল তাঁর ভাইপো, আট বছরের রেহাম কাটারিয়া।  
    
ভাইপোর মৃত্যুর পর ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির অবশেষের মধ্যে সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত, তার দেহাংশ খুঁজে বেড়িয়েছেন আব্দুল। একটি পাত্রে কাচিয়ে কাচিয়ে তুলতে হয়েছে মাটিতে পড়ে থাকা রেহাম-এর মস্তিষ্কের থকথকে অংশ। তারপর আর বেঁচে তাকার ইচ্ছেটাই চলে গিয়েছে তাঁর। বলেছেন, 'আমাদের কী হবে, আমরা তা জানি না। আমরা জানি না কখন গোলাগুলি শুরু হয়ে যাবে। আমরা বেঁচে থাকি বা না থাকি, কার কী আসে যায়?' ভাইপোর দেহের অংশ  খুঁজে বের করে করে কবর দিতে হচ্ছে, এ কেমন জীবন? তাঁর ব্যাকুল প্রশ্ন।

আব্দুল জানিয়েছে গত রবিবার দুপুরে নিয়ন্ত্রণরেখার ওইপার থেকে গোলাগুলি যখন শুরু হয়েছিল, তখন তিনি তাঁর ভাইয়ের বাড়ির বাইরেই ছিলেন। নিজেকে বাঁচাতে তিনি সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে শুয়ে পড়েছিলেন। তাঁর দুই সন্তান রেহাম-এর সঙ্গে ভাইয়ের বাড়ির ভিতরে ছিল। শুয়ে শুয়েই তিনি অসহায়ভাবে দেখেছিলেন, তাঁর ভাই বশির আহমদ-এর বাড়িতে এসে আঘাত করল একটি পাক গোলা।

Latest Videos

তারপর আর নিজেকে বাঁচানোর কথা মাথায় ছিল না। ছুটে আসেন বাড়ির ভিতর। দেখেছিলেন চারদিক রক্তে ভেসে যাচ্ছে। রেহাম নিথর হয়ে পড়ে আছে। মর্টার শেল'টি সোজা এসে লেগেছিল তার মাথায়। রেহাম-এর মা তার দেহ কোলে নিয়ে বসেছিলেন। আব্দুল তাকে বলতে পারেননি, যে তাঁর ছেলে আর নেই। আর তার ভাই ছেলের রক্তে হাত রেখে অন্য পাশে পড়ে ছিলেন। ভাইপোর মস্তিষ্কের কিছুটা পড়ে আছে মাটিতে, সে বেঁচে নেই জেনেও আব্দুল একটি অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে এসেছিলেন। যদি মৃত সন্তানের বাবা-মা কিছুটা শান্তি পায়।

অস্থায়ী ঠিকাদারের কাজ করেন আব্দুল। তাঁর ভাই বশির আহমদ কাজ করতেন ভারতীয় সেনার টেরিটরিয়াল আর্মিতে। কিন্তু, রেহাম ছোটবেলায় খুব অসুস্থ থাকত। তারজন্যই ২০১৩ সালে ছুটির পর রিপোর্ট করতে যেতে দেরি হয়েছিল বসির-এর। ১৩ বছর চাকরি করেও ওি দেরির জন্য তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তারপর থেকে রেহাম-কে নিয়েই স্বপ্ন দেখতেন তিনি। এখন আর কিছুই রইল না। এমনকী গোলার আঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় ছেলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতেও অংশ নিতে পারেননি তিনি।

আব্দুলের প্রশ্ন, কী নিয়ে এখন বাঁচবে তাঁর ভাই? সরকার কী তাঁকে কোনওভাবে সাহায্য করবে? কর্মসংস্থানের কোনও সুযোগ হবে? নাকি, সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা, দুই দেশের দ্বন্দ্বে এভাবেই পড়ে পড়ে মরবেন।

 

Share this article
click me!

Latest Videos

‘প্রণামের সংস্কৃতি ভুলে যাচ্ছে বাঙালি’ বিস্ফোরক মন্তব্য Dilip Ghosh-এর, দেখুন কী বলছেন | Dilip Ghosh
পুলিশের তৎপরতায় বানচাল ডাকাতির প্ল্যান! গ্রেফতার ২ অপরাধী, চাঞ্চল্য Birbhum-এ
'কুমিল্লা ছেড়ে চলে যা' কুমিল্লায় বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতোর মালা! | Bangladesh News |
'যেসব মুসলমানরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন তাঁদেরই পূর্বপুরুষেরা হিন্দু ছিল' বিস্ফোরক অর্জুন
চমকে উঠবেন! কৃষ্ণনগর পক্সো আদালতের বড় সাজা ঘোষণা | Nadia Latest News