বৃহস্পতিবার লোকসভায় তিন তালাক বিল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিজেপি নেত্রী রমা দেবীর উদ্দেশে আপত্তিকর মন্তব্য করে বসেন সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খান। এদিন নানা তর্কাতর্কিতে রমাদেবী তাঁকে বলেন, অন্য কোনও দিকে দৃষ্টিপাত না করে তাঁর দিকে তাকিয়েই তাঁর বক্তব্য পেশ করতে। আর এর উত্তরেই তিনি মন্তব্য করেন যে, তাঁর ইচ্ছা করে সবসময় রমা দেবীর চোখে চোখ রেখে কথা বলতে।
আর এরপরই লোকসভায় শুরু হয় চরম হইচই। কারওর দাবি তাঁকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে, কেউ কেউ আবার বলছেন তাঁকে এই মুহূর্তেই অপসারণ করা হোক। যদিও এই প্রসঙ্গে ক্ষমা চাইতে রাজি হননি তিনি। তাঁর দাবি তিনি যদি অসংসদীয় কোনও মন্তব্য করে থাকেন তাহলে তার জন্য ইস্তফা দিতে প্রস্তুত তিনি। বিজেপি সাংসদ খোদ রমা দেবী জানিয়েছেন লোকসভায় তাঁর থাকার কোনও অধিকার নেই। আজম খানের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন লোকসভা সাংসদ তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান, বিজেপি সাংসদ স্মৃতি ইরানি প্রমুখ।
এ প্রসঙ্গে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা জানিয়েছেন, তিনি সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সর্বদলীয় বৈঠকের আয়োজন করবেন। সেই সর্বদলীয় বৈঠকের পরই কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি। পাশাপাশি এই প্রসঙ্গে লোকসভার কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী জানান, কংগ্রেস দল সর্বদাই মহিলাদের অসম্মানের বিরোধীতা করে। এই প্রসঙ্গে সোনিয়া গান্ধীকে 'ইতালি কি কাঠপুতলি' বলে সম্বোধন করার প্রসঙ্গটিও তুলে ধরেন।
তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সংসদে দাঁড়িয়ে কেউ কাউকে বলতে পারেন না যে তাঁকে তাঁর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে হবে। লোকসভার স্পিকারের কাছে তিনি আবেদন করেন, এই প্রসঙ্গে তাঁর সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন মিমি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ স্মৃতি ইরানি জানিয়েছেন, সারা দেশ দেখছে কী হয়েছে। এই ঘটনা পুরুষ-সহ সকল সাংসদদের কাছে অত্যন্ত কলঙ্কজনক ঘটনা। এই ঘটনা দেখেও কারওর চুপ করে থাকা সম্ভব নয়, এই প্রসঙ্গে সকলকে সমবেতভাবে বলতে হবে যে এই ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন যে, এটা কারওর বাড়ি নয় যে, কেউ আসবে এবং কোনও মহিলার চোখের দিকে তাকাবে। আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, আজম খানকে হয় ক্ষমা চাইতে হবে নাহলে তাঁকে অপসারণ করতে হবে।