শিন্ডে গোষ্ঠীর বিদ্রোহের পর উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন তিন দলীয় মহাবিকাশ আগাড়ি সরকারের সামনে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছিল গত বছরই। উদ্ধব ঠারকে পদত্যাগ করার পর রাজ্যপাল শিন্ডেকে সরকার গঠনের আহ্বান জানান।
একনাথ শিন্ডের গদি অটুট রেখে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট। মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে একনাথ শিন্ডেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালাবেন। উদ্ধব ঠাকরেকে মহারাষ্ট্রের মসনদ ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। কারণ তিনি আস্থা ভোটের মুখোমুখি না হয়ে আগেই স্বচ্ছায় পদত্যাগ করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে প্রাক্তন রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির উদ্দেশ্যমূলক উপাদানের ওপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্তে পৌছানোর কোনও কারণ ছিল না যে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। কারণ শিবসেনার মাত্র ৩৪ জন বিধায়ক উদ্ধবের ওপর অনাস্থা পেশ করেছিল।
শিন্ডে গোষ্ঠীর বিদ্রোহের পর উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন তিন দলীয় মহাবিকাশ আগাড়ি সরকারের সামনে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছিল গত বছরই। উদ্ধব ঠারকে পদত্যাগ করার পর রাজ্যপাল শিন্ডেকে সরকার গঠনের আহ্বান জানান। সেই সময় বিজেপির সহযোগিতায় সরকার তৈরি হয়। কিন্তু সরকারের বৈধতা নিয়ে মামলা হয়। সেই মামলায় শুনাতিতে এদিন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়ে রায় ঘোষণা করে।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছেঃ
১. শিন্ডে গোষ্ঠীর ভার গোগাওয়ালেকে শিবসেনার হুইপ হিসেবে নিয়োগ করার তৎকালীন স্পিকারের সিদ্ধান্ত ছিল বেআইনি। কারণ নির্বাচিত বিধায়কদের কার্যনির্বাহীকে দায়বদ্ধ করার দায়িত্ব রয়েছে। একই সঙ্গে সংবিধানের ২১২ অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যা করা যায় না যে বিধানসভার সমস্ত প্রক্রিয়াগত দুর্বলতা বিচারিক পর্যালোচনার বাইরে ছিল।
২. রাজ্যপালের বিচক্ষণতা অনুশীলন সংবিধান অনুযায়ী ছিল না।
৩. আদালত জানিয়েছে, যদি স্পিকার ও সরকার আনাস্থা প্রস্তাবে বাধা দেয় তাহলে মন্ত্রিপরিষদের সাহায্য ও পরামর্শ ছাড়াই ফ্লোর টেস্টের আহ্বান জানানো ন্যায়সংগত। কিন্তু বলা হয়েছে, যে দেবেন্দ্র ফড়নবীশ যখন সরকারকে চিঠি লিখেছিল তখন বিধানসভার অধিবেশন ছিল না।
৪. দলের অভ্যন্তরীন বিবাদ নিরসনের জন্য ফ্লোর টেস্টের ব্যবহার করা যাবে না। উল্লেখ করে বেঞ্চ বলেছেন, যে সংবিধান বা আইন রাজ্যপালকে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করার ও দলীয় বিরোধ মেটানোর ক্ষমতা দেয় না বা ভূমিকা পালন করার ক্ষমতা দেয় না।
তবে উদ্ধব ঠাকরে সরকারকে ফিরিয়ে আনার যাবে না - তারও কারণ ব্যাখ্যা করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
উদ্ধব ঠাকরে আস্থা ভোটের আগেই পদত্যাগ করেছেন।
নাবাম রেবিয়ার রায় একটি বৃহত্তর বেঞ্চে উল্লেখ করা হয়েছে।, প্রধান বিচারপতি আদেশটি ঘোষণা করে বলেছিলেন যে উল্লিখিত সমস্যাটি একটি বৃহত্তর বেঞ্চের দ্বারা পরীক্ষা করা দরকার।
২০১৬ সালের রায় বিধানসভার স্পিকারের ক্ষমতার সঙ্গে মোকাবিলা করে এবং রায় দেয় যে যদি স্পিকারের অপসারণের জন্য একটি পূর্ব নোটিশ হাউসের সামনে মুলতুবি থাকে তবে তিনি বিধায়কদের অযোগ্যতার জন্য আবেদনের ভিত্তিতে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না।
প্রধান বিচারপতি রায় ঘোষণা করেন। তিনি বলেন রাজ্যপাল যে রেজোলিউশনটির ওপর ভিত্তি করেছিলেন সেটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় না যে বিধায়করা মহাবিকাশ আগাড়ি সরকারের থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করতে চেয়েছিল।
আদালত বলেছে, সরকারের স্পিকার যদি একটি অনাস্থা প্রস্তাব ঠেকানোর চেষ্টা করে তবে রাজ্যপালের ফ্লোর টেস্টের আহ্বান জানান ন্যায় সংগত।
স্পিকারকে শুধুনমাত্র রাজনৈতিক দলের নিযুক্ত হুইপকেই স্বীকৃতি দিতে হবে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল এই মামলা। ১৬ মার্চ রায় সংরক্ষণ করে রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সুপ্রিম কোর্ট রায় ঘোষণা করে।