মথুরায় হিংসাত্মক বিক্ষোভের মধ্যে শুক্রবার আন্দোলনকারীরা পাথর ছুঁড়ে প্রতিবাদ জানানোর সময় একটি পরিবার পালানোর চেষ্টা করে। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
কোলে দুধের শিশু-সঙ্গে স্ত্রী। আর চারপাশে পাথরের বৃষ্টি। অগ্নিপথ বিক্ষোভকারীদের পাথর বৃষ্টির মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া ছুট লাগালেন এক ব্যক্তি। উত্তরপ্রদেশের মথুরায় দেখা গেল এই মর্মান্তিক দৃশ্য। উল্লেখ্য, বিহারের আরা থেকে হরিয়ানার পালওয়াল পর্যন্ত, উত্তর প্রদেশের আগ্রা থেকে গোয়ালিয়র, বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীতে চাকরির জন্য শত শত যুবক রাস্তায় নামে। সরকারি সম্পত্তির উপর ভাঙচুর চালায়।
আলিগড় ও আগ্রায় বাসে ঢিল ছোঁড়ে বিক্ষোভকারীরা। বুলন্দশহর, মথুরা, ফিরোজাবাদ এবং বালিয়া জেলাতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মথুরায় হিংসাত্মক বিক্ষোভের মধ্যে শুক্রবার আন্দোলনকারীরা পাথর ছুঁড়ে প্রতিবাদ জানানোর সময় একটি পরিবার পালানোর চেষ্টা করে। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। দেখা গিয়েছে একজন ব্যক্তি কোলে নিজের সন্তান ঢেকে কোনও রকমে পাথর বৃষ্টি থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে।
মঙ্গলবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর উপস্থিতিতে অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রথম থেকেই সেনার অন্দরে এই প্রকল্প নিয়ে দ্বিধা ছিল। প্রাক্তন সেনা প্রধান ও সেনা সদস্যদের অনেকেই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু তারপরেও সরকার তড়িঘড়ি অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে অগ্নিবীর নিয়োগের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে। বুধবার থেকেই শুরু হয় প্রতিবাদ আন্দোলন। বিজেপি বিরোধীদল গুলি আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। কংগ্রেস থেকে শুরু করে বামদলগুলি সরাসরি আন্দোলনকারীদের পাশে না দাঁড়ালেও প্রচ্ছন্ন মদত দিয়ে চলেছে তাদের।
মঙ্গলবার সেনা বাহিনীর তিনটি বিভাগে নিয়োগের জন্য অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু তারপর থেকেই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে সুর চড়িয়েছে চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু কেন চাকরি প্রার্থীরা এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেছে - কারণ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বছর ৪৬০০০ হাজার কর্মসংস্থান করা হবে।
অগ্নিপথ বিরোধী আন্দোলনের জেরে এখনও পর্যন্ত তিনটি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। প্রায় ২০০ টি ট্রেনের চলাচলের ওপর প্রভাব পড়েছে। ৩৫টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। অগ্নিপথ নিয়ে বিক্ষোভের জেরে গোটা দেশ উত্তাল। যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে একাধিক যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। শেষ সময়ে ট্রেনগুলি বাতিল হওয়ায় হয়রানি বাড়বে যাত্রীদের। এদিন সকালে নতুন করে বিক্ষোভ হলে ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন আধিকারিকরা।
ইস্ট - সেন্ট্রাল রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার পরই ওই ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে আগামীতে আরও বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিলের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।