'মিশনারিজ অফ চ্যারিটি'র (Missionaries of Charity) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাফাইয়েও মিটছে না বিতর্ক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সুরেই সুর মেলালো সিপিআইএম-কংগ্রেস (CPIM-Congress)।
বড়দিনের মধ্যেই ভারতে মাদার টেরেসার (Mother Teresa) সংস্থা, 'মিশনারিজ অফ চ্যারিটি'র (Missionaries of Charity) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার, এই সংবাদে উত্তাল হল বাংলা থেকে ভারতের রাজনীতি। দিনের শেষে চাপের মুখে মিশনারিজ অফ চ্যারিটির কোনও অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়নি বলে, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও, সমালোচনা থামছে না। আর এই বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে সুর মিলে গিয়েছে সিপিআইএম-এর (CPIM) সূর্যকান্ত মিশ্র (Surjya Kanta Mishra) থেকে কংগ্রেস (Congress সাংসদ শশী থারুরের (Shashi Tharur)।
এদিন, মাদার টেরেসার সংস্থার সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় লেনদেন বন্ধ করে দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে বলেন, ক্রিসমাসের সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার মাদার টেরেসার মিশনারিজ অফ চ্যারিটির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে শুনে তিনি স্তম্ভিত। বলেন, 'আইন সবার আগে হলেও, মানবতাবাদী প্রচেষ্টার সঙ্গে আপস করা উচিত নয়'।
একই সুরে সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র টুইট করে দাবি করেন, শুধু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই নয়, মিশনারিজ অব চ্যারিটির হাতে থাকা নগদ টাকাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। এতে করে রোগী এবং কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় ২২০০০ মানুষের খাদ্য ও ওষুধের অভাব দেখা দিয়েছে। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটটি কোট করে বলেছেন, 'মাদার টেরেসা যখন নোবেল পুরষ্কার (Nobel Award) জিতলে, ভারত আনন্দ করে। কিন্তু যখন তাঁর সংস্থা দরিদ্র ও দুস্থদের সেবা করে, তখন সরকার তাদের তহবিল বন্ধ করে দেয়। এটা অত্যন্ত অসম্মানজনক।'
প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের (Pranab Mukherjee) পুত্র তথা কংগ্রেস থেকে দল বদলে তৃণমূল হওয়া নেতা অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় (Abhijit Mukherjee) বলেছেন, মিশনারিজ অব চ্যারিটির সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে, সকলকে, বিশেষ করে খ্রিস্টান (Christians) ভাই-বোনদের মোদী সরকার (Modi Govt) ক্রিসমাসের যে উপহার আজ দিল, তা সকলে চিরদিন মনে রাখবে!' ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে একে 'লজ্জাজনক ধর্মীয় নিপীড়ন' বলে দাবি করেছেন প্রণব-পূত্র।
তবে, পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের (Union Ministry of Home Affairs) পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার কিছু করেনি বরং, মাদারের সংস্থা নিজেরাই তাদের অ্যাকাউন্টগুলি ফ্রিজ করার আবেদন করেছিল। তারা আরও জানিয়েছে গত ২৫ ডিসেম্বর মিশনারিজ অফ চ্যারিটির এফসিআরএ (FCRA) রেজিস্ট্রেশন পুনর্নবীকরণের আবেদন প্রত্যাহার করা হয়। কেন্দ্র জানিয়েছে, ২০১০ সালের ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট (FCRA) এবং ২০১১ সালের ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন রুলস-এর (FCRR) শর্ত পূরণ করতে পারেনি মিশনারিজ অব চ্য়ারিটিজ। বিষয়টি তাদের জানানোর পর, মাদারের সংস্থার পক্ষ থেকেই এসবিআই-কে (SBI) অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল।