একসঙ্গেই দাহ বিনয়-পবনের, অবুঝ মা-কে জোর করে কাঁদাল প্রতিবেশীরা

একসঙ্গেই দাহ করা হল নির্ভয়াকাণ্জের দুই আসামি বিনয় ও পবনের দেহ

আর বাকি দুই দেহ পাঠানো হয়েছে তাদের গ্রামের বাড়িতে

অপরাধীদের পরিবারদের পাশেই প্রতিবেশীরা

পবনের মা-কে জোর করে কাঁদালেন তাঁরা

amartya lahiri | Published : Mar 21, 2020 11:39 AM IST

ভারী পুলিশ মোতায়েনের মধ্যে, শুক্রবার দুপুর সোয়া ২টো নাগাদ রামকৃষ্ণপুরমের রবিদাস ক্যাম্পে তাদের বাড়িতে এসে পৌঁছেছিল নির্ভয়াকাণ্ডের দোষী বিনয় শর্মা এবং পবন গুপ্তার মৃতদেহ। গত সাত বছর একসঙ্গে কারাগারে সময় কাটানোর পর শুক্রবার একসঙ্গেই তাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। আর আরও দুটি আলাদা অ্যাম্বুল্যান্সে অক্ষয় কুমার ও মুকেশ সিং-এর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় যথাক্রমে বিহার ও রাজস্থানে তাদের গ্রামের বাড়িতে।

বিনয় শর্মা এবং পবন গুপ্তার মৃতদেহ তাদের বাড়ি থেকে গ্রীন পার্ক শ্মশান পর্য়ন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার পথ বহন করে নিয়ে যান জনা পঞ্চাশেক মানুষ। যাদের বেশিরভাগই তাদের পরিবারের সদস্য এবং পাড়া প্রতিবেশী। রাস্তার দুই ধার দিয়ে তখন উৎসাহি জনতা জ্বলজ্বলে চোখে দেখছে ধর্ষষকদের শেষযাত্রা। স্বাভাবিকভাবেই সামান্য সহানুভূতিও নেই। কেউ কেউ কটাক্ষ করে শ্মশানযাত্রীদের বলেছেন 'ফাঁসিওয়ালে'। কেউ হাল্কা করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, এদের শেষযাত্রায় আবার কারা যোগ দিল? জবাব এসেছে, শহিদ তো নয়, শুধু পরিবারের লোকজনই হবে।

তবে রবিদাস ক্যাম্পের ছবিটা আলাদাই ছিল। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের পরিবারদের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল তাদের পাড়া-প্রতিবেশীরা। পবন-এর বাড়ির বাইরে একটি সাদা চাঁদোয়ার নিচে চুপচাপ বসে ছিলেন তার মা। আর তাঁকে ঘিরে ছিলেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই জানিয়েছেন, পবনের ফাঁসির খবর পাওয়ার পর থেকে তিনি কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। একবার কাঁদেনওনি। পবন নেই, তা বুঝতেই চাইছেন না। ভাবছেন, প্রতিদিনের মতো জেল থেকে ফোন করবে ছেলে। এই অবস্থায় পাড়া প্রতিবেশীরা তাঁকে কাঁদিয়ে তাঁর মন হাল্কা করেন।

প্রতিবেশীদের বক্তব্য, পবনদের থেকেও অনেক বেশি নির্মম অপরাধ হয়েছে। তাঁরা নীঠারি মামলার কথা বলেছেন। তাঁদের বক্তব্য ফাঁসি যদি অপরাধ কমাতে পারত, তবে অভিযোগ করার কিছু ছিল না। কিন্তু, ফাঁসি দিয়ে অপরাধ কমেছে এমনটা ঘটেনি। আর বিনয় বা পবন-রা অপরাধ করেছে, তাদের পরিবার নয়। তাদের পরিবার খারাপ হলে তাদের পাশে তাঁরা কেউ থাকতেন না। এই ঘটনায় সত্যি সত্যি ক্ষতিগ্রস্থ হল অপরাধীদের পরিবার।

 

Share this article
click me!