নির্ভয়া কাণ্ডে মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্ট চার আসামির ফাঁসির পরোয়ানা জারি করেছে। ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় হবে ফাঁসি। এই নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নির্ভয়ার বাবা-মা। কিন্তু তারপরও বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন থামছে না।
২০১২ সালের ডিসেম্বরে ঘটেছিল এই নৃশংস ঘটনা। সারা ভারত এই ঘটনায় শিউরে উঠেছিল। তারপর থেকে কেটে গিয়েছে সাত-সাতটা বছর। ২০১২-তেই এই ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। ছয় আসামির মধ্যে একজন নাবালক হওয়ায় জুভেনাইল আদালতে তার বিচার করা হয়। এই ঘটনার মূল আসামি রাম সিং তিহার জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় আত্মহত্যা করেন।
বাকি চার আসামি অক্ষয়, পবন, বিনয় এবং মুকেশ-কে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এক ট্রায়াল আদালত মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছিল। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে দিল্লি হাইকোর্টও এই রায়ের পক্ষেই সম্মতি দেয়। ২০১৭ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট-ও এই দণ্ডাদেশ বহাল রাখে। এই রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদনও সম্প্রতি শীর্ষ আদালতে খারিজ হয়ে গিয়েছে।
দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল আদালতের এদিনের রায়কে স্বাগত জানিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেন অপরাদীদের শাস্তি দিতে ৭ বছর সময় লাগল? কেন আরও কম সময়ে এই মামলার কাজ মিটিয়ে ফেলা গেল না? এই রায়কে তিনি ভারতের সকল 'নির্ভয়া'র জয় বলেই মনে করছেন। একই সঙ্গে এই দীর্ঘ ৭ বছর ধরে লড়াই করার জন্য তিনি নির্ভয়ার বাবা-মাকে অভিবাদন জানিয়েছেন।
বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেত্রী সুস্মিতা দেব। তিনি বলেছেন, এই মামলার ক্ষেত্রে সব প্রমাণ দিনের আলোর মতো পরিষ্কার ছিল। সেখানেই মামলা শেষ করতে ৭ বছর সময় লাগল। তাহলে অন্যান্য ক্ষেত্রে যেখানে প্রমান সুস্পষ্ট নয়, সেগুলির ক্ষেত্রে কী ঘটবে? কেন এত দীর্ঘ সময় লাগছে, কোথায় খামতি রয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্য তিনি রাজনৈতিক মহল এবং আইনি মহল-কে আহ্বান করেছেন।
হায়দরাবাদের ঘটনায় চার অভিযুক্তের মৃত্যু ঘটেছিল পুলিশি সংঘর্ষে। এই ঘটনার পর অনেকেই পুলিশকে ধন্য ধন্য করে বলেছিলেন ধর্ষকদের এভাবে বিচার ব্যবস্থার বাইরে হত্যা করা উচিত। আবার সঠিক অপরাধীদের পুলিশ ধরেছিল, না নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে ভূয়ো এনকাউন্টার করা হয়েছে সেই প্রশ্নও উঠেছিল। এদিন নির্ভয়া মামলার আসামিদের ফাঁসির দিন ঠিক হওয়ার পরও এই বিতর্ক চলছে।