কদিন আগেই দেশের করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কেন্দ্রের ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজকে অশ্বডিম্ব বলেছিলেন রাজ্য়ের মুখ্যমন্ত্রী। বার বার মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের মুখে শোনা গিয়েছে এক কথা। করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কিছুই আর্থিক সাহায্য় দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। এদিন যার পুরো হিসেব দিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সংখ্যা দিয়ে অর্থমন্ত্রী দেখিয়েছেন,রাজ্য়গুলির জন্য় দরাজ হয়েছে মোদী সরকার। বরাদ্দ হয়েছে ৪ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু রাজ্য়গুলিই সেই বরাদ্দ খরচ করতে পারছে না।
এদিন অর্থমন্ত্রী জানান, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলকে অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার আগেই রাজস্ব বাবদ ৪৬ হাজার ৩৮কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এসডিআরএফ ফান্ড থেকে পয়লা এপ্রিল দেওয়া হয়েছে ১১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। রাজস্ব কী হবে তা হিসেবের আগেই এই টাকাটা দেওয়া হয়েছে রাজ্য়গুলিকে। মার্চ ও এপ্রিল মাস মিলেয়ে ১২ হাজার কোটি টাকা করে দেওয়া হয়েছে ইতমধ্য়েই। এছাড়াও স্বাস্থ্য় মন্ত্রক রাজ্য়গুলিকে ৪হাজার ১৩ কোটি টাকা দিয়েছে। যার মধ্য়ে বিমার টাকাও দেওয়া রয়েছে। উল্লেখ্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার করোনা যোদ্ধাদের মৃত্যুতে ১০ লক্ষ টাকার বিমা করলেও কেন্দ্রীয় সরকার ৫০ লক্ষ টাকার বিমার কথা ঘোষণা করেছে।
হিসেব বলছে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে রাজ্য়গুলিকে জিএসডিপি-র ৩ শতাংশ দেওয়া হয়। কিন্তি কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্য়গুলো আবেদন করেছিল, যদি এই অর্থের পরিমাণ বাড়ানো যায়। রাজ্য়গুলির কথা মাথায় রেখে যে রাজ্য়ের যত জিএসডিপি তার ৫ শতাংশ নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। হিসেবের ৭৫ শতাংশই দিয়ে দেবে অর্থমন্ত্রক। তবে তার জন্য় কেন্দ্রীয় সরকারের গাইড লাইন মানতে হবে রাজ্গুলিকে।
অর্থমন্ত্রী জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই এত বরাদ্দ করলেও দেখা যাচ্ছে, এই খাতে রাজ্য়গুলি মাত্র ১৪ শতাংশ খরচ করতে পেরেছে। ৮৪ শতাংশ এখনও খরচ করতে পারেনি। ৮.১৪ লাখ কোটি টাকা কেন্দ্র থেকে নিতেই পারেনি রাজ্য়গুলি। সব মিলিয়ে রাজ্য়গুলিকে ৪ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি ওভার ড্রাফট-এর ক্ষেত্রেও আরও সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে। আগে ওভারড্রাফট ছিল ১০দিনের সুবিধা। এখন তা বাড়িয়ে ১৪ দিন করে দেওয়া হয়েছে।
নিয়ম অনুসারে জিএসডিপি-র ৩.৫ শতাংশ শর্তহীনভাবে বরাদ্দের খরচ করতে পারবে রাজ্য়গুলি। কিন্তু এর ওপরে গেলে ৪.৫ হলে এর জন্য় ৪টে বিষয় মানতে হবে রাজ্য়কে। ওয়ান নেশন-ওয়ান কার্ড, বিজনেস জেনারেশন অব জব জেনারেশন, গরিবদের জন্য খাদ্য় ও সংস্থান, নগরোন্নয়নের দিকে খরচ করতে হবে রাজ্য়গুলিকে। বাকি ০.৫ শতাংশ পেতে গেলে ওপরের যেকোনও তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে।