দেশের প্রবীণতম ধর্মগুরুর প্রয়াণ। ১০৩ বছর বয়েসে মারা গেলেন ফিলিপোজ মার ক্রিসোসটম। ১৯১৮ সালের ২৭শে এপ্রিল এক পুরোহিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ফিলিপোজ মার ক্রিসোসটম। সারা জীবন ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে কথা বলে এসেছেন ফিলিপোজ। স্বভঙ্গিতে তাঁর ধর্মের গোঁড়ামির বিরুদ্ধে কথা বলা জনপ্রিয় ছিল ভক্তদের মধ্যে।
ফিলিপোজ মার ক্রিসোসটমের প্রয়াণের শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ক্রিসোসটম বরাবর তাঁর অনুগামীদের অভিযোগ করার পরিবর্তে সুখী ও সন্তুষ্ট জীবন যাপনের জন্য অনুরোধ করে এসেছেন। সারা জীবন সুখী থাকার চেষ্টা করার পাঠ পড়িয়েছেন ক্রিসোসটম।
তাঁর প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি জানান, ক্রিসোসটমের মৃত্যু দেশের জন্য বড় ক্ষতি। ক্রিসোসটম বরাবরাই বুদ্ধি ও জ্ঞানের আধার বলে সম্বোধিত হতেন। বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ কেরলের পাঠানমিট্টার থিরুভাল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ক্রিসোসটম।
থিরুভাল্লার মালানকারা মারথোমা চার্চের প্রধান ছিলেন ক্রিসোসটম। নিজের বুদ্ধিদীপ্ত ও জ্ঞানগর্ভ বক্তব্যের মাধ্যমে অনুগামীদের মন জয় করেছিলেন। সমাজের তথাকথিত গোঁড়া বিশ্বাসকে উড়িয়ে দিতেন বরাবর। জ্ঞানের প্রদীপের সাহায্যে কুসংস্কার ও জটিলতা মুক্ত সমাজ গঠনের কথা বলে এসেছেন বরাবর।
দু সপ্তাহ আগেই ১০৩ বছরের জন্মদিন পালন করা হল ক্রিসোসটমের। মাললায়ম ভাষায় তাঁকে বলা হত চিড়িইয়ুদে পিথাবু, যার অর্থ জ্ঞান ও বুদ্ধির জনক। তিনি নিজের সরস বক্তব্য ও কৌতুকতার জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন ক্রিসোসটম। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোর দৃঢ়তার পক্ষে বরাবর সরব ছিলেন তিনি।
২০১৮ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত করেছিল তাঁকে গোটা দেশ। ২০১৭ সালে তাঁর ১০০ বছরের জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে রূপান্তরকামীদের জন্য বিশেষ উন্নয়ন মূলক কাজের সূচনা করে চার্চ। এই অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছিল নবোদয় মুভমেন্ট।
দেশের প্রাচীনতম বিশপদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। ১৯৪৪ সালে তিনি পুরোহিত হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৫৩ সালে তিনি বিশপ হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯৯ সালে মারথোমা চার্চের মেট্রোপলিটন হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। ২০১০ সাল পর্যন্ত এই পদে নিযুক্ত ছিলেন তিনি।
দেশের বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তাঁর সান্নিধ্যে এসেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কে আর নারায়ণন ও প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী।