হ্রদের জলে ভাসছে হাজার হাজার পাখির মৃতদেহ, অভূতপূর্ব ঘটনায় রাজস্থানে ঘনাচ্ছে রহস্য

রাজস্থানের জয়পুরের সম্ভর হ্রদে হাজার হাজার পাখির মৃতদেহ মিলেছে। কী কারণে একসঙ্গে এত পাখির মৃত্যু হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। এর আগে কখনও এইরকম ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি স্থানীয়দের। এই নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

amartya lahiri | Published : Nov 12, 2019 10:05 AM IST / Updated: Nov 12 2019, 04:02 PM IST

ভারতের সবচেয়ে বড় নোনা জলের হ্রদ রাজস্থানের জয়পুরের সম্ভর হ্রদ। তারই আশপাশে মরে পড়ে আছে হাজার হাজার পাখি। এর মধ্যে ভারতীয় পাখি যেমন আছে, রয়েছে অন্তত দশটি ভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখিও। কী কারণে এই এত পাখির একসঙ্গে মৃত্যু হয়েছে তা ধন্দে ফেলেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে।  

কত পাখির মৃত্যু হয়েছে?

সরকারি হিসেবে বলা হয়েছে মৃত পাখির সংখ্যা ১৫০০। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি গত কয়েক দিনে এই এলাকা অন্তত ৫০০০ পরিযায়ী পাখির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার প্রথম প্রত্যক্ষদর্শী পক্ষী পর্যবেক্ষক অভিনব বৈষ্ণব-ও এরকমই দাবি করেছেন।

কীভাবে আবিষ্কার হল?

গত রবিবার সন্ধ্যায় ও তাঁর বন্ধু তথা আরও দুই পাখি পর্যবেক্ষক কিষান মীনা ও পবন মোদী হ্রদের ধার দিয়ে ঘুরছিলেন। বৈষ্ণব জানিয়েছেন, অন্ধকারে তাঁর মনে হয়েছিল হ্রদের জলে যেন কয়েকশ' গোবরের তাল ভাসছে। তাঁর বন্ধুরা অবশ্য দেখেই বুঝতে পেরেছিলেন ওগুলো প্রাণহীন পাখির মৃতদেহ। লেক সংলগ্ন ১২-১৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে শয়ে শয়ে পড়েছিল, প্লোভার, কমন কুট, ব্ল্যাক উইঙ্গড স্টিল্ট, নর্দান শোভলার্স, রুডি শেলডাক, পায়েড অ্যাভোকেট ইত্যাদি প্রজাতির পাখির মৃতদেহ পড়েছিল।  

একসঙ্গে এত পাখির মৃত্যুর সম্ভাব্য কী কী কারণ উঠে আসছে?

কী কারণে একসঙ্গে এত পাখির মৃত্যু হল তাই নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। সহকারী বন সংরক্ষক, সঞ্জয় কৌশিকের মতে দূষণের কারণে হ্রদের জল বিষিয়ে গিয়ে পাখিদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে হ্রদের জলের গুণমান পরীক্ষা করা হবে। উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না কোনও ভাইরাল রোগের সম্ভাবনাও। তবে ডাক্তাররা মনে করথছেন বার্ড ফ্লু-এ এদের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এটা অন্তত পরিষ্কার যে কোনও শিকারীর বলি এরা নয়। ফরেস্ট রেঞ্জার রাজেন্দ্র জখর অন্য এক সম্ভাব্যনার কথা জানিয়েছেন। এই এলাকায় দিনয়েক আগেই শিলাবৃষ্টি হয়েছিল। তার কারণেও পাখিদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?

প্রতিবছর এই সম্ভর হ্রদে ২ থেকে ৩ লক্ষ পরিযায়ী পাখি আসে। তাদের মধ্য়ে ৫০০০০ মতো ফ্লেমিঙ্গো থাকে। ৪০ বছর ধরে বন দপ্তরে কাজ করা এক কর্মী দজজানিয়েছেন, এর আগে কোনওদিন এমনটা হতে দেখেননি। আপাতত হ্রদের জল থেকে মৃতদেহগুলি সরাবার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জয়পুর থেকে একটি মেডিক্যাল টিম এসেছে। তাদের সদস্যরা পাখিদের মৃতদেহের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। হ্রদের জলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে ভোপালে। এই নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে আশপাশের গ্রামেও। অবশ্য রাজ্যের ডিজিজ ডায়গনোস্টিক সেন্টারের মতে এটা সংক্রমণের ঘটনা নয়। পরীক্ষায় সংক্রমণের বিষয় ধরা পড়লে তা য়াতে না ছড়ায় তার জন্য ব্যবস্থা নেওা হবে।

 

Share this article
click me!