পাণিনির ব্যাকরণ সূত্র খোলসা হল ভারতীয় গবেষকের হাত ধরেই, কেমব্রিজের ঋষি করে দেখালেন অসাধ্য সাধন

Published : Dec 16, 2022, 06:35 PM IST
Panini grammatical problem solved by Cambridge University Indian student Rishi Rajpopat

সংক্ষিপ্ত

যাঁকে ভাষাতত্ত্বের জনক বলে মনে করা হয়, তিনি হলেন পাণিনি। এই জ্ঞানী পণ্ডিত আবিষ্কৃত ভাষাতত্ত্বের অনেক রহস্যই এখনও অনুদ্ঘাটিত। সেই জটিল সূত্রই সমাধান করে দেখালেন ভারতীয় ছাত্র ঋষি।

খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে সারা বিশ্বের জন্য একটি জটিল ভাষাতত্ত্ব রেখে গিয়েছিলেন তৎকালীন ভারতবর্ষের (বর্তমানে পাকিস্তান) ব্যাকরণবিদ পাণিনি। প্রায় আড়াই হাজার বছর সেই রহস্যের সমাধান এখনও পর্যন্ত করে উঠতে পারেননি কোনও গবেষকই। ২০২২ সালে এসে সেই জটিল সূত্রই সমাধান করে দেখালেন একজন ভারতীয় ছাত্র। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রের নাম ঋষি রাজপোপট।

ভারতীয় ভাষাতত্ত্ব তো বটেই, ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার ক্ষেত্রেও যাঁকে ভাষাতত্ত্বের জনক বলে মনে করা হয়, তিনি হলেন পাণিনি। এই জ্ঞানী পণ্ডিত আবিষ্কৃত ভাষাতত্ত্বের অনেক রহস্যই এখনও অনুদ্ঘাটিত। তিনি ‘অষ্টাধ্যায়ী’ নামক সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থের জন্য বিখ্যাত। পাণিনির যে সমস্ত তত্ত্ব নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তার মধ্যে ‘অষ্টাধ্যায়ী’ অন্যতম।

এই অষ্টাধ্যায়ী-র একটি বিশেষ পর্যায়ে এসে সমস্যার সমাধান করতে পারতেন না বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ পর্যায়ের জন্য একাধিক ধাপের কথা বলা আছে পাণিনির ব্যাকরণে। তার মধ্যে কোনটি গ্রহণযোগ্য হবে, তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারতেন না বড় বড় পণ্ডিত ব্যক্তিরাও। এবার সেই পদ্ধতিরই সমাধান করে ফেলেছেন ঋষি। তাঁর তথ্য এটাই স্পষ্ট করে দিতে পেরেছে যে, পাণিনি আসলে কোন পথটি ধরে এগোতে বলেছেন। এবার পাণিনির ব্যাকরণের সূত্র ধরে শব্দ এবং বাক্যের গঠনকে একটি নিয়মের আওতায় ফেলা যাবে।

আদি যুগেও পাণিনির এই তত্ত্বের রহস্য সমাধানের চেষ্টা হয়নি তা নয়। জয়াদিত্য এবং বামন নামের দুই ভাষাতাত্ত্বিক তাদের তত্ত্বে পাণিনি প্রণীত রহস্যের সমাধানের চেষ্টা করেছেন এবং কিছু ক্ষেত্রে পাণিনির বিরোধিতাও করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই রহস্যের জট কাটেনি। আর সেটিই করতে পেরেছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় গবেষক ঋষি।

আবিষ্কারের পর ঋষি রাজপোপট জানিয়েছেন, টানা ৯ মাস ধরে এই সমস্যাটির সমাধান করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। শেষের দিকে বেশ কিছুটা নিরাশও হয়ে পড়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘এক মাসের জন্য বইপত্র তুলে রেখে দিয়েছিলেন। গরমকালটা উপভোগ করি। সাঁতার কাটি, সাইকেল চালাই, মেডিটেশন করি। তার পরে এসে আবার বই খুলি। সঙ্গে সঙ্গে চোখের সামনে সূত্রগুলি ফুটে ওঠে। সব কিছু বুঝতে শুরু করি। তার পরের কয়েকটি সপ্তাহ মারাত্মক উত্তেজনায় কাটে। ঘুমোতে পারিনি। তার পরে আর আড়াই বছর লেগেছে গোটাটা সমাধান করতে।’

ঋষির পথপ্রদর্শক অধ্যাপক ভিনসেনজো ভেরজানি বলেছেন, ‘সমাধান যদি অত্যধিক জটিল হয়, তাহলে বুঝতে হবে যে, এটা সঠিক সমাধান নয়। সেই কথাই ঋষিকে জানিয়েছিলাম। শেষমেশ ঋষি সহজ রাস্তাটা বের করেই ফেলল।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঋষির এই আবিষ্কারের পরে পাণিনির ভাষাতত্ত্বকে এবার সহজেই কমপিউটার প্রোগ্রামিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা যাবে। এত দিন ধরে এই কাজটি খুব কঠিন হয়েছিল। কিছুতেই এর সমাধান করা যাচ্ছিল না। ফলে প্রযুক্তির মাধ্যমে সঠিক বাক্য ও শব্দ বিন্যাস সম্ভব হচ্ছিল না। আগামী দিনে এই কাজটিই সহজ করে দিল এই ভারতীয় গবেষকের আবিষ্কার।


আরও পড়ুন-
অমিতাভ বচ্চনের বক্তব্য টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ অমিত মালব্যর, পালটা নিশানা করলেন সাংসদ নুসরত
শুক্রবার রাতেই কলকাতায় অমিত শাহ, ভাইস চেয়ারম্যান পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বঙ্গে চলছে বড়দিনের প্রতীক্ষা, তবে সপ্তাহের শেষের দিকে তাপমাত্রার পারদ নিম্নমুখী হলেও জাঁকিয়ে শীত এখনও অধরা

PREV
click me!

Recommended Stories

বিএলও-দের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট, রাজ্য সরকারকে কড়া নির্দেশ শীর্ষ আদালতের
বন্দে মাতরম সম্পাদনা কি দেশভাগের কারণ? অমিত শাহের মন্তব্যে তোলপাড়