প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সর্বানন্দ সোনোয়ালের মত নতুন মন্ত্রীরা। বুধবারই কেন্দ্রের প্রায় ১২ জন মন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল আর শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়েই মোদীর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। ইস্তফা দেওয়া মন্ত্রীদের মধ্যে সবথেকে বেশি চর্চায় রয়েছেন প্রকাশ জাভড়েকর রবিশঙ্কর প্রসাদ আর হর্ষ বর্ধনের মত হাইপ্রোপাইল মন্ত্রীরা। কেন সরিয়ে দেওয়া হল এই তিন গুরুত্বপূর্ণ পূর্ণ মন্ত্রীকে তা নিয়ে দলের অন্দর আর বহির দুই জায়জাতেই জোর বিতর্ক রয়েছে।
প্রকাশ জাভড়েকর- কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান মুখপাত্রের ভূমিকাতেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল। সূত্রের খবর, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় তঙ্গের সময় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। দেশের ও বিদেশের একাধিক সংবাদ মাধ্যম তীব্র সমালোচনা করেছিল মোদী সরকারে। করোনা সংক্রমণ রুখতে ব্যর্থ বলে অভিযোগ তুলেছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। পাশাপাশি টিকাকর্মসূচি নিয়েও সমালোচনা হয়েছিল। কিন্তু সময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রকাশ জাভড়েকরকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। দ্বিতীয় তরঙ্গ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তাও সঠিকভাবে সংবাদ মাধ্যমের সামনে তুলে ধরা হয়নি বলেও অভিযোগ। জাভড়েকরের পদত্যাগের পর একাধিক সরকারি আধিকর্তা জানিয়েছেন ড্যামেজ কন্ট্রোলের জন্যই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
হর্ষ বর্ধন- ১২ মন্ত্রীর মধ্যে রয়েছেন হর্ষ বর্ধনও। সূত্রের খবরই করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ মোকাবিলায় ব্যার্থতার অভিযোগে তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। হর্ষ বর্ধন মার্ত মাসেই ঘোষণা করেছিলেন যে মহামারি শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু তারপরই দ্বিতীয় তরঙ্গের ভয়াবহতার সাক্ষী থাকতে হয়েছে ভারতকে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে তৎকালীন স্বাস্থ্য মন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছিল। পরবর্তীকালে কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গে মোকাবিলায় তেমন কোনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি হর্ষ বর্ধনকে। সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, নীতি আয়োগ, পরিস্থিতি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। সেই সময়ই থেকেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার রাস্তা তৈরি হয়েছিল বলেও সূত্রের খবর।
রবিশঙ্কর প্রসাদ- সূত্রের খবর সোশ্যাল মিডিয়া বা ওটিটি-র জন্য নতুন আইন লাগু করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও টুইটারের সঙ্গে তিক্ততা বাড়ছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। সম্পর্ক এতটা অবনি হয়েছিল যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দিয়েছিল টুইটার। রবিশঙ্কর প্রসাদের এই পদক্ষেপ কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়িয়েছিল। সূত্রের খবর সেই কারণেই সরে যেতে হল তাঁকে।