আজ বিকেলের মধ্যে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় আমফান। ভয়ঙ্কর গতিতে বাংলার দিকেই এগিয়ে আসছে এই সুপার সাইক্লোন। তার আগেই অবশ্য ওড়িশা জুড়ে তাণ্ডব শুরু করে দিয়েছে শক্তিশালী আমফান। ইতিমধ্যে আমফানের প্রভাবে পারাদ্বীপে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। তারসঙ্গে প্রতিঘণ্টায় ৮২ কিলোমিটার গতিতে বইছে ঝোড়ো বাতাস।
ওড়িশার বালেশ্বরে জেলার চাঁদিপুরে ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে ফুঁসছে সমুদ্র।
আবহাওয়া দফতরের তরফে ঘূর্ণিঝড় আমফানের গতি যে পরিমাণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, তার তুলনা হতে পারে ১৯৯৯ সালে ওড়িশার সাইক্লোনের সঙ্গেই। ১৯৯৯ সালে এরকমই এক সুপার সাইক্লোন তছনছ করে দিয়েছিল ওড়িশার কয়েকটি জেলাকে। সেবার ২৯ অক্টোবর ওড়িশায় পারাদ্বীপে আছড়ে পড়ে ওই ঘূর্ণিঝড়। গতি ছিল ঘণ্টা ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি। প্রবল গতির ঝড় ও অবিরাম বৃষ্টি তোলাপাড় করে দেয় ওড়িশার ৬ জেলাকে। বৃষ্টি হয় টানা ৩৬ ঘণ্টা ধরে। মানুষ পালাবার সুয়োগই পায়নি। সবেমিলিয়ে ক্ষতি হয়েছিল রাজ্যের ১৪ জেলায়। ওখনও পর্যন্ত দেশে ওই সাইক্লোনেরই গতি সবচেয়ে বেশি। সরকারি মতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১০,০০০ মানুষ। বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। ওড়িশায় সাড়ে তিন লাখ বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। বহু গ্রাম জলের তোড়ে একেবারে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়।
মৃত্যু হয় ২ লাখ গবাদি পশুর। ২৫ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন।
তবে গতবছর সাইক্লোন ফণী থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার এনেকটাই প্রস্তুত ওড়িশা সরকার। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে উপকূলবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দা ১ লক্ষ ১৯ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে ১৭০৪টি।
সুপার সাইক্লোন আমফানের প্রভাবে প্রবল ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ওড়িশার ভদ্রক জেলাতেও।
এদিকে সুপার সাইক্লোন আমফানের তাণ্ডব থেকে রেহাই পেল না অন্ধ্রপ্রদেশও। ইতিমধ্যে বিশাখাপত্তনম উপকূলে ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ঝসে পড়েছে বহু কাঁচা বাড়ি।