রাম সেতু কি বানিয়েছিলেন ভারতীয় ইঞ্জিনিয়াররা, মন্ত্রীর প্রশ্নে চুপ খড়্গপুর আইআইটি

  • রাম সেতু নিয়ে খড়্গপুর আইআইটি-তে বক্তব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর
  • কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক
  • সংস্কৃতকে পৃথিবীর প্রথম ভাষা বলে দাবি

debamoy ghosh | Published : Aug 28, 2019 3:59 AM IST / Updated: Aug 28 2019, 12:18 PM IST

আমেরিকা, ব্রিটেন বা জার্মানি নয়, রাম সেতু বানিয়েছিলেন এ দেশের ইঞ্জিনিয়াররাই। খড়্গপুর আইআইটি-র সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসে এমনই দাবি করলেন খোদ কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। তাঁর দাবি, রাম সেতুই প্রমাণ করে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ভারতবর্ষ কতখানি শক্তিশালী ছিল। মন্ত্রীর এমন দাবিতে রীতিমতো অবাক হয়ে যান অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রত্যেকেই। 

মঙ্গলবার খড়গপুর আই আই টি ৬৫ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানেই প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। সেখানেই ছাত্রছাত্রীদের উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে নিশাঙ্ক বলেন, 'আমরা ভাগ্যের উপর নির্ভর করা ভিক্ষুক নই। বর্তমান পরিস্থিতিতে সারা পৃথিবী এক ফোঁটা জলের জন্য হাহাকার করছে। আসলে আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে ভুলতে বসেছি। সেই কারণেই আজ এমন সংকট উপস্থিত হয়েছে। একসময় আমরা প্রতিটি গাছকে দেবতা মানতাম। ভাল কাজের সময় বৃক্ষরোপণ করতাম। নদীকেও শ্রদ্ধা করতাম, মা বলতাম, কারণ সেখানে থেকে আমরা জীবন ধারণ করি। কিন্তু বিদেশিরা আমাদের  তাচ্ছিল্যভরে বলত যে আমরা ভাগ্যের উপরেই নির্ভরশীল। আজ তাঁরাও স্বীকার করছে প্রাচীন ভারতের চিন্তাভাবনা কতখানি বিজ্ঞানভিত্তিক ছিল। আমি মনে করি, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক শক্তিশালী ছিল এই দেশ। যদি রাম সেতুর কথা বলি, এটা কোনও আমেরিকা, ব্রিটেন বা জার্মানির ইঞ্জিনিয়াররা বানানয়নি। এটা আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা বানিয়েছিলেন। যা দেখে গোটা পৃথিবীই আশ্চর্যান্বিত হয়ে যায়।' এর মন্তব্য করেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রোতাদের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, 'কী ঠিক বললাম তো?' 

মন্ত্রীর প্রশ্নে অবশ্য প্রথমে সাড়া দেননি শ্রোতারা। কিন্তু নিশাঙ্ক বার দু' য়েক একই প্রশ্ন করায় তাঁর কথায় সাড়া দেন কিছু শ্রোতা। দর্শকদের প্রতিক্রিয়া দেখে ফের মন্ত্রী প্রশ্ন করেন, 'কী হল আপনারা চুপ কেন?'

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও দাবি করেন, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে চিনকে পিছনে ফেলে বিশ্বের এক নম্বর দেশ হতে চলেছে ভারত। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের দেশের গীতাকে এখন বিজ্ঞান বলে মানছে গোটা বিশ্ব। বিভিন্ন দেশে তা নিয়ে চর্চা হচ্ছে। গীতা এক এমন বিজ্ঞান যা আত্মার সঙ্গে পরমাত্মাকে মেলায়। আমাদের শরীর তো একটা কাঠামো মাত্র, কোনও তো একটা শক্তি আছে যা তাকে চালিত করছে।'

এর পাশাপাশি মন্ত্রী এ দিন সংস্কৃতকেও বিশ্বের প্রথম ভাষা বলে দাবি করেন। তাঁর কথায় সংস্কৃতই সবথেকে সহজবোধ্য, বিজ্ঞানভিত্তিক ভাষা যা কম্পিউটারও বুঝতে পারে। বেদকেও পৃথিবীর প্রথম গ্রন্থ বলে দাবি করেন মন্ত্রী। বেদের আগে পৃথিবীতে অন্য কোনও বইয়ের অস্তিত্ব ছিল কি না, তা প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দেন রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। 

এই প্রথম নয়, কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই প্রাচীন ভারতে বিজ্ঞান চর্চা এবং প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে বার বারই সরব হয়েছেন রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। এর আগে তিনি বলেছিলেন, পরমাণু বোমার তত্ত্ব আবিষ্কার করেছেন কণাদ মুনি। যা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। 

Share this article
click me!