সাফাইয়ের নামে কি সত্যিই শ্যুটিং মোদীর, জানুন জাল ছবির আসল রহস্য

  • নরেন্দ্র মোদী সৈকত সাফাই নিয়ে বিতর্ক
  • প্রধানমন্ত্রী শ্যুটিং করেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার
  • প্রচারে ব্যবহৃত ছবিগুলি জাল বলে প্রমাণিত
     

debamoy ghosh | Published : Oct 14, 2019 10:45 AM IST / Updated: Oct 14 2019, 04:25 PM IST

চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ফাঁকেই মামাল্লাপুরমের সমু্দ্র সৈকতে জঞ্জাল সাফ করতে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ যে পুরোটাই সাজানো, তা প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়া। সেখানে কোনও ছবিতে সমুদ্র সৈকতে ক্যামেরা নিয়ে শ্যুটিংয়ের ছবি দেখা গিয়েছিল, কোনওটিতে আবার বম্ব স্কোয়াডকে সমুদ্র সৈকতে পরীক্ষা নিরাপত্তাজনিত পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে দেখা যাচ্ছিল। আর এই সমস্ত ছবির কোলাজ করে দাবি করা হচ্ছিল, প্রধানমন্ত্রীর জঞ্জাল পরিষ্কারের শ্যুটিংয়ের জন্যই যাবতীয় আয়োজন করা হয়েছিল। 

কিন্তু এবার সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাতে বোঝা গেল, যে ছবিগুলির উপর ভিত্তি করে প্রধানমন্ত্রীর জঞ্জাল সাফাইকে পূর্ব পরিকল্পিত বলে দাবি করা হচ্ছিল, সেগুলি আসলে অনেক পুরনো এবং এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর জঞ্জাল সাফাইয়ের কোনও সম্পর্কই নেই। প্রতিটি ছবিই আসলে অনেক পুরনো এবং সেগুলি ব্যবহার করেই মিথ্যে প্রচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ। 

আরও পড়ুন- মামাল্লাপুরমেরও মোদীর স্বচ্ছতা অভিযান, সৈকতে করলেন জঞ্জাল সাফ

সোশ্যাল মিডিয়াতেই অনেকে এই ছবিগুলির সত্যতা ফাঁস করেছেন। পাশাপাশি ছবিগুলির সত্যতা খতিয়ে দেখে বেশ কিছু তথ্য হাতে পেয়েছে একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকও। প্রধানমন্ত্রীর সৈকত সাফাইকে ব্যঙ্গ করে জেলবন্দি কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের ছেলে কার্তি চিদম্বরমও এই ছবিগুলি ব্যবহার করে টুইটারে পোস্ট করেছিলেন। সেখানেও অনেকেই ছবিগুলি ভুয়ো বলে সতর্ক করেন কার্তিকে। 

আসল ছবি। সৌজন্য- টেস্ক্রিন

প্রথমত, যে ছবিতে দেখা যাচ্ছে ক্যামেরা নিয়ে একটি শ্যুটিং ইউনিট সমুদ্র সৈকতে শ্যুটিং করছে, সেটি আসলে একটি বিদেশি ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া। টেস্ক্রিন নামে ওই ওয়েবসাইটের ভিতরে খুঁজলেই পাওয়া যাবে এই ছবিটি। এবং এই ছবিটির সঙ্গে মামল্লাপুরম সমুদ্র সৈকতের দূর দূরান্তের কোনও সম্পর্ক নেই। একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের তরফে ওই বিদেশি ওয়েবসাইটটির সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গিয়েছে, আসলে এই ছবিটি ২০১২ সালে স্কটল্যান্ডে তোলা হয়েছিল। ছবিটি তুলেছিলেন জুলি ক্রেইক নামে একজন। 

এই ছবিটিও আসলে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছিল। 

দ্বিতীয় যে ছবিটিতে বম্ব স্কোয়াডকে সমু্দ্র সৈকতে পরীক্ষা নিরীই ছবিটির সঙ্গেও মামাল্লাপুরমে সমুদ্র সৈকত সাফাইয়ের কোনও সম্পর্কই নেই। তাই প্রধানমন্ত্রীর সমুদ্র সৈকত সাফাইকে হেয় করার জন্য যে যে ছবিগুলি সামনে আনা হয়েছিল, সেগুলিই মিথ্যে বলে প্রমাণিত হল। 

এই দু'টি ছবির পাশাপাশি আগে থেকে মামাল্লাপুরমের সৈকতে জঞ্জাল ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে আরও একটি ছবি সামনে এসেছিল। যদিও সেই ছবি সম্পর্কে কোনও তথ্য এখনও সামনে আক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে, সেই ছবিটিও প্রায় সাত বছরের পুরনো বলে জানা যাচ্ছে। এই ছবিটি ২০১৯-এর ১১ এপ্রিল একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছিল। কেরলের কোঝিকোড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের আগে ওই ছবিটি তোলা হয়। ফলে এসেনি। কিন্তু বাকি দু'টি ছবি মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ার পরে তৃতীয় ছবিটির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। 

Share this article
click me!