বিতর্ক উস্কে দিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের অন্যতম শাখা সংগঠন স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ। কেন্দ্রের কৃষি বিল বাতিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে এই সংগঠন বলেছে দেশের যত দেশদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাবাপন্ন মানুষ রয়েছে, তাদের সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে এই সিদ্ধান্ত।
কৃষি বিলের (controversial farm laws) বিরোধিতায় কৃষকদের বিক্ষোভ কি তাহলে দেশদ্রোহিতার (Anti-National) নামান্তর, এমনই বিতর্ক উস্কে দিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের (Rashtriya Swayamsevak Sangh) অন্যতম শাখা সংগঠন (RSS Affiliate) স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ (Swadeshi Jagran Manch)। কেন্দ্রের কৃষি বিল বাতিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে এই সংগঠন বলেছে দেশের যত দেশদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাবাপন্ন মানুষ রয়েছে, তাদের সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে এই সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা প্রাপ্য।
এই সংগঠন কৃষি বিলের সমর্থনকারীদের খলিস্তানি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি বলে আখ্যা দিয়েছে। এরপরেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এসজেএম প্রধান অশ্বানি মহাজন বলেছেন যে এই পদক্ষেপটি দেশবিরোধী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির ভয়ঙ্কর উদ্দেশ্য সফল হতে দেবে না। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সাথে কথা বলার সময়, মহাজন বলেন যে সরকার আইনগুলি সংশোধন করতে প্রস্তুত এবং কেন্দ্র শুভ ও মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কৃষি বিলগুলি পাস করেছিল।
মহাজন জানান, যখন কৃষকদের সাথে আলোচনা চলছিল, স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ কৃষকদের সাথে কথা বলার পরে যে সমস্ত পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছিল, সরকার সেই পরামর্শগুলি মেনে নিতে রাজি হয়েছিল। তবে, কৃষকরা অনড় ছিল যে এই আইনগুলি প্রত্যাহার করা উচিত। মহাজন আরও জানান, এই কৃষক বিক্ষোভে খালিস্তানের পতাকাও উড়তে দেখা গিয়েছে। এছাড়াও এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে নকশালবাদ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, এই বাহিনী প্রতিবাদের সুযোগ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, বিতর্কিত তিনটি কৃষি বিল বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও প্রতিবাদের রাস্তা থেকে সরতে রাজি নন বিক্ষোভরত কৃষকরা। ২০২০ সালে সংসদের বাদল অধিবেশনের সময় পাস করা হয় তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন। হাজার হাজার কৃষক The Farmers Produce Trade and Commerce (Promotion and Facilitation) Act, 2020,The Farmers (Empowerment and Protection) Agreement of Price Assurance and Farm Services Act, 2020 এবং The Essential Commodities (Amendment) Act, 2020 since November 2020-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন।
প্রধানমন্ত্রীর তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার ঘোষণার পর গাজীপুর সীমান্তে কৃষকরা একে অপরকে জিলিপি খাইয়ে উদযাপনে মাতেন। কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত পরিষ্কার জানিয়ে দেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কৃষকদের বড় জয়। তবে এখনই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে না।
শুক্রবার সকালে জাতির উদ্দেশে ভাষণে মোদী বলেন ঘরে ফিরে যান বিক্ষোভরত কৃষকরা। কৃষি আইন বাতিল করবে কেন্দ্র। মোদী বলেন কেন্দ্র সরকার কৃষি আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই বিক্ষোভ থামানো হোক। ঘরে ফিরে যান প্রত্যেক কৃষক। এদিন মোদী আশ্বাস দিয়েছেন তিনটি কৃষি আইনই বাতিল করবে কেন্দ্র।
মোদী বলেন কৃষকদের স্বার্থে কাজ করার চেষ্টা করেছে কেন্দ্র। কৃষকদের উপযুক্ত মূল্যে বীজ এবং মাইক্রো-সেচ, ২২ কোটি মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ডের মতো সুবিধা দেওয়ার জন্য কাজ করেছে কেন্দ্র। এ ধরনের বিষয়গুলো কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। শক্তিশালী করা হয়েছে ফসল বিমা যোজনাকে। আরও বেশি সংখ্যক কৃষক এর আওতায় এসেছে।