আমেদাবাদের দূষিত জলে করোনার জিনের উপস্থিতি
রোগের লক্ষণের সঙ্গে জিনের প্রচুর মিল
আবিষ্কার করলেন গান্ধীনগর আইআইটির বিজ্ঞানীরা
আগে ইতালি ও ফ্রান্সেও এই পর্যবেক্ষণ হয়েছে
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিচ্ছে। বিশ্বের আক্রান্ত দেশ গুলির ক্রম তালিকায় ভারতের স্থান চতুর্থ। আক্রান্তের সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে বড় সাফল্য পেল ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। গুজরাতের বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে এক অভাবনীয় তথ্য। তাঁরা পরীক্ষা করে দেখিয়ে দিয়েছেন দূষিত জলেও পাওয়া গেছে করোনাভাইরাসের জীবাণু। তবে এই জাবাণু রোগ ছড়ানোর ক্ষেত্র কতটা সক্রিয় তা জানতে এখনও অনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা।
গান্ধীনগর আইআইটি-র বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে আমেদাবাদের বর্জ্য জলে দেখা গিয়েছে করোনাভাইরাসের জিন। এই জিনের অনুপিলিপ সঙ্গে রোগের অনুলিপির সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। অপরিষ্কার জলে ভাইরাসটি নীরিক্ষণ করে রোগ প্রাদুর্ভাবের বিষয়টি স্পষ্ট করে আগামী দিনে চিহ্নিত করা যাবে বলেই আশাবাদী গবেষকরা। আইআইটি-র নেতৃত্বে এই সমীক্ষা বা গবেষণায় অংশ নিয়েছিল গুজরাত বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টার, আর গুজরাত দুষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ।
আমেদাবাদের ওল্ড পিরান ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট সেন্টারে প্রতিদিন বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ১০.৬ কোটি লিটার দূষিত জল এসে জমা হয়। গত ৮ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত সেই বর্জ্য জল সংরক্ষণ ও তা পর্যালোচনা করে বিজ্ঞানীরা দেখিয়ে দিয়েছেন বর্জ্য জলেও থাকে করোনাভাইরাসের জিন। সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানতে পারা গেছে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মলেও এই জীবাণু উপস্থিত থাকে। করোনার জিনটির উপস্থিতি স্পষ্ট করে চিহ্নিত করা গেছে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের নিকাশী নালাতেও। আগামী দিনে এই জলের চরিত্র বিশ্লেষণ করে করোনা আক্রান্ত এলাকার সন্ধান পাওয়া যাবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতেও এই গবেষণা কাজে দেবে বলেও মনে করেছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।
আমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা হচ্ছে। সেই হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন ১০০ মিলিয়ন জল সংগ্রহ করে ট্রিটমেন্ট প্ল্যাটটি। গবেষকদের নেতৃত্ব প্রদানকারী মণীষ কুমার জানিয়েছেন, সেই জল পরীক্ষা করেও জিনের সন্ধান পাওয়া গেছে।
ভারতীয় বিজ্ঞানীদের এই সাফল্য যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছে বিদেশে। এর আগে ইতালি, ফ্রান্স ও স্পেনের অপরিষ্কার জলেও করোনার জীবাণুর সন্ধান পাওয়া গেছে। একটি গবেষণা বলছে, ২০১২ সালেও ইতিলির দূষিত জলে করোনার জিন পাওয়া গেছে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন। জাপানও করোনাভাইরাসের জেনেটিক উৎপাদনের গবেষণার দিকে সমানে লক্ষ্য় রাখছে বলেও জানিয়েছে সেদেশের বিজ্ঞানীরা।