পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন সমীকরণ বদলে দেবে প্রকৃতি, প্রতিকূল অবস্থায় বিপর্যস্ত হতে পারে লালফৌজরা

পূর্ব লাদাখে সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হয়ে যায় শীতকাল 
প্রবল ঠান্ডার পাশাপাশি তুষারপাত বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে 
চিনা সেনা অভ্যস্ত নয় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে 
ভারতীয়রা বরাবরই দক্ষ অতিউচ্চতায় যুদ্ধ করতে 
 

লাদাখের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখন থেকেই শীত পড়তে শুরু করেছে। অগাস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকেই শুরু হয়ে যায় শীতকাল। আর সেপ্টেম্বর থেকে প্রবল ঠান্ডার প্রকোপে কাঁপতে থাকে গোটা এলাকা। অগাস্ট থেকে যে তাপমাত্রা পারদ নামতে শুরু করে সেপ্টেম্বরে তা নেমে যায় মাইনাসেরও অনেক নিচে। আর প্রবল এই ঠান্ডায় চিনা সেনাদের অবস্থানে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করবে বলেই মনে করছে ভারতীয় সেনা বাহিনী। 

গত ১৫ জুন গালওয়ানে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল ভারতীয় ও চিনা সেনা। সেই সংঘর্ষে থেকে বেঁচে আসা সেনাবাহিনীর বিবরণ অনুযায়ী সেই সময়ই  গালওয়ান নদীর তাপমাত্রা শূণ্য ডিগ্রির কাছাকাছি  ছিল।  চিনের পিপিলস লিবারেশন আর্মির সদস্যরা সাঁজোয়া গাড়ি করে এসেছিল। কিন্তু দুই দলের সংঘর্ষ শুরু পরে চিনা বাহিনী স্থানীয় আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেনি। তাই ভারতীয় সেনাদের তুলনায় তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। প্রত্যক্ষদর্শী ভারতীয় বাহিনীর সদস্যদের কথায় তাঁদের মত চিনা বাহিনীও অক্সিজেনের অভাবে দ্রুত কাবু হয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি অনেকেই গালওয়ানের হিমশীতল জলে পড়ে গিয়েছিল। একটি সূত্র জানাচ্ছে ওইদিন সংঘর্ষে চোটআঘাতের থেকে দুই বাহিনীর আবহাওয়ার দুরুণ বেশি অস্বাস্তিতে পড়েছিলেন। তবে ভারতীয়দের তুলনায় চিনারাই বেশি কাবু হয়েছিলেন। কারণ ভারতীয় বাহিনী সর্বদাই অতিউচ্চতায় যুদ্ধ করতে সক্ষম। আর বিশ্বব্যাপী নামও রয়েছে ভারতীয় জওয়ানদের। 

Latest Videos


কথাবর্তার মধ্যে দিয়ে দুই দেশই পূর্ব লাদাখের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সহমত হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকটি উত্তপ্ত এলাকায় চিনা সেনার অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। শীত পড়ার আগেই সবরকম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। কারণ কনকনে ঠান্ডা বাতাস পরিস্থিতি আরও ভয়ানক করে তোলে বলেই জানিয়েছে সেনাবাহিনীর এক কর্তা। তাঁর কথায় ইতিমধ্যেই গালওয়ান গোগরা হটস্প্রিংসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মরশুম বদল হতে শুরু করেছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। এক সামরিক কর্তা তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বলেছেন পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমারেখা সংলগ্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি এলাকায় সাত ফুটেরও পুরু বরফ পড়ে। এই আবহাওয়া চিনা সেনাদের প্রতিকূল বলেও তিনি দাবি করেছেন। 


এক সেনা কর্তার কথায় আসকাই চিনে মোতায়েন থাকা সেনা অধিকাংশই আসে উপদ্বীপ থেকে।  তিব্বত আর জিংজিয়াং প্রদেশে চিনা সেনারা তিন মাসের গ্রীষ্ণকালীন মহড়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেনা কর্তা জানিয়েছেন চিনা সেনারা অধিকাংশ এলাকায় সাঁজোয়া গাড়িতেই টহল দেয়। পায়ে হেঁটে খুব কম টহল দেয়। তাই সিয়াচেন, সিকিম বা তাওয়াংএর থাগলা রিজে খুব খারাপ অবস্থায় পড়তে হয়। 

উল্টোদিকে ভারতীয় সেনা জওয়ানরা সিয়াচেন, কাশ্মীর ও উত্তরপূর্ব পার্বত্য এলাকায় ১৯৪৮ সাল থেকেই যুদ্ধ করে আসছে। বহু প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়ে সিয়াচেন হিমবাহর দখল রেখেছে ভারত। ডোকলাম আর অরুণাচল প্রদেশেও বহু প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়। সিয়াচেনের দখলের পর কার্গিলেই ভারতীয় বাহিনী প্রমাণ করেছে অতি উচ্চতায় যুদ্ধ করতে তারা দক্ষ। 

কিন্তু আকসাই চিনে ভারতীয় সেনা ও চিনা সেনা উভয়ই অবস্থান করছে। কিন্তু ভারতীয় সেনা কর্তাদের মতে খুব তাড়াতাড়ি পিএলএ অগ্রাসন শেষ করে আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। নাহলে চিনা সেনাদের তিব্বতের মালভূমিতেই থাকতে হবে। কিন্তু এই এলাকায় তাপমাত্রা মাইনাস ২৫ ডিগ্রিরও নিচে নেমে যায়। শীতকালে আবস্থানেও সমস্যা রয়েছে। কারণ অ্যার্টিলারি ব্যারেল আর ইঞ্জিন হিমায়িত করার সরঞ্জামও নিয়ে যেতে হবে।  পাশাপাশি ভারতীয় সেনাকর্তা রীতিমত হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন দুই দেশের  ৩৪৮৮ কিলোমিটার পাহাড়ি সীমারেখা মোতায়েন রয়েছে ভারতীয় সেনা। সেখানে চিন কেবলমাত্র নির্বাচিত এলাকাতেই সেনা মোতায়েন করেছে। তাই কিছুটা হলেও সুবিধেজনক অবস্থানে রয়েছে ভারত। 

Share this article
click me!

Latest Videos

দেবের সামনেই! ঘাটালে TMC-র শত্রু TMC! Dev ও শঙ্কর অনুগামীদের মধ্যে হাতাহাতি | Ghatal | Dev |
২৬ এর নির্বাচনে কী থাকবেন ফিরহাদ হাকিম? বাতলে দিলেন শমীক ভট্টাচার্য #shorts #shortsfeed #bjp #tmc
হাড়োয়ায় তৃণমূল জিততেই বিজেপি প্রার্থীর জমি তচনচ, ক্ষোভ উগরে যা বললেন Samik Bhattacharya
Sukhendu Sekhar কী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে? জল্পনা উস্কে যা বললেন Agnimitra Paul
তন্ত্রযোগ? নাকি বৌমা ও ছেলেকে শিক্ষা দিতেই...আটক দাদু, ঠাকুমা ও জেঠিমা | Hooghly News Today