ধৃতদের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে মারাত্মক তথ্য। আধিকারিকদের দাবি, দাউদ ইব্রাহিমের ভাইয়ের সাথে দিল্লি, উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে উৎসবের মরসুমে হামলার পরিকল্পনা করছিল আইএসআই।
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের (Delhi Police Special Cell) হাতে মঙ্গলবার গ্রেফতার হয় ছয় জন। এরা পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (Inter-Services Intelligence) বা আইএসআই (ISI)-এর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বলে পুলিশ সূত্রে খবর। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের আধিকারিকদের সামনে ধৃতদের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে মারাত্মক তথ্য। আধিকারিকদের দাবি, দাউদ ইব্রাহিমের ভাইয়ের(Dawood Ibrahim’s brother) সাথে দিল্লি, উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে (Delhi, Uttar Pradesh and Maharashtra) উৎসবের মরসুমে (festival season) হামলার পরিকল্পনা করছিল আইএসআই।
দেশে নাশকতা চালানোর জন্য নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠছে কুখ্যাত ডন দাউদ ইব্রাহিম। এই বিষয়টাই ভাবাচ্ছে পুলিশ আধিকারিকদের। পুলিশ কমিশনার (স্পেশাল সেল) নীরজ ঠাকুর বলেন, ধৃতরা হল মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা জান মহম্মদ শেখ (৪৭), জামিয়া নগরের বাসিন্দা ওসামা ওরফে সামি (২২), রায়বরেলির বাসিন্দা মুলচাঁদ ওরফে সাজু (৪৭),এলাহাবাদের বাসিন্দা জিশান কামার (২৮), বাহরাইচের বাসিন্দা মোহাম্মদ আবু বকর (২৩) এবং লখনউয়ের বাসিন্দা মহম্মদ আমির জাভেদ (৩১)।
দিল্লি পুলিশ আরও জানিয়েছে এদের মধ্যে দুজন অভিযুক্ত, ওসামা এবং জিশান এই বছর পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নেয়। আইএসআইয়ের নির্দেশে দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় রেইকি করে। নাশকতা চালানোর জন্য বিভিন্ন জায়গা চিহ্নিতও করা হয়। ধৃতরা দাউদ ইব্রাহিমের ভাই আনিস ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ আন্ডারওয়ার্ল্ড অপারেটিভ সমীরের সাথে যোগাযোগ করে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আইইডি, অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং গ্রেনেড সরবরাহ করার জন্য কাজ শুরু করেছিল।
কয়েক সপ্তাহ আগে, ইন্সপেক্টর সুনীল রাজাইন এবং রবীন্দ্র জোশীর নেতৃত্বে একটি দল গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে গোপন সূত্রে খবর পায় যে পাক মদতপুষ্ট গোষ্ঠী ভারতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ছক কষছে। নীরজ ঠাকুর জানান, পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করে একাধিক আইইডি ইতিমধ্যেই ভারতে সরবারহ করা হয়।
দিল্লি পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ধৃতদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের পর বিভিন্ন রাজ্যে একযোগে অভিযান চালানো হয়। প্রাথমিকভাবে, আন্ডারওয়ার্ল্ড অপারেটিভ জন মহম্মদ শেখকে কোটা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেসময় দিল্লি পালানোর চেষ্টা করছিল মহম্মদ। ওসামাকে ওখলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়, মহম্মদ আবু বকরকে সরাই কালে খান থেকে, জিশানকে এলাহাবাদ থেকে, মহম্মদ আমির জাভেদকে লখনউ থেকে এবং মূলচাঁদকে রায়বেরেলী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধৃতদের জবানবন্দী থেকে জানা গিয়েছে একটি স্লিপার সেল অপারেটিভের কাছ থেকে অত্যাধুনিক RDX-IED, গ্রেনেড, পিস্তল এবং কার্তুজ পায় তারা। সেগুলিকে উত্তরপ্রদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঠাকুর বলেন, ওসামা চলতি বছরের ২২ এপ্রিল লখনউ থেকে সালাম এয়ারের একটি ফ্লাইটে মাস্কাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তাদের সাথে ১৫-১৬ জন যুবক যোগ দিয়েছিল, এরা সবাই বাংলা ভাষায় কথা বলত। দিল্লি পুলিশের দাবি এরা বাংলাদেশ থেকে এসেছিল।