বুধবার যোশীমঠ থেকে ৬৬টি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৭৭টি পরিবারকে স্থানান্তর করা হয়েছে। গোটা বিষয়টির দিকে নজর রাখছে রাজ্য সরকার।
যোশীমঠে ভূমিধসের কারণে পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। ভূমিধসে এখন সমস্ত ওয়ার্ড তলিয়ে গেছে। গোটা পরিস্থিতির বিষয়ে চরম উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পিএমও বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিশেষ টিম নজরদারি চালাচ্ছে। জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট দীপক সাইনি জানিয়েছেন যে পিএমও থেকে এই বিষয়ে ক্রমাগত আপডেট নেওয়া হচ্ছে। এখানে মানুষ যাতে কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়ে সেদিকেও পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
বুধবার যোশীমঠ থেকে ৬৬টি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৭৭টি পরিবারকে স্থানান্তর করা হয়েছে। গোটা বিষয়টির দিকে নজর রাখছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির নির্দেশে বৃহস্পতিবার বিশেষজ্ঞদের একটি দল যোশীমঠের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।
SDC ফাউন্ডেশন উত্তরাখণ্ডে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং দুর্ঘটনার বিষয়ে তৃতীয় রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। উত্তরাখণ্ড ডিজাস্টার অ্যান্ড অ্যাক্সিডেন্ট সিনপসিস (ইউডিএএস) রিপোর্ট অনুযায়ী, যোশীমঠের ৫০০টি বাড়ি থাকার উপযুক্ত নয়। প্রতিবেদনে, যোশীমঠে ঘন ঘন ভূমিধসের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ক্রিকেটার ঋষভ পন্তের সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার ঘটনাকেও সতর্কতা হিসেবে দেখা হয়েছে।
উত্তরাখণ্ড ডিজাস্টার অ্যান্ড অ্যাক্সিডেন্ট সিনপসিস (ইউডিএএস) রিপোর্ট অনুযায়ী, শহরের ৫ শতাধিক বাড়ি বসবাসের উপযোগী নয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবেলায় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, যার কারণে ২৪ ডিসেম্বর তারা রাস্তায় নেমে আসে। এদিন প্রতিবাদে শহরের প্রায় ৮০০ দোকানপাট বন্ধ ছিল। প্রতিবেদনে যোশীমঠে ভূমিধসের কারণও উল্লেখ করা হয়েছে। তা ছাড়া, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রাজ্যে কোনও বড় বিপর্যয় বা দুর্ঘটনা ঘটেনি বলেও জানানো হয়েছে।
সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফর কমিউনিটি (এসডিসি) ফাউন্ডেশনের সভাপতি অনুপ নটিয়ালের মতে, এই ধরণের রিপোর্ট রাজনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক, প্রশাসনিক আধিকারিক, গবেষক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মিডিয়ার জন্য সহায়ক হবে। এর পাশাপাশি, দুর্ঘটনা ও দুর্যোগের কারণে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য নীতিমালা প্রণয়নের সময়ও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। বিপর্যয়ের দিক থেকে উত্তরাখণ্ড খুবই সংবেদনশীল। তাদের গবেষণার ভিত্তিতে, বিজ্ঞানীরা এখানে ভূমিধস এবং ভূমিকম্পের সম্ভাবনা ক্রমাগত উত্থাপন করে চলেছেন। এমন পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে উত্তরাখণ্ডের পার্বত্য অঞ্চলে দুর্যোগ মোকাবিলার কড়া ব্যবস্থা জোরদার করার একান্ত প্রয়োজন।
উত্তরাখণ্ডের যোশীমঠে ভূমিধস বড় বিপর্যয়ের দিকে ইঙ্গিত করছে। এই সবুজ উপনিবেশ এখন শেষ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। শহরের বাড়িঘরে গভীর ফাটল দেখা দিচ্ছে এবং মাটি নিচের দিকে তলিয়ে যাচ্ছে। জোশীমঠের ৫৬১টিরও বেশি বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত গভীর হওয়া ফাটলের কারণে মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। প্রশাসন মানুষকে শহর থেকে সরিয়ে দিচ্ছে।
ফাটল দেখে লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে ছুটছে। ভূমিধসের কারণে বাড়িঘর ধসে পড়ার আশঙ্কায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় মানুষ চরম আতঙ্কিত। ক্ষমতাসীন সরকার উত্তরাখণ্ডে ভূমিধস ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।