ইস্তফা দেওয়া বিদ্রোহী বিধায়কদের অভয় সুপ্রিম কোর্টের, কর্ণাটকে সরকার পতন অবশ্যাম্ভাবি

Indrani Mukherjee |  
Published : Jul 11, 2019, 12:38 PM ISTUpdated : Jul 11, 2019, 12:40 PM IST
ইস্তফা দেওয়া বিদ্রোহী বিধায়কদের অভয় সুপ্রিম কোর্টের, কর্ণাটকে সরকার পতন অবশ্যাম্ভাবি

সংক্ষিপ্ত

আরও সঙ্কটে কর্ণাটকে কং-জেডিএস সরকার  সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সঙ্কট চরমে উঠল  সরকারের পতন এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা আজ মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী

আজ সন্ধে ছয়টার মধ্যে ইস্তফাপত্র জমা করুন- এমনই অভয়বাণী দিল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে কর্ণাটকের বিদ্রোহী বিধায়কদের বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আপাতত আইনি প্যাঁচ নসাৎ হয়ে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে, যে কংগ্রেস ও জেডিএস-এর ১০ বিধায়কের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে হবে কর্ণাটক বিধানসভার অধ্যক্ষকে। আজ সন্ধে ছয়টার মধ্যেই এই ইস্তফা জমা করতে ১০ বিধায়ককে নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর জন্য ১০ বিধায়ককে প্রয়োজনীয় পুলিশি নিরাপত্তা যাতে দেওয়া হয়, সেই জন্য কর্ণাটকের ডিজিপি-কেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

কর্ণাটক বিধানসভার অধ্যক্ষ এই ১০ কংগ্রেস ও জেডিএস বিধায়কের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি। তিনি জানিয়েছিলেন, যেহেতু তাঁর সঙ্গে দেখা না করে এই বিধায়করা পদত্যাগ করেছেন সেই জন্য তিনি তা গ্রাহ্য হবে না। আইন মোতাবেক তাঁর সঙ্গে দেখা করেই পদত্যাগপত্র জমা করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কর্ণাটক বিধানসভার অধ্যক্ষের এই অবস্থান আসনে কংগ্রেস ও জেডিএস সরকারকে বাঁচানোর চেষ্টা বলে প্রতিবাদ করে বিজেপি। এই পদত্যাগপত্র গ্রহণের দাবিতে বিএস ইয়েদুরাপ্পার নেতৃত্বে বিজেপি পরিষদীয় দল বুধবার রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। পরে রাজ্যপাল বাজুভাই বালার সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা। তিনি দাবি করেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাল্টা এই স্থানে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। দিল্লিতে থেকে আসা কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতা গুলামনবি আজাদও এই বিক্ষোভে যোগ দেন। পরে পুলিশে ওই স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করে এবং কংগ্রেসের বিক্ষোভকারীদের আটকও করা হয়। 

এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন কংগ্রেস ও জেডিএস-এর ১০ বিদ্রোহী বিধায়ক। তাঁদের পদত্যাগপত্র যাতে গ্রহণ করা হয় সেই জন্য এই মামলায় আবেদন করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই বিধায়করা নিজেদের ইচ্ছেতেই পদত্যাগ করতে পারেন। তাতে কারোর বাধা দেওয়ার অধিকার নেই। সন্দেহ নেই সুপ্রিম কোর্টের এই অবস্থান কর্ণাটক-এ কংগ্রেস ও জেডিএস সরকারের কাছে একটা ধাক্কা। এই ১০ বিধায়ককে ধরে এই মুহূর্তে কংগ্রেস ও জেডিএস জোট থেকে মোট ১৮ জন পদত্যাগ করেছেন। এই দলে ২ নির্দল বিধায়কও রয়েছেন। বুধবার রাতে কংগ্রেস থেকে ২ বিধায়ক পদত্যাগ করেন।  এঁরা হলেন এম টি বি নাগরাজ এবং কে সুধাকর। পদত্যাগপত্র জমা করে এঁরা দুজনেই মুম্বই গিয়ে বিদ্রোহী বিধায়কদের হোটেলে থাকতে শুরু করেছেন। এদিকে, এদিন থেকেই কর্ণাটক বিধানসভার অধিবেশন শুরু হয়েছে। সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত হিসাব-নিকেশ কষতে মন্ত্রিসভার বৈঠকও ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী।  

কর্নাটকে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পর বেঙ্গালুরুতে প্রেস কনফারেন্সে সিদ্দারামাইয়া দাবি জানিয়েছিলেন, বিদ্রোহী বিধায়কদের দল ছাড়ার প্রক্রিয়া আইন মেনে হয়নি এবং সংবিধানের ১০ নম্বর ধারায় থাকা দলত্যাগী বিরোধী আইনের পরিষ্কার লঙ্ঘন হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের প্রাক্তন এই মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বিদ্রোহী বিধায়কদের দল ছাড়ার পুরো প্রক্রিয়াটিই অসাংবিধানিক। বুধবার বিদ্রোহী বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করতে মু্ম্বইয়ে যান কর্নাটকের জল সম্পদ মন্ত্রী শিবকুমার। কিন্তু মু্ম্বইয়ের যে পাঁচতারা হোটেলে সেই ১০ বিদ্রোহী বিধায়ক রয়েছেন তাদের সঙ্গে সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি শিবকুমারকে। এমনকী শিবকুমারের বিরুদ্ধে 'গো ব্যাক' স্লোগানও ওঠে। পরে মহারাষ্ট্রপুলিশ তাঁকে আটকও করে এবং মুম্বইয়ের সেই হোটেলের সামনে ১৪৪ ধারা লাগু করে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় বুধবার দেশজুড়ে রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সংসদ অধিবেশনেও বিজেপি-র বিরুদ্ধে বিরোধীরা অভিযোগ করেন। অধিবেশন থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনেও সংসদে বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী তীব্র সমালোচনা করেন বিজেপি-র। 

বুধবার গভীররাতে মুম্বই পুলিশ একপ্রকার জোর করেই কর্ণাটকে কংগ্রেসের ক্রাইসিস ম্যান হিসাবে পরিচিত ডিকে শিবকুমার এবং তাঁর সঙ্গীদের বেঙ্গালুরুর বিমানে তুলে দেয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার কর্ণাটক বিধানসভার সামনে শিবকুমার জানান, দল্যত্যাগী বিধায়করা এখনও এই সরকারের সঙ্গে আছেন বলেই তাঁর বিশ্বাস। কিন্তু, শিবকুমারের এই বিশ্বাস কতটা ধোপে টিকবে না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। 

PREV
click me!

Recommended Stories

মহিলা আর প্রবীণ রেলযাত্রীদের জন্য বরাদ্দ লোয়ার বার্থ, সুখবর দিলেন রেলমন্ত্রী
ইম্ফল রোডে তোলাবাজির অভিযোগ, ইউএনএলএফ ক্যাডারকে গ্রেফতার করল মণিপুর পুলিশ