১৮ ঘণ্টা মার, জোর করে জয় শ্রীরাম বলানো, ধিক্কার জানালেন তসলিমা

  • চোর সন্দেহে ১৮ ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে মারা হয়েছে ঝাড়খণ্ডের এই যুবককে
  • তিনি মুসলমান জানার পরই বেড়েছে 'জয় শ্রীরাম' রব আর মারের দমক
  • এবার তবরেজ কাণ্ডে কলম ধরলেন প্রখ্যাত লেখিকা তাসলিমা নাসরিন

arka deb | Published : Jun 24, 2019 3:07 PM IST / Updated: Jun 24 2019, 09:04 PM IST

চোর সন্দেহে ১৮ ঘণ্টা ধরে পেটানো হয়েছে ঝাড়খণ্ডের এই যুবককে। তিনি মুসলমান জানার পরই বেড়েছে 'জয় শ্রীরাম' রব আর মারের দমক। পুনেতে ঝালাই মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করা যুবক শেষমেশ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। তাঁর মৃত্যুতে ঝাড়খণ্ডে গত তিন বছরে গণপিটুনিতে হত্যার সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াল ১৩ তে।  এবার তবরেজ কাণ্ডে কলম ধরলেন প্রখ্যাত লেখিকা তাসলিমা নাসরিন। 

মূল খবরটি পড়ুনঃ 'বল জয় শ্রীরাম, বল জয় হনুমান', ১৮ ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে মারা হল ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দাকে

এদিন তাসলিমা নাসরিন তাঁর নিজের ফেসবুক পেজে লেখেন, '২৪ বছর বয়সি তবরেজ আনসারিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পিটিয়েছে তারা, যারা তাকে জয় শ্রীরাম আর জয় হনুমান বলতে বাধ্য করেছে। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালেই মরতে হলো তবরেজকে। মোটর সাইকেল চুরি করতে চেয়েছিল তবরেজ । বেটা চোর। কিন্তু চোরকে কি পিটিয়ে মেরে ফেলতে হয়? চোরকে কেনই বা জয় শ্রীরাম বলতে বলা হবে। রাগটা কি তবে যত না সে চোর বলে, তার চেয়ে বেশি মুসলমান বলে? ভারত নিয়ে আমি কতই না গর্ব করি যে এই দেশটি এর সংখ্যালঘুদের বড় ভালো রাখে। বাংলাদেশ আর পাকিস্তান তো তাদের সংখ্যালঘুদের নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে। কিন্তু কদিন পর পরই এই ভারতবর্ষে ঘটে যাচ্ছে সংখ্যালঘুকে পিটিয়ে মারার কাহিনী, জোর করে জয় শ্রীরাম বলার কাহিনী। আমি জানি না কী মনে করে এরা মুসলমানদের মুখ থেকে জয় শ্রীরাম শুনতে চায়। রামের যারা ভক্ত, তারা তো জয় শ্রীরাম বলছেই, তাদের তো কেউ বাধা দিচ্ছে না। জয় শ্রীরাম বললে কি মুসলমানরা হিন্দু হয়ে যায় বা রামকে ঈশ্বর বলে মানতে শুরু করে ? তা তো নয়, বরং এসবের জন্য হিন্দুদের বদনাম হয়। পিটিয়ে কি ১৭ কোটি মুসলমানকে মেরে ফেলা যাবে, সে তো যাবে না।শান্তির সম্পর্ক গড়ে তোলা ছাড়া আপাতত আর কোনও উপায় নেই। অন্যের প্রতি তীব্র ঘৃণা নিয়ে দিনের পর দিন বাস করাও দুর্বিষহ।প্রাণের আরাম হয় না। সে কারণে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বন্ধুত্বই একমাত্র সমাধান। ভারত মহান। ভারতকে বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের মতো হওয়া মানায় না।'
 

প্রসঙ্গত তবরেজ মার খেতে খেতে নিজেও বলেছেন, তাঁকে মোটরবাইক দেখতে বলে হাওয়া হয়ে যান দুই ব্যক্তি। কিছুক্ষণ পরে বেশ কয়েকজন মিলে এসে তাঁর ওপর চড়াও হয়। দীর্ঘ সময় থাকার পরে পুলিশ এসে তাঁর আধমরা দেহটাকে উদ্ধার করে। মরণাপন্ন অবস্থায় তাঁকে আদালতেও নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। জেল হেফাজতে শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাবরেজকে। হাসপাতালেই তাবরেজের মৃত্যু  হয়।  

Share this article
click me!