১৮৮০-র দশকে, কুখ্যাত জ্যাক দ্য রিপার নিজের উদ্যোগ শুরু করার সাত বছর আগে, বাংলার এবং সম্ভবত ভারতের প্রথম পরিচিত সিরিয়াল কিলার এসেছিলেন, যাঁর নাম ছিল- ত্রৈলোক্য তারিণী দেবী। প্রথম জীবনে ছিলেন একজন নির্দোষ ব্রাহ্মণ বিধবা, যিনি একটি খারাপ চক্রের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়েছিলেন এবং অল্প বয়সে যৌন পাচারের জগতে চলে এসেছিলেন। এরপর তিনি কালী বাবু নামে একজন বিবাহিত পুরুষের প্রেমে পড়েন। ওনার স্ত্রীর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র হরিকে দত্তক নিয়ে, ত্রৈলোক্য জীবিকা নির্বাহের জন্য মানুষকে ঠকানোর কাজে অবতীর্ণ হন। এই প্রতারণার ছলনা শেষ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে গিয়ে পৌঁছেছিল। শুধুমাত্র বিপুল অঙ্কের গয়না চুরি করার লোভে নিরীহ মহিলাদের ডেকে নিয়ে যেতেন এই ধুরন্ধর আততায়ী। নির্জন জায়গায় একটি পুকুরে নিয়ে গিয়ে ওই মহিলাদের ডুবিয়ে মেরে ফেলতেন তিনি। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে ৫ জন মহিলাকে হত্যা করেছিলেন। এরপর একদিন হাতেনাতে ধরা পড়ে যান। কিন্তু, আদালতে দীর্ঘ শুনানির পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মুক্তি পেয়েই তিনি আরেকটি খুন করেন। শেষবার অলঙ্কার চুরি করার জন্য একজন মহিলাকে গলা টিপে ধরে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। পুলিশের গোয়েন্দা প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায় এই মামলাটির তদন্ত করেন এবং ত্রৈলোক্যকে ফাঁসানোর একটি সফল পরিকল্পনা তৈরি করেন, যেটাতে শেষ পর্যন্ত তাঁকে ধরা দিতে হয়। ১৮৮৪ সালে তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছিল।