কোন যুক্তিতে মুক্তি বিলকিস বানোর ধর্ষকদের? গুজরাত সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মহুয়া

দেশের ৭৬ তম সব স্বাধীনতা দিবসের দিন বিলকিস বানো-কাণ্ডে দোষীসাব্যস্ত ১১ জন আসামীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। সিবিআই-এর মতে 'বিরল থেকে বিরলতম' আখ্যাপ্রাপ্ত অপরাধের জন্য যেখানে দোষীদের যাবজ্জীবন সাজার রায় দিয়েছিল সিবিআই-এর বিশেষ আদালত সেখানে কোন যুক্তিতে ১১ জনকেই মুক্তির সিদ্ধান্ত নিল গুজরাত সরকার তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। 
 

Ishanee Dhar | Published : Aug 23, 2022 9:11 AM IST / Updated: Aug 23 2022, 04:00 PM IST

বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি এনভি রমনার সামনে এই মামলাটি তুলে ধরেন আইনজীবী অপর্ণা ভট্ট এবং বুধবারের মধ্যেই যেন জরুরি ভিত্তিতে মামলাটি তালিকাভুক্ত করা হয় আদালতের কাছে সে আর্জিও জানান আইনজীবী অপর্ণা ভট্ট। বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্ত পুণরায় খতিয়ে দেখার আবেদন জানিয়ে একটি আবেদন পত্র সুপ্রিম কোর্টে জমা দেন তৃণমূল সাংসদ। 
দেশের ৭৬ তম সব স্বাধীনতা দিবসের দিন বিলকিস বানো-কাণ্ডে দোষীসাব্যস্ত ১১ জন আসামীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। সিবিআই-এর মতে 'বিরল থেকে বিরলতম' আখ্যাপ্রাপ্ত অপরাধের জন্য যেখানে দোষীদের যাবজ্জীবন সাজার রায় দিয়েছিল সিবিআই-এর বিশেষ আদালত সেখানে কোন যুক্তিতে ১১ জনকেই মুক্তির সিদ্ধান্ত নিল গুজরাত সরকার তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। 
মঙ্গল সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া আবেদনপত্রে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মিত্র বলেছেন, বিলকিস বানো-কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত গুজরাত সরকার নিয়েছে তা পুণরায় খতিয়ে দেখুক আদালত। রাজ্যের হাতে থাকা ক্ষমতার যেন অপপ্রয়োগ না হয়। 
এই প্রসঙ্গে একটি সংবাদ মাধ্যমকে মহুয়া জানিয়েছেন, "অসুস্থতা বা বয়সের কারণে কারও ক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। কিন্তু একসঙ্গে ১১ জনকেই কী যুক্তিতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল গুজরাত সরকার, তা বোধগম্য নয়। তা স্পষ্টও করেনি গুজরাত সরকার।আমরা চাই এ ধরনের মুক্তির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট একটি গাইডলাইন (নির্দেশিকা) তৈরি করে দিক সুপ্রিম কোর্ট।"
মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়ে সিবিআই-এর সঙ্গে কেন কোনও আলোচনা করা হল না সে বিষয়ও প্রশ্ন তুলেছেন সাংসদ। 
এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বিলকিস বলেছেন," আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম, এখনও বোবা হয় আছি। বিগত ২০ বছরের আতঙ্ক যেন ফের গ্রাস করল আমায়। আমার জীবন আমার পরিবারকে শেষ করে দেওয়া ১১টা লোক মুক্তি পেয়ে গেল।"
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গোধরা-কাণ্ড পরবর্তী সময় গুজরাতের সাম্প্রদায়ীক হিংসার শিকার হন দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামের বিলকিস বানো। ৩ মে ভয়াবহ হামলা চালানো হয় গ্রামে, পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। চোখের সামনে পাথরে আছাড় মেরে খুন করা হয় তাঁর তিন বছরের মেয়েকে। হত্যা করা হয় তাঁর পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যকে। এই ভয়াবহ অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দেয় সিবিআই-এর বিশেষ আদালত। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। 
আসামীদের মধ্যে একজন মুক্তির জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই গত ১৫ অগাস্ট  গোধরা জেল থেকে ১১ জনকে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গুজরাত সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সরব হয় সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। 

Share this article
click me!