তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের বড় রায়, পত্নীকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বঞ্চিত করাও একপ্রকার নিষ্ঠুরতা

Published : Jul 01, 2024, 11:23 PM IST
lawsuit against Apple company

সংক্ষিপ্ত

তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের বড় রায়। বিয়ের প্রেক্ষাপটে “নিষ্ঠুরতার” সংজ্ঞা নিয়ে বড় রায় দিল তারা। এমন কোনও কাজ যা খ্যাতি, সামাজিক অবস্থান কিংবা একজন স্বামী অথবা স্ত্রীর অন্যের দ্বারা কাজের তাঁর সম্ভাবনাকে ক্ষতি করে, এইরকম কিছু আদতে নিষ্ঠুরতারই সমান।

তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের বড় রায়। বিয়ের প্রেক্ষাপটে “নিষ্ঠুরতার” সংজ্ঞা নিয়ে বড় রায় দিল তারা। এমন কোনও কাজ যা খ্যাতি, সামাজিক অবস্থান কিংবা একজন স্বামী অথবা স্ত্রীর অন্যের দ্বারা কাজের তাঁর সম্ভাবনাকে ক্ষতি করে, এইরকম কিছু আদতে নিষ্ঠুরতারই সমান।

উপরন্তু, আদালত উল্লেখ করেছে যে “একজন পত্নীকে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে থাকা থেকে বঞ্চিত করাও সেইরকমই নিষ্ঠুরতার সমান হতে পারে।”

বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি এমজি প্রিয়দর্শিনীর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। উল্লেখ্য, হিন্দু বিবাহ আইনের (এইচএমএ) অধীনে থাকা বিবাহবিচ্ছেদের জন্য স্বামীর দায়ের করা একটি মামলায় রায় দেওয়ার সময় তাদের এই পর্যবেক্ষণ।

এই মামলাটি মাহাবুবনগরের প্রিন্সিপাল সিনিয়র সিভিল জজ কর্তৃক গৃহীত ২ নভেম্বর, ২০২১-এর একটি আদেশ থেকে ফের একবার সামনে আসে। যা এইচএমএ, ১৯৫৫-এর ধারা 13 (১) (আই-এ) এবং (আই-বি)-এর অধীনে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য সেই মামলাকারীর আবেদন খারিজ হয়ে গেছিল।

আদালত আগের সিদ্ধান্তটি বাতিল করেছে। তারা জোর দিয়ে বলে যে, বিবাহিত ব্যক্তিদের উপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। দুই পক্ষের কাউকে প্রেমহীন বিয়েতে টিকে থাকতে বাধ্য করা উচিত নয়। আদালত জানায়, “পুরো বিষয়টির ওপর আদালতের একটি সীমিত ভূমিকা রয়েছে এবং একজন আলাদা পরামর্শদাতা হিসেবে কারোর এমন কোনও কাজ করা উচিত নয়, যেখানে দুই পক্ষকে জোর করা হচ্ছে। স্ত্রী এবং স্বামীর মধ্যে যদি ঠিক সম্পর্ক না থাকে, তাহলে তা জোর করে চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে এইরকম কেউ বাধ্য করতে পারে না।”

মামলাকারী সেই স্বামী এবং তাঁর স্ত্রী হিন্দু রীতি অনুযায়ী ১ ডিসেম্বর, ২০১০ সালে বিয়ে করেন। এই দম্পতি গত ৪ ডিসেম্বর, ২০১০ সাল থেকে বৈবাহিক সমস্যার সম্মুখীন হন। যার ফলে, স্ত্রী ১ নভেম্বর, ২০১১ সালে ফের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের সন্তান হয় গত ২০১১ সালে।

স্ত্রী ১১ জুলাই, ২০১২ সালে অভিযোগ দায়ের করেন এবং স্বামী ও তাঁর পরিবার ২৫ আগষ্ট, ২০১২ সালে আগাম জামিন পায়। যদিও মামলাকারী প্রাথমিকভাবে ২০১২ সালে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেন। তিনি মামলাটি চালিয়ে যেতে যাননি। কিন্তু পরবর্তীকালে মামলাকারীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮-এ ধারার অভিযোগ সহ পাঁচটি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়।

গত ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে, ট্রায়াল কোর্ট স্বামীর বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। স্বামী তখন হাইকোর্টে আপিল করেন, যুক্তি দেখিয়ে যে তার স্ত্রীর বারবার ফৌজদারি মামলা দায়ের করা আসলে শারীরিক এবং মানসিক নিষ্ঠুরতা।

আদালত দেখেছে যে আপীলকারীর বিরুদ্ধে সাতটি মামলা দায়ের সহ বিবাদীর কর্মগুলি মানসিক নিষ্ঠুরতার প্রমাণ দিয়েছে। আপিলকারীর চাকরি হারানো এবং ২০১১ সাল থেকে দীর্ঘায়িত বিচ্ছেদ আরও প্রমাণ করে যে, বিয়েটি অপ্রতিরোধ্যভাবে ভেঙে গেছে। আদালত উল্লেখ করেছে যে, “বিবাহ হল প্রতিজ্ঞার বিনিময় বা একক অনুষ্ঠানের চেয়ে অনেক বেশি কিছু। একসঙ্গে জীবনযাপন করার ইচ্ছে প্রয়োজন। প্রতিটি বিবাহের একটি মূল এবং ভিত্তি রয়েছে, যা দুটি ব্যক্তির মিলনকে ধরে রাখে। বিবাহিত ব্যক্তিরা যখন বিচ্ছিন্ন হতে চায় তখন সেই ভিত্তিটি ভেঙে যায়। বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা অস্বাভাবিক হবে। যদি উভয় পক্ষের কারোরই কোনও আবেগ না থাকে।”

আদালতের কথায়, “বিবাহের স্তর এমনভাবে যদি ভেঙে যায়, যেখানে যাতে কাঠামোটি সংরক্ষণ করা যায় না বা পুনর্নির্মাণ সম্ভব নয়৷ নিষ্ঠুরতা, পরিত্যাগ, উন্মাদনা এমন কয়েকটি ভিত্তি যা সেই দিকে একটি পদক্ষেপের কারণ হতে পারে।”

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

PREV
click me!

Recommended Stories

ই-চালান ইন্টিগ্রেশনে উত্তরপ্রদেশে সড়ক সুরক্ষায় জোর, ১৭ জেলায় শুরু প্রক্রিয়া
রাহুলের সমালোচনা করতেই কংগ্রেসের 'ফোঁস', জিন্না-বিজেপি যোগের কথা বলে মোদীকে 'বিকৃতির মাস্টার' বলল