ভাষা বিতর্কে ইসরোর অভিযান, হিন্দি-সংস্কৃত ধন্দের মধ্যেই প্রশ্ন কেন নয় তামিল-কন্নড়

  • ফের ভাষা বিতর্ক
  • ইসরোর সব অভিযানের নাম কেন হিন্দিতে উঠল প্রশ্ন
  • অনেকের দাবি ভাষাটা সংস্কৃত
  • কেন দক্ষিণ ভারতীয় ভাষায় নামকরণ হবে না সেই প্রশ্নও উঠছে

 

amartya lahiri | Published : Jan 2, 2020 1:11 PM IST / Updated: Jan 02 2020, 06:48 PM IST

নতুন বছরের শুরুতেই ফের মাথা চাড়া দিল ভাষা বিতর্ক। এবার বিতর্কের কেন্দ্রে ইসরোর মহাকাশ অভিযান। প্রতিটি অভিযানের নামই কেন হিন্দি ভাষায় দেওয়া হয়, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিশিষ্ট সাংবাদিক। এরপরই ইসরোর অভিযানগুলির নামকরণের ভাষা হিন্দি না সংস্কৃত এই নিয়ে নেটদুনিয়ায় চলছে তীব্র বিতর্ক। অনেকে আবার প্রশ্ন করছেন, ইসরোর বেশিরভাগ কেন্দ্র দক্ষিণ ভারতে হলেও, একটিও অভিযানের নাম কোনও দক্ষিণ ভারতীয় ভাষায় দেওয়া হয় না কেন?

২০১৯-এ ইসরোর চন্দ্রযান-২ অভিযান নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে যে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছিল, তাকে আরও উসকে দিয়ে ২০২০ সালের একেবারে প্রথম দিনটিতেই ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন চন্দ্রযান-৩ ও গগনযান অভিযানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছিলেন। এরপরই বৃহস্পতিবার 'দ্য হিন্দু' সংবাদপত্রের অ্যাসোসিয়েট এডিটর নারায়ণ লক্ষ্মণ টুইট করে প্রশ্ন করেন কেন জাতীয় স্তরের এই অভিযানগুলির সবকটির নাম হিন্দিতে দেওয়া হয়? প্রধানমন্ত্রীকে 'নমোভাই' বলে সম্বোধন করে তিনি বলেন, গোবলয়ের বাইরেও ভারতীয়রা থাকে, সেই কথা মাথায় রাখা উচিত।

এরপরই নেটদুনিয়া জুড়ে ফের ভাষা বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই নারায়ণ লক্ষ্মণ-কে বলেছেন 'গগনযান' বা 'চন্দ্রযান' শব্দগুলি সংস্কৃত শব্দ, হিন্দি নয়। কেউ কেউ অতি উৎসাহে সংস্কৃতকে 'সবব ভাষার জননী' বলে উল্লেখ করেন। কেউ বলেন সংস্কৃত 'ভারতীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতার আত্মা'। অনেকে বলেছেন, গগন বা চন্দ্র-এর মতো সংস্কৃত শব্দ হিন্দি বা গোবলয়ের বাইরেও বহুল প্রচলিত। নায়ায়ণ লক্ষ্মণ-এর নামই এসেছে দুটি সংস্কৃত শব্দ থেকে সেই কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন অনেকে।

আবার এই শব্দগুলি সংস্কৃত নয় হিন্দি, এমন মতের সমর্থকের সংখ্যাও কম নয়। তাঁরা যুক্তি দিয়েছেন, সংস্কৃত ভাষা হলে সংস্কৃত ব্যাকরন অনুযায়ী অভিযানগুলির নাম হত 'গগনযানা' বা 'গগনযানম' এবং 'চন্দ্রযানা' বা 'চন্দ্রযানম'। কখনই গগনযান ও চন্দ্রযান হত না। আবার সংস্কৃত সকল ভাষার জননী, বা সংস্কৃতই 'ভারতীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতার আত্মা' এই কথাটিও ভুল, তাও ধরিয়ে দিয়েছেন কেউ কেউ। আর একজন জানিয়েছেন সংস্কৃত ও তামিল দুটিই প্রাচীন ভাষা। দুটি ভাষা একে অপরের কাছাকাছি এলে তাদের মধ্য়ে বিবিন্ন শব্দের আদানপ্রদান হয়। তামিলে যেমন অনেক সংস্কৃত শব্দ পাওয়া যায়, তেমনই সংস্কৃতেও তামিল শব্দ রয়েছে। বস্তুত, তামিল চন্দিরান শব্দ থেকেই চন্দ্র কথাটি ধার নিয়েছিল সংস্কৃত। আবার একজন সরাসরি দাবি করেছেন হিন্দিভাষীদের দখলে জাতীয় রাজনীতির চাবিকাঠি থাকায় কোনওদিনই কোনও অভিযানের নাম কোনও দক্ষিণ ভারতীয় ভাষায় হবে না।

আর এই বিতর্ক উত্থাপন করা নায়ারণ লক্ষ্মণ পরে এক টুইটে দাবি করেছেন, তাঁকে টুইটে ট্রোল করার জন্য বিজেপি-র পক্ষ থেকে ব্যাঙ্কক, ক্যালিফোর্নিয়ার মতো জায়গা থেকে টুইট প্রতি ৭ টাকা দরে লোক ভাড়া করা হয়েছে। আরও এক টুইটে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর টুইট অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

 

Share this article
click me!