'এই দুর্যোগ কি কখনও শেষ হবে', ধ্বংসস্তূপের শহরে মুহূর্মুহু আতঙ্ক ছড়ালো ১৯৬টি আফটার শক

শুক্রবার রাতেই বড় ভূমিকম্পে কেঁপে গিয়েছে তুরস্ক

ইজমির শহরের বেশিরভাগ ভূতলই মিশে গিয়েছে মাটিতে

গ্রিসের কার্লোভাসি শহরের অবস্থাও তথৈবচ

সামগ্রিকভাবে মৃতের সংখ্যাটা এখন ২২

 

amartya lahiri | Published : Oct 31, 2020 4:16 AM IST

'এই দুর্যোগ কি কখনও শেষ হবে?' শুক্রবার রাতে প্রায় ১০ ​​মিনিট ধরে সমানে পায়ের তলায় কেঁপে যাচ্ছিল মাটি। পুরো বাড়িটা দোলনার মতো দুলছে। আর ইজমিরের বাসিন্দা ৩২ বছরের একমনে ডেকে যাচ্ছিলেন ঈশ্বরকে। সেই মুহুর্তে নিজের কথা নয়, তিনি আতঙ্কিত ছিলেন তাঁর পরিবার, বিশেষ করে স্ত্রী এবং চার বছরের ছেলের জন্য। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁরা প্রত্যেকেই রক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু, সেই সৌভাগ্য হয়নি তাঁদের মতো আরও অনেকের।

শুক্রবার রাতেই রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্কের শহর ইজমির। তারপর থেকে ওই শহরে প্রায় ১৯৬ টি আফটার শক অর্থাৎ ছোট ছোট ভূমিকম্প হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছেআপাতত পুরো এলাকা জুড়ে একটি বিশাল অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ চলছে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি অবস্থা মোকাবিলা দপ্তর জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ইজমিরে প্রায় ১৭ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ৭০০ জনেরও বেশি গুরুতর আহত, কাজেই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তেই পারে।

জানা গিয়েছে মূল ভূমিকম্পটি এজিয়ান সাগরে আঘাত হেনেছিল। তারপর থেকে ওই অঞ্চলে প্রায় ২০০ টি কম্পন অনুভূত হয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ২৩ টি ক্ষেত্রে কম্পন রিখটার স্কেলে ৪ মাত্রাতেও পৌঁছেছে। সেফেরিহিসার থেকে ১৭.২৬ কিমি দূরে মাটির নিচে ১৬.৫৪ কিমি গভীরতায় ভূমিকম্পটির এপিসেন্টার ছিল। ভূমিকম্পের ফলে এজিয়ান সাগরের দ্বীপ সামোস-এ মিনি সুনামির সূত্রপাতও হয়েছে। হিংস্র সমুদ্র ঢেউ তুলেছে তুরস্কের পশ্চিম উপকূলের নদীর তীরবর্তী শহরগুলিতেও।

ইজমির শহর ও তার আশেপাশের অঞ্চলে প্রায় ত্রিশ লক্ষ বাসিন্দা বাস করেন। গোটা এলাকাটিই বহুতল ভবনে ঘেরা। ভূমিকম্পের পর ওই এলাকার এরিয়াল ফুটেজে অর্থাৎ আকাশ থেকে তোলা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে শহরটির প্রায় সব বহুতলই মাটিতে মিশে গিয়েছে। ইজমির শহরের অন্তত ১৭ টি বিশালাকার বহুতল পুরো ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিশাল বিশাল ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে এখন অনুসন্ধান ও উদ্ধারের কাজ চলছে।

এই ভূমিকম্পের ফলে অবশ্য শুধু তুরস্ক নয়, গ্রিসেরও বড় ক্ষতি হয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎসস্থল থেকে গ্রিসের শহর কার্লোভাসি-র দূরত্ব মাত্র ১৪ কিলোমিটার। গ্রিস এবং তুরস্ক মিলিয়ে এই শক্তিশালী ভূমিকম্পে সামগ্রিকভাবে মৃতের সংখ্যা আপাতত ২২-এ পৌঁছেছে। ভূমিকম্পের পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ চতাইপ এর্দোগান, গ্রীক প্রধানমন্ত্রী কেরিয়াকোস মিতসোতাকিস-এর সঙ্গে ক্ষযক্ষতি ও বিপর্যয় মোকাবিলার বিষয়ে ফোনে কথা বলেছেন।

 

Share this article
click me!