পৃথিবীতে এমন অনেক গোপন রহস্য রয়েছে যেগুলির সমাধান খুব সহজে করা সম্ভব হয় না। অনেককালের বহু গবেষণার পরও যে উত্তর মেলে তা সন্তুষ্ট করতে পারে না। ফলে অনুসন্ধান যেমন অসম্পূর্ণ থেকে যায় তেমনি না পাওয়া উত্তরের জন্য বিষয়টি অদ্ভুত কিংবা রহস্যময় রয়ে যায়।
পোল্যান্ডে একটি জঙ্গলে এই রকমই একটি রহস্য আছে। ওই জঙ্গলকে বলা হয়, ক্রুকেড ফরেস্ট। পোল্যান্ডের পশ্চিমে গ্রিফিনো শহরের কাছেই রয়েছে এই জঙ্গলটি। যেখানে প্রায় ৪০০ গাছ ৯০ ডিগ্রিতে বেঁকে রয়েছে। গাছগুলি কেন বেঁকে রয়েছে সে ব্যাপারে অনেক তথ্য দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সঠিকভাবে এখনো কিছু বলা সম্ভব হয়নি। অনেকে এই গাছগুলিকে অন্য গ্রহের বলে মনে করে।
পোল্যাণ্ডের নোয়ে সজারনোয়ে গ্রামের পাশে বিশ্বের এই অদ্ভুত জঙ্গলের গাছগুলি নাকি রোপন করা হয়েছিল। অনেকে সেরকমটাই বলেন। তারা বলেন, ওই গাছগুলি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রোপণ করা হয়েছিল। ২২টি সারিতে শ’ চারেক অদ্ভুত আকারের পাইন গাছ একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে বেঁকে রয়েছে। আরও একটি অদ্ভুত ব্যাপার হল সমস্ত গাছ উত্তর দিকে বেঁকে রয়েছে।
ওই গাছের কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরির উদ্দেশ্যে এগুলো লাগানো হয়েছিল। তবে কেন এই গাছগুলো এমন বিচিত্রভাবে বেঁকে গেল তা আজো জানা যায়নি। কেউ বলেন, অন্য গ্রহে থাকা আসা অ্যালিয়ান্সরা এমন করেছে। আরেকটি তত্ত্ব অনুযায়ী এখানে রয়েছে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অর্থাৎ মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর অন্যান্য অংশের চেয়ে বেশি সেই কারণে গাছগুলি বেঁকে রয়েছে।
কারও বক্তব্য, এখানে গ্রামবাসীরা যখন গাছগুলিকে রোপণ করেছিলেন তার কয়েকদিন পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। আবার কয়েকজন মনে করেন জঙ্গলের পাশে ট্যাঙ্কের প্রভাবেই গাছগুলি বেঁকে গেছে। কিন্তু ট্যাঙ্কের প্রভাবে এই রকম হতে পারে বিশ্বাস করা যায় না। অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন যে, গাছগুলি যখন বৃদ্ধি পাচ্ছিল তখন সেটা কোনও কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেই কারণে গোড়া থেকেই গাছগুলি বেঁকে যায়। আর একটি জনপ্রিয় তত্ত্ব হলো যে বরফ পড়ার কারণে গাছগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এতগুলি তত্ত্ব দেওয়া সত্ত্বেও এখনো সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয় যে গাছগুলির বেঁকে গেছে কেন।
এই সমস্ত তত্ত্ব নিয়েও উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। এই বিচিত্র জঙ্গলে পর্যটকেরা বেড়াতে আসেন প্রায়ই। সিনেমার শুটিংও হয়েছে বেশ কয়েকবার। গাছের এ ধরনের আকৃতির কারণ নিয়ে সংশয় থাকায় এখনও এই নিয়ে চলছে গবেষণা। গবেষণার পর কেউ বলেছেন, কৃত্রিম কোনও পদ্ধতি অবলম্বন করে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ওই গাছগুলিকে এমন করে আকৃতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই পদ্ধতি কী, তা কেউ বলতে পারেননি। সেগুলিকে নাকি বলা হত কম্পাস টিম্বার।