ব্রাজিল প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ বলছে, টানা মুষলধারে বৃষ্টি থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের খুঁজে পাওয়ার এই মুহূর্তে খুব একটা আশা নেই। প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানাচ্ছেন যে ২৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে ভয়াবহ ভূমিধ্বস (Brazil Floods)। বিপর্যস্ত গোটা ব্রাজিল (Brazil)। ক্রমশ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সেদেশের পেট্রোপলিস শহরের (Petropolis City) রাস্তা কার্যত পরিণত হয়েছে নদীতে। কাদাস্রোতে (Flash Flood) বহু ঘরবাড়ি (House) ঢেকে গিয়েছে। ভেসেও গিয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা (Rescue Workers) ব্রাজিলের শহর পেট্রোপলিসে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ধ্বংসাবশেষ থেকে আরও মৃতদেহ (Dead body) উদ্ধার করেছেন। উদ্ধার হয়েছে ২৬ জন শিশু (Child) সহ ১৪৬ জনের মৃতদেহ। ঘন কুয়াশার মধ্যে, শ্রমিকরা কোদাল এবং বেলচা দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। এই নিয়ে উদ্ধারকাজ পঞ্চম দিনে পড়ল।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের চিত্রসাংবাদিক আল্টো দা সেরার তোলা ছবি গোটা দেশের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছে। ব্রাজিল প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ বলছে, টানা মুষলধারে বৃষ্টি থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের খুঁজে পাওয়ার এই মুহূর্তে খুব একটা আশা নেই। প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানাচ্ছেন যে ২৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। রিও ডি জেনিরো রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত ২১৮ জন নিখোঁজ রয়েছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া ১৪৬টি মৃতদেহের মধ্যে ৯১ জনের পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। নিখোঁজদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয় দেহ থাকতে পারে। রাষ্ট্রপতি জাইর বলসোনারো, যিনি শুক্রবার হেলিকপ্টারে করে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের উপর দিয়ে সমীক্ষা করেন, তিনি জানান শহরটি যুদ্ধের দৃশ্যের মতো বিপর্যস্ত হয়ে রয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন মাসে, প্রধানত দক্ষিণ-পূর্ব রাজ্য সাও পাওলো এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বাহিয়া, সেইসঙ্গে পেট্রোপলিসে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে কমপক্ষে ১৯৮ জন মারা গিয়েছে। রিয়ো ডে জেনিরো-র গভর্নর ক্লদিয়ো কাস্ত্রো গত কাল জানিয়েছেন, পেট্রোপলিসে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কোথাও ল্যাম্পপোস্টে ঝুলছে গাড়ি, আবার কোথাও গাড়ি উল্টে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেমেছে দমকল ও সেনা। এখনও বহু জায়গায় কাদার স্তর রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, পেট্রোপলিস অঞ্চলে তিন ঘণ্টায় ২৫.৮ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা আগের ৩০ দিনের মোট বৃষ্টির প্রায় সমান। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গত তিন মাসে ব্রাজিলে এমন ঝড়বৃষ্টি হয়নি। উদ্ধারকর্মীরা খুঁজে দেখছেন কোথাও কেউ আটকে রয়েছেন কিনা। যেহেতু পরিস্থিতি এখনও প্রতিকূল, তাই মনে করা হচ্ছে হয়তো আরও বহু মানুষই অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে মৃত ও আহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা।