আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা। দায় স্বীকার করল ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা।
সোমবার, আবুধাবির (Abu Dhabi) দুই জায়গায় হল ড্রোন হামলা (Drona Attack)। এমনটাই সন্দেহ করছে সেখানকার পুলিশ। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (United Arab Emirates) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে শহরের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এক জায়গা আগুন লাগে। আরেকটি জায়গায় তিনটি তেলের ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণ ঘটে। তাদের সন্দেহ, দুটি জায়গাতেই সম্ভবত ড্রোনের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। অন্যদিকে, সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইরানের (Iran) সমর্থন পুষ্ট ইয়েমেনের (Yemen) হুথি বিদ্রোহীরা (Houthi Rebels), উপসাগরীয় দেশে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
আবুধাবি পুলিশ (Abu Dhabi Police) জানিয়েছে, আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (Abu Dhabi International Airport) এক অংশে আগুন লেগেছে। অবশ্য বিমানবন্দরের ওই অগ্নিকাণ্ড 'ছোটমাপের' বলেই দাবি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আবু ধাবির প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের কাজ চলছে। সেরকমই এক নির্মিয়মাণ সম্প্রসারিত এলাকায় এদিন আগুন লাগে। অন্যদিকে শহরের আরেক জায়গায় তিনটি জ্বালানী ট্রাকে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এই ঘটনাটি ঘটে অ্যাডনক (ADNOC)-এর একটি স্টোরেজের কাছে। অ্যাডনক হল আবুধাবির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল সংস্থা।
পুলিশের সন্দেহ দুটি ক্ষেত্রেই ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে। তাদের প্রাথমিক তদন্তে, দুই ঘটনাস্থল থেকেই, ছোট উড়ন্ত বস্তুর খণ্ড মিলেছে। পুলিশের দাবি সেগুলি সম্ভবত ড্রোন এবং সেগুলি ব্যবহার করেই সম্ভবত দুই জায়গাতেই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তারা এই বিষয়ে বিশদে কিছু জানাতে চায়নি। তবে, পুলিশকে উদ্ধৃত করে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ডব্লিউএএম (WAM) জানিয়েছে, দুটি ঘটনা থেকেই কারোর হতাহতের কোনও খবর নেই, কোনও উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতিও হয়নি।
এদিকে, রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে এই অতর্কিত হামলা চালানোর দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। প্রতিদেবনে বলা হয়েছে হুথি সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারেই (Yahia Sarei), এই হামলা চালানোর দাবি করেছেন এবং জানিয়েছেন, শীঘ্রই এই বিষয়ে তারা বিবৃতি প্রকাশ করবে। এর আগে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে কখনও ছোট মাপের ড্রোন ব্যবহার করে হামলা ঘটেনি।
২০১৫-র শুরু থেকেই ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে জড়িত রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ইউএই। এই জোট ইয়েমেনের রাজধানী দখল করে সেখানকার আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তারপর থেকেই ইরান-সমর্থিত হুথিদের সঙ্গে এই জোটের তীব্র লড়াই চলছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে ইয়েমেনে অবস্থিত হুথি বিদ্রোহীদের ঘাঁটিগুলিতে বিমান হামলা জোরদার করেছে আমিরশাহি। তার প্রেক্ষিতে আগেই প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল ইরান-সমর্থিত হুথিরা। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সরকার পরিচালিত হয় আবুধাবি থেকেই, সেই দেশের বৈদেশিক নীতিও পরিচালিত হয় এই শহর থেকেই। সেই কারণেই আবু ধাবিকে নিশানা করা হল বলে মনে করা হচ্ছে।