একটা সময় জন্ম নিয়ন্ত্রণের পথে হেঁটে এক সন্তাননীত কায়েম করেছিল চিন। কিন্তু এবার এই মহামারিকালেই সম্পূর্ণ উলোটপুরণ হতে পারে শি জিংপিংএর দেশে। করোনা ধ্বস্ত বিশ্বে দেশের জনসংখ্যা বাড়াতে দম্পতিদের উৎসহভাতা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ। আর টাকার পরিমাণও নিতান্তই কম নয়- এক মিলিয়ন ইয়ান, ভারতীয় অঙ্কে প্রায় ১ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে চিনের আদমশুমারির রিপোর্ট। তাতে দেখা যাচ্ছে গত কয়েক দশক ধরে চিনের জনসংখ্যা যে ধীর গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছিল তা অব্যাহত হয়েছে। চলতি আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী চিনের জনসংখ্যা বেড়েছে মাত্র ৭২ মিলিয়ন বা ৭ কোটি ২ লক্ষের কাছাকাছি। আর সেই কারণেই চিনে বৃদ্ধ ও তরুণদের অনুপাতের সংখ্যার ফারাক ক্রমশই বাড়ছে। জনসংখ্যা ধীর গতিতে বাড়ার কারণে মানব সম্পদের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
আগে থেকে এজাতীয় আশঙ্কা করে বেজিং ২০১৬ সাল থেকেই এক সন্তান নীতি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। কিন্তু তাতেও তেমন কোনও লাভ হয়নি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সেই কারণেই উৎসহভাতা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বেজিং-এর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিয়াঞ্জং জনসংখ্যার হার বাড়াতে উৎসাহ ভাতা বা অর্থ প্রদানের কথা বলেছেন। বিশেষজ্ঞর মতে এই ক্ষেত্রে চিনের জিডিপির মাত্র ১০ শতাংশই খরচ হবে। তাতে জনসংখ্যার হার ১.৩ শতাংশ বাড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি আরও বলেছেন প্রতিটি সন্তানের জন্য নদগে অর্থ, আবাসন ভর্তুকি বা কর ছাড়ও দেওয়া যেতে পারে। চিনা তরুণ তরুণীরা এই প্রকল্পের আওতায় থেকে সন্তানের জন্ম দিতে উৎসাহিত হবেন বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
লিয়াং আরও জানিয়েছেন সরকারের এই বিষয়টি ভেবে দেখা জরুরি। কারণ এই প্রকল্প কার্যকর হলে মানব সম্পদ বাড়বে। যার অবদান থাকবে দেশের অর্থনীতিতে। তিনি আরও বলেন যদি কোনও পরিবার একাধিক সন্তানের জন্ম দেয় তাহলে সেক্ষেত্রে সেই শিশুটির অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার পরিকল্পানও করতে হবে সরকারকে। চিন সরকার জনসংখ্যা নীতিতে জরুরি পরিবর্তন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন লিয়াং। প্রসুতি ভর্তুকিসহ একাধিক ভাতা দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। দম্পতিতে উৎসহভাতা হিসেবে আবাসন দেওয়ার পরিকল্পনাও দিয়েছেন চিন সরকারকে। জমির দামে ছাড়সহ আবাসনের অর্ধেক দাম সন্তানসম্ভা দম্পতিকে দেওয়া যেতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।