ধরা পড়ল মাইক্রোসফটের বিশাল কর ফাঁকি, গ্লোবাল কর্পোরেট কর-ই কি সমাধান


আগামী সপ্তাহেই জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন

তার আগে মাইক্রোসফটের বিশাল কর ফাঁকি

জো বাইডেন তুলেছেন গ্লোবাল কর্পোরেট করের প্রস্তাব

সেটাই কী বহুজাতিক সংস্থাগুলির কর ফাঁকি রুখতে পারবে

amartya lahiri | Published : Jun 5, 2021 2:47 PM IST

আগামী সপ্তাহেই জি-৭'এর শীর্ষ সম্মেলন। তার আগে, মহামারি-ক্লান্ত বিশ্বে সাড়া পেলে গিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি প্রস্তাব - বহুজাতিক সংস্থাগুলির জন্য ১৫ শতাংশ গ্লোবাল কর্পোরেট কর চালু করা। অর্থাৎ, যে দেশেই বহুজাতিক সংস্থাগুলি ব্যবসা করুক না কেন, সেই দেশের সরকারকে লভ্যাংশের ১৫ শতাংশ তারা কর্পোরেট কর হিসাবে দিতে বাধ্য থাকবে। কেন প্রয়োজন এই নতুন কর ব্যবস্থার? কারণ, কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করা, অতি পরিচিত বড় বড় কর্পোরেট সংস্থাগুলিও নির্লজ্জের মতো, আইনের ফাঁক দিয়ে কর ফাঁকি দিয়ে থাকে। যেমন মাইক্রোসফট কর্পোরেশন।

শুনতে অবাক লাগলেও মাইক্রোসফট-এর মতো পরিচিত সংস্থাও এই ধরণের অনৈতিক কাজ একেবারে দিনের আলোয় করে থাকে। কীরকম? 'মাইক্রোসফ্ট রাউন্ড আইল্যান্ড ওয়ান' নামে তাদের একটি আইরিশ সহায়ক সংস্থা গত বছর ৩১৫ বিলিয়ন ডলার লাভ করেছে। যা আয়ারল্যান্ডের মোট দেশীয় উৎপাদন বা জিডিপির প্রায় তিন-চতুর্থাংশের সমান। তা সত্ত্বেও তারা এক পয়সা কর্পোরেট কর ঠেকায়নি। কেন? তাদের যুক্তি হল, সংস্থাটি বারমুডার, যেখানে কোনও কর্পোরেট কর নেোয়া হয় না।  তাই তাদের আয়ের উপর কোনও আইরিশ কর প্রযোজ্য নয়।

এবার দেখা যাক সংস্থাটি ঠিক কী ধরণের। আইরিশ সরকারের কাছে যে নথি রয়েছে, তাতে মাইক্রোসফ্ট রাউন্ড আইল্যান্ড ওয়ান জানিয়েছে, তারা বিশ্বব্যাপী কপিরাইটযুক্ত মাইক্রোসফ্ট সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স ফি আদায় করে থাকে। যদিও আয়ারল্যান্ডে সংস্থাটির কোনও কর্মচারী নেই, শুধু ডিরেক্টররা আছেন। সংস্থার নিবন্ধিত ঠিকানাটি বস্তুত ডাবলিনের একটি আইন সংস্থা, 'ম্যাথসন'এর একটি কার্যালয়। গত আর্থিক বর্ষেই সংস্থাটির লাভ ছিল মাত্র ১০ বিলিয়ন ডলার। আর এই বছর সেখান থেকে লাভ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, সেই কথা আগেই বলা হয়েছে। সেই ৩১৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে মাইক্রোসফ্ট কর্পোরেশনকে  সংস্থাটি ২৪.৫ বিলিয়ন ডলার লভ্যাংশ দিয়েছে। পরে আবার ৩০.৫ বিলিয়ন ডলার বিশেষ লভ্যাংশ হিসাবে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনার জন্য, মাইক্রোসফট কর্পোরেশনই বেনামে ওই সংস্থা খুলেছে।

জি-৭  শীর্ষ বৈঠকের আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সকল বহুজাতিক সংস্থার মুনাফায় বিশ্বব্যাপী সর্বনিম্ন ১৫% কর্পোরেট করের প্রবর্তন করার প্রস্তাব দিয়েছে। এরপরই আয়ারল্যান্ডে মাইক্রোসফট সংস্থার নক্কারজনক কর ফাঁকির বিষয়টি সামনে এসেছে। জো বইডেনের প্রস্তাব শেষ অবধি গৃহীত হবে কি না, সেটা সময় বলবে। তবে এই অনৈতিক এবং বেআইনী কর ফাঁকির মহামারি মোকাবেলায় একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা যে আশু প্রয়োজন, তা মোটামুটি জি-৭ দেশের সকল অর্থমন্ত্রীই মনে করছেন।

 

 

 

Share this article
click me!