সতীত্ব পরীক্ষায় পাশ করে তবেই যোগ সেনাবাহিনীতে, মহিলা জওয়ানদের জন্য বিতর্কিত নিয়ম বাতিল

-টু ফিঙ্গার ভার্জিনিটি পরীক্ষায় পাশ করার পরেই সেই মহিলাকে জওয়ান পদ দেওয়া হত। সতীত্বের পরীক্ষা আর দিতে হবে না মহিলা জওয়ানদের, জানিয়ে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া।

Parna Sengupta | Published : Aug 11, 2021 1:10 PM IST / Updated: Aug 12 2021, 02:34 PM IST

গত পাঁচ দশক ধরে চলে আসা বিতর্কিত প্রথা তুলে দিল ইন্দোনেশিয়া। ইন্দোনেশিয়া সেনায় (Indonesian Army) মহিলাদের জওয়ান (female cadets) হিসেবে যোগ দিতে গেলে একটি বিতর্কিত নিয়মের গন্ডি পেরিয়ে আসতে হত। প্রত্যেক মহিলা জওয়ানকে কুমারীত্ব পরীক্ষা দিতে হত। হত টু ফিঙ্গার ভার্জিনিটি টেস্ট (two-finger test)। এই পরীক্ষায় পাশ করার পরেই সেই মহিলাকে জওয়ান পদ দেওয়া হত। সতীত্বের পরীক্ষা আর দিতে হবে না মহিলা জওয়ানদের, জানিয়ে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। 

সেদেশের সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সমাজকর্মীরা। উল্লেখ্য, ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নামে পরিচিত এই পরীক্ষা শুধু মহিলাদের মানসিক ভাবেই বিপর্যস্ত করে তুলত তা-ই নয়, অত্যন্ত অবৈজ্ঞানিক এই পদ্ধতিতে মহিলাদের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হত। অথচ পুলিশ কিংবা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে গেলে পুরুষদের এমন কোনও প্রমাণ দিতে হত না। পুরুষ বা মহিলা চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখতেন মহিলাদের হাইমেন পর্দা সুরক্ষিত রয়েছে কিনা, যদি তা অক্ষত না হত, তবে ধরে নেওয়া হত ওই মহিলা কারোর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করেছেন। 

অথচ চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে, এই হাইমেন পর্দা যেকোনও সময়ে অন্য যে কোনও কারণেই ছিঁড়ে যেতে পারে বা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। ১৯৬৫ সাল থেকে এই বিতর্কিত প্রথা চলে আসছিল ইন্দোনেশিয়ায়, যার অবসান হল ২০২১ সালে। দেশের ভিতরে ও বাইরে একাধিকবার এই প্রথা নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন ইন্দোনেশিয়ার মহিলারা। তবে লাভ হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই পরীক্ষার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কারণ হিসেবে জানিয়েছিল একজন মহিলা যৌন সম্পর্ক করেছেন কীনা, তা হাইমেন পরীক্ষার মাধ্যমে জানা সম্ভব নয়। 

১৯৯৯ সালে ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার কমিশন এই নিয়মকে বেআইনি ঘোষণা করে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন এই পরীক্ষায় নিষেধাজ্ঞা দাবি করে। কিন্তু এত কিছুর পরও চুপ ছিল ইন্দোনেশিয়া প্রশাসন। এমনকী ২০১৭ সাল থেকে ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসনের ওপরে চাপ বাড়তে শুরু করে। এই ধরণের অবৈজ্ঞানিক প্রথা তুলে দেওয়ার জন্য। চাপ দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর পরীক্ষাতে পুরুষ মহিলার মধ্যে কোনও বৈষম্য না করতে। অবশেষে সেই স্বপ্ন সফল আন্দোলনকারীদের। 

Share this article
click me!