জন্মের সময় সিঙ্গাপুরের শিশুটির ওজন ছিল একটা আপেলের মতো। ১৩ মাস পর বাড়ি গেল বিশ্বের ক্ষুদ্রতম শিশু।
গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের জুন মাসে জন্ম নিয়েছিল, শিশুটি। সেই সময় তার ওজন ছিল একটা বড় মাপের আপেলের মতো, মাত্র ২১২ গ্রাম। উচ্চতা ছিল মাত্র ২৪ সেন্টিমিটার। নির্ধারিত সময়ের ২৫ সপ্তাহ আগে জন্মেছিল সে! এখনও অবধি বিশ্বের ইতিহাসে তাকেই ক্ষুদ্রতম শিশু বলে মনে করা হয়। সুখবর হল, সম্প্রতি সেই কাওয়েক ইউ শুয়ান'কে সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জন্মের ১৩ মাস পর বাবা-মায়ের সঙ্গে বাড়ি গিয়েছে সে।
প্রসবের পর শুয়ানকে নবজাতকদের জন্য নির্ধারিত আইসিইউ বিভাগে নিয়ে গিয়েছিলেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের নার্স ঝাং সুহে। পরে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, নার্স হিসাবে তিনি ২২ বছর ধরে কাজ করছেন। তিনি এত ছোট নবজাতক এর আগে কখনও দেখেননি। সুহে জানিয়েছিলেন, তিনি শুয়ানকে দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। এতটাই যে, শিশু বিভাগের এক প্রফেসরের সঙ্গে এই নিয়ে তিনি কথাও বলেন।
গত ১৩ মাস ধরে নিবিড় চিকিত্সার মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তোলা হয়েছে। বর্তমানে সে স্বাস্থ্যকর চেহারা পেয়েছে, ওজন বেড়ে হয়েছে ৬.৩ কেজি। যেরকম ক্ষুদ্রতম শরীর নিয়ে সে জন্ম নিয়েছিল, যে তার বেচে থাকাটাই বিস্ময়ের বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। তারা বলেছেন, অকাল জন্ম, বিশেষ করে শুয়ানের মতো অত আগে প্রসব হলে তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। সেই দিক থেকে শুয়ানকে সুস্থ করে তোলা এক বিশাল কৃতিত্বের বিষয় বলে মনে করা হচ্ছে।
হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়ার পর, শুয়ানের চিকিৎসকরা বলেছেন, অপারেশনের সময় তারা আশা করেছিলেন শিশুটির ওজন কমপক্ষে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, তার ওজন মাত্র ২১২ গ্রাম। তার চিকিৎসা করা ছিল আরও বড় চ্যালেঞ্জের। ত্বক এতটাই নরম ছিল যে ইনজেকশন বা অন্য কোনও চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রবেশ করানো যায়নি। শরীরের ক্ষুদ্রাকৃতির জন্য তার শ্বাসনালিগুলির আকারও খুব ছোট ছিল। এমনকী তার আকারের ডায়পারও পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিক আকারের ডায়পার কেটে ব্যবহার করতেন নার্সরা। ওষুধ দেওয়ার সময় তার অত্যন্ত কম ওজনের কারণে ওষুধের ডোজ দশমিকের পরিমাণে কমিয়ে আনতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন - Afghanistan - বিশেষ বিমানে দেশ ছাড়ছেন ভারতীয়দের, শহর ঘিরে তীব্র হামলা চালাল তালিবান
আরও পড়ুন - গলায় ক্যারাটের বেল্ট পেঁচিয়ে মা'কে হত্যা করল কিশোরী, চাঞ্চল্যকর ঘটনায় উঠছে গুরুতর প্রশ্ন
আরও পড়ুন - জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক, কতটাই বা কার্যকর এই ভ্য়াকসিন - জেনে নিন
সম্প্রতি, সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল, তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ই সাফল্যের কাহিনি শেয়ার করেছে। ছোট্ট শুয়ানের সাহসেরও প্রশংসা করা হয়েছে। সব প্রতিকূলতাকে পরাজিত করে সে সমৃদ্ধ হবে, এমনই শুভকামনা করছে ছোট্ট শুয়ান। তার বাবা-মাকে ডাক্তাররা তার ওষুধ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বাড়ি যাওয়ার পরও শুয়ানকে সেইসব মেনেই চলতে হবে।