কয়েক মাস আগেও তার পরিচয় ছিল চিনের হাতের পুতুল হিসাবে
কিন্তু, এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে অনেকটাই
রবিবার দল থেকেই বহিষ্কার করা হল নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে
চিনের কথায় ওঠা বসা বন্ধ করারই কী ফল পেলেন কেপি শর্মা ওলি
সরকার ভেঙে দিয়ে গোটা দলের ক্ষমতাই নিজের হাতে কুক্ষিগত করতে চেয়েছিলেন। শেষে তাঁকেই সরে যেতে হল দলের সমস্ত পদ থেকে। রবিবার নেপালের ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে দলের স্প্লিন্টার গ্রুপের এক কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে, সেই দেশের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে নেপালে ওলি-যুগের অবসান ঘটল বলা চলে।
রবিবার নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির স্প্লিন্টার গ্রুপের সেন্ট্রাল কমিটির বৈঠকের পরই ওলিকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন, স্প্লিন্টার গ্রুপের মুখপাত্র, নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠ। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় কমিটি কেপি শর্মা অলিকে দল থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওলি এখন আর এমনকী, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সদস্যও নন। কেন্দ্রীয় কমিটি স্প্লিন্টার গ্রুপ-কে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কার্যনির্বাহী অধিকার দিয়েছিল। সেই অধিকার বলেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে তারা।
তবে তারপরও নেপালের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসাবেই রয়ে গিয়েছেন কেপি শর্মা ওলি। কারণ, নেপালের নির্বাচন কমিশন এখনও শাসক দলের এই সিদ্ধান্তকে মান্যতা দেয়নি। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, কেপি ওলি গোষ্ঠী এবং পুষ্প কমল দহল-এর গোষ্ঠী - কোনও পক্ষের সিদ্ধান্তই দলীয় আইন অনুসারে নেওয়া হয়নি। তাই কমিশন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির সাম্প্রতিক পরিবর্তন আপডেট করতে পারছে না। উভয়পক্ষকেই কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কমিশন নেপাল কমিউনস্ট পার্টির আগের অবস্থানই ধরে রাখবে। অর্থাৎ, কমিশনের চোখে এখনও সংসদে নেপাল কমউনিস্ট পার্টির নেতা ওলিই।
শি জিনপিং-একর সঙ্গে পুষ্প কুমার দহল ওরফে প্রচন্ড
প্রসঙ্গত, কেপি শর্মা ওলি পরিচিত ছিলেন কাঠমাণ্ডুতে বেজিং-এর দূত হিসাবে। তাদের অঙ্গুলি হেলনেই, ওলি একের পর এক ভারত বিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলেন এবং দীর্ঘদিনের ভারত-নেপাল সুসম্পর্কের ক্রমে অবনতি ঘটেছে। কিন্তু, গত কয়েক মাসে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে। প্রথম থেকেই ওলির ভারত বিরোধী নীতির বিরোধী ছিলেন, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিতে তাঁর বিরোধী পুষ্প কুমার দহল ওরফে প্রচন্ড। গত ডিসেম্বর মাসে এই বিরোধ চরমে উঠেছিল।
চিন থেকে দুই পক্ষের বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, ওলি এখন তাদের হাতের বাইরে চলে গিয়েছেন। এটা বুঝেই ওলির পাশ থেকে সরে আসে চিন। আর তাতেই তাঁর দল থেকে বহিষ্কারের পথ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওলি এখন নেপালের প্রধান বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন বলে জানা যাচ্ছে। তবে নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতা এখন যার হাতে, সেই প্রচন্ড কিন্তু, চিনের হাতের পুতুল হওয়ার বান্দা নন। আর ভারতের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।