জঙ্গি হামলায় দেশের শীর্ষস্থানীয় পরমাণু বিজ্ঞানী মহসেন ফকরিজাদেহ-র মৃত্যু নিয়ে আরও একবার তিক্ততা তৈরি হল ইরান আর ইজরায়েলের মধ্যে। ইরানের বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রের দাবি হামলার নেপথ্যে ছিল ইজরায়েল। প্রতিবেশী দেশটির দ্বারা পরিচালিত রিমোটকন্ট্রোল অস্ত্রের সাহায্যে হত্যা করা বয়েছে মোহসেনকে। ইরানের দাবি উপগ্রহের মাধ্যমে হামলায় ব্যবৃত মেশিনগান পরিচালনা করা হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক এক শীর্ষ স্থানীয় কর্তা প্রেস টিভিকে জনিয়েছেন যে এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছিল সেখান থেকে যেসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল সেগুলি সবই ইজরায়েলের তৈরি। প্রায় প্রতিটি অস্ত্র থেকেই ইজরায়েলের সামরিক কারখানার লোগো রয়েছে। অন্যদিকে আল আলম টিভি জানিয়েছে মোহসেন হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রগুলি উপগ্রহের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত।
শুক্রবার রাতে ইরানের রাজধানী তেহরানের অদূরে আবসার্দ শহরের কাছে মহসেনের গাড়ির ওপর হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসবাদী। গুলি করা হয় তাঁর। পাল্টা গুলি চালায় মহসেনের নিরাপত্তা কর্মীরা। তাতে তিন থেকে চার জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মহসেনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। ইরানের গোপন পরমাণু কর্মসূচির মাস্টারমাইন্ড ছিলেন মহসেন। তাঁকে ইরানের বোমার জনক হিসেবেও চিহ্নিত করেছিল আন্তর্জাতিক মহল। মহসেনের মৃত্যুর পরেই ইজরায়েল ও আমেরিকার জোটকে এক হাতে নিয়েছে ইরান। বলা হয়েছে ইরানের শত্রুরা মহসেনকে ঘৃণা ও ইর্ষা করতে। তাঁকে থামানো যাচ্ছে না দেখেই এই হামলা চালান হয়। আর এই হামলার পেছনে মার্কিন ষড়যন্ত্রের কোলা ছায়া রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। কারণ গত সপ্তাহেই বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেয় এই ইজরায়েল সফর করেছিলেন। ইরানের কথায় নিছক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ছিল না সেই সফর। ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সর্বতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করে ইরাক।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিই বলেছেন মহসেনের অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে বলেও তিনি অঙ্গীকার করেছেন।তিনি মহসেনকে গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ও প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানী বলে অভিহিত করেছেন। পাল্টা জঙ্গিদের ভাড়াটে গুন্ডার সঙ্গে তুলনা করে তীব্র সমালোচনা করেছেন। ইরানের পাশে দাঁড়িয়ে তুরস্কও এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে।