প্রধানমন্ত্রী মোদী জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অস্ট্রেলিয়ার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয় ব্যক্তিগত কোয়াড সামিটে যোগ দিতে রবিবার সন্ধ্যায় জাপানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। এই শীর্ষ সম্মেলনে চারটি দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনা চলবে। চতুর্পাক্ষিক নিরাপত্তা কথোপকথনে কোয়াড সম্মেলনে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক সিকিওরিটি ডায়ালগ জায়গা করে নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তার দুই দিনের সফরে, প্রধানমন্ত্রী মোদী জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অস্ট্রেলিয়ার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। রবিবার সন্ধ্যায় একটি টুইট বার্তায়, প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “আজ সন্ধ্যায়, আমি দ্বিতীয় ব্যক্তিগত কোয়াড সামিটে অংশ নিতে জাপানের উদ্দেশ্যে রওনা হব। কোয়াড নেতারা আবারও বিভিন্ন কোয়াড উদ্যোগ এবং পারস্পরিক স্বার্থের অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাবেন।”
মোদী আরও বলেন “মাত্র দুমাস আগে, মার্চ মাসে, আমি ভারতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদাকে আমন্ত্রণ জানানোর সম্মান পেয়েছিলাম। আমি নিশ্চিত এই সফর ভারত-জাপান বিশেষ কৌশলগত এবং বৈশ্বিক অংশীদারিত্বকে বাড়িয়ে তুলবে। আমি সেখানে জাপানি ব্যবসায়ী নেতা এবং ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা করব।”
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফরকে "বিশ্বের ভালোর জন্য কোয়াড শক্তিকে আরও এগিয়ে নেওয়া" হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
কোয়াড সামিট
কোয়াড সামিট, প্রধানমন্ত্রী মোদির জাপান সফরের প্রধান অনুষ্ঠান, সদস্য দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করবে। চার সদস্য দেশের নেতারা বিভিন্ন কোয়াড উদ্যোগের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবেন।
সফরের আগে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন
"আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের উন্নয়ন এবং পারস্পরিক স্বার্থের বৈশ্বিক বিষয়গুলি সম্পর্কেও মতামত বিনিময় করব,"।
কোয়াড সামিটে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা বিষয়গুলো উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তি ও স্থিতিশীলতার দিকে নজর রয়েছে প্রতিটি কোয়াড সদস্য দেশের। এর মধ্যে অন্যতম হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেনের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রশাসন তাইওয়ানকে চিনের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
জাপানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় কুমার ভার্মা বলেছেন, “কোয়াডের একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক এজেন্ডা রয়েছে তাই আমরা এর জন্য কোনো দেশ বা অঞ্চলকে লক্ষ্য করি না। আমরা যা চাইছি তা হল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা মেনে চলা উচিত প্রত্যেকের।” তিনি আরও বলেন “আমরা দেখতে চাই যে আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ যাতে করা হয় এবং কোনো দেশই জবরদস্তি অর্থনৈতিক নীতির পথ না নেয়। সুতরাং এগুলি সবই আলোচনা সাপেক্ষ তবে কোয়াড বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হল শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল তৈরি করা।”
তার জাপান সফরের প্রথম দিনে, প্রধানমন্ত্রী মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক (আইপিইএফ) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তাইওয়ান লঞ্চে অংশ নেবেন না।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফরসূচি
২৩শে মে
সকাল ৭.৫০ (ভারতীয় সময় ভোর ৪.২০) টোকিওতে আগমন
সকাল সাড়ে আটটায় ভারতীয় প্রবাসীদের স্বাগত
দুপুর ২টোর পর NEC কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান নোবুহিরো এন্ডো, UNIQLO সিইও তাদাশি ইয়ানাই, সুজুকি মোটর কর্পোরেশনের উপদেষ্টা ওসামু সুজুকি এবং সফটব্যাঙ্ক গ্রুপ কর্পোরেশনের বোর্ডের পরিচালক মাসায়োশি সন সহ ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে বৈঠক।
বিকেল সাড়ে চারটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাত ধরে ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক (IPEF) চালু
বিকেল সাড়ে পাঁচটা - জাপানি ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে গোলটেবিল বৈঠক
সন্ধে সাড়ে সাতটায় ভারতীয় সম্প্রদায়ের সাথে আলোচনা
২৪শে মে
সকাল ১০.১৮ মিনিটে কোয়াড নেতাদের গ্রুপ ছবি
সকাল ১০.২৫ মিনিটে কোয়াড সামিট
বেলা সাড়ে বারোটা - কোয়াড ফেলোশিপের সূচনা
দুপুর পৌনে একটা - জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা আয়োজিত কোয়াড লাঞ্চ
দুপুর ২.৩০ মিনিটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক
বিকাল ৪টায় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক
সন্ধ্যা ৬.১০ মিনিটে জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদালাইভ টিভির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক