সামরিক অভিযানের মাঝেই মস্কো এবং কিভের মধ্যে বেলরুশে প্রথমবার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু বৈঠকে মেলেনি কোনও রফাসূত্র। তবে দুই পক্ষই ফের দ্বিতীয়বার বৈঠকে বসার আগ্রহ দেখিয়েছে, এদিকে আলোচনা চলাকালীনই রাশিয়ার হামলায় মৃত ১১।
সামরিক অভিযানের মাঝেই মস্কো এবং কিভের মধ্যে বেলরুশে প্রথমবার বৈঠক হয়েছে ( Russia Ukrain meeting)। কিন্তু বৈঠকে মেলেনি কোনও রফাসূত্র। তবে দুই পক্ষই ফের দ্বিতীয়বার বৈঠকে বসার আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই অন্ধকারের মাঝেই কিছু আশার আলো দেখা গিয়েছে। এদিকে এরই মধ্যে খবর পাওয়া গিয়েছে, ইউক্রেনের খারকিভে রাশিয়া বাহিনীর রকেট হামলায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জন সাধারণ নাগরিকের। এই নিয়ে রাশিয়ার হামলায় একশোরও উপরে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার রাশিয়ার হামলার পঞ্চমদিনে বেলারুশের গোমেল শহরে মুখোমুখি আলোচনায় বসে দুই দেশ ইউক্রেন এবং রাশিয়া। আলোচনা চালাকালীনই খবর পাওয়া যায়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দেশকে ইউরোপিও ইউনিয়নের সদস্য করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। ক্রেমলিনের পাঠানো প্রতিনিধি দলের প্রধান ভ্লামিদির মেদনস্কি গোমেলের বৈঠক শেষে বলেছেন, আমরা আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে সম্মত হয়েছি। সূত্র মারফত খবর, পরবর্তী বৈঠক হতে পারে, পোল্যান্ড- বেলারুশ সীমান্তের কোনও শহরে। বৈঠকে নিঃশর্তে ইউক্রেনের মাটি থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে কিভের প্রতিনিধি।
তবে কবে সেই দ্বিতীয় দফার বৈঠক বসবে, তা এখনও স্থির হয়নি। দুই দেশের প্রতিনিধিরাই মস্কো এবং কিভে ফিরে তা স্থির করবেন। যদিও আলোচনা শুরু হলেও হিংসা মোটেই থামেনি। ইতিমধ্য়েই খবর পাওয়া গিয়েছে, ইউক্রেনের খারকিভে রাশিয়া বাহিনীর রকেট হামলায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জন সাধারণ নাগরিকের। এই নিয়ে রাশিয়ার হামলায় একশোরও উপরে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, রাশিয়ার এই যুদ্ধ ঘোষণার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'সারা বিশ্বের পার্থনা ইউক্রেনের জনগণের সঙ্গে থাকবে। তিনি আরও বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি পূর্ব পরিকল্পিত যুদ্ধ বেছে নিয়েছেন। যা বিপর্যয়, প্রাণহানি এবং মানুষের দুর্ভোগ বয়ে আনা ছাড়া আর কিছু করবে না ',বলে স্পষ্ট করেছেন বাইডেন। তিনি আরও বলেন, এই হামলা যে, ধ্বংস এবং মৃত্যু ডেকে আনবে, তার জন্য শুধুমাত্র রাশিয়া একাই দায়ী থাকবে।' ভারতীয় সময় সকাল ৮ নাগাদ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর কথা ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ।
২০১৪ সালে যখন প্রথমবার রাশিয়া প্রথমবার ইউক্রেনে প্রবেশ করে, তখন প্রেসিডেন্ট পুতিন সমর্থিত বিদ্রোহীরা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বেশ বড় একটি এলাকার নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয়। এরপরেই ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে আসছে। যুদ্ধবন্ধে একটি আন্তর্জাতিক মিনস্ক শান্তি চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু তাতে লড়াই থামেনি। আর এই কারণেই রাশিয়ার নেতা বলেছেন, ওই অঞ্চলে তিনি তথাকথিত শান্তিরক্ষী পাঠাচ্ছেন। এবার প্রশ্নটা হচ্ছে ইউক্রেন নিয়ে পুতিনের প্রধান সমস্যাটা কোথায় রয়েছে। ইউক্রেন যে নেটো এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগ দিতে চায়, অনেকদিন ধরেই সেই বিষয়েই আপত্তি জানিয়ে আসছে রাশিয়া।
এখন পুতিন দাবি করেছেন, ইউক্রেন পশ্চিমের দেশগুলির হাতের পুতুল। কখনই প্রকৃত রাষ্ট্র ছিল না। তার মূল দাবী হল পশ্চিমের দেশগুলিকে নিশ্চয়তা দিতে হবে, ইউক্রেন নেটোতে যোগ দেবে না। উল্লেখ্য নেটো হচ্ছে পশ্চিমের দেশগুলির একটি সামরিক জোট। যেখানে ৩০ টি দেশ রয়েছে। তবে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি দেশ হিসেবে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের গভীর সামাজিক এবং সাংষ্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। সেখানে রুশ ভাষাও ব্যপকভাবেই প্রচলিত ছিল। তবে ২০১৪ সালে রাশিয়ার আক্রমণের পরে সেই সম্পর্কটা অনেকটাই ফিকে হয়ে এসেছে। যখন ২০১৪ সালে রাশিয়াপন্ত্রী ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, সেই সময়ে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। সেই লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত ১৪ হাজার সৈন্যের মৃত্যু হয়েছে।