ভারতবর্ষই শিখদের দেশ। কোনও শিখ চায় না নতুন করে মাতৃভূমির ভাগ। এমনই বার্তা দিয়ে এবার কানাডায় অভিনব মিছিল করল প্রবাসী ভারতীয় শিখরা। প্রায় কিলোমিটার ব্যাপি এই গাড়ির মিছিল আন্তর্জাতিক দুনিয়ার নজরে এসেছে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে উঠেছে এই ভিডিও। ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে, সারি সারি গাড়িতে ভারতের জাতীয় পতাকা লাগানো। গাড়ি বোনেট থেকে গাড়ির ছাদ সবখানেই মুড়ে দেওয়া হয়েছে ভারতের জাতীয় পতাকায়। যিনি ভিডিও করছেন তাঁকে দেখা গিয়েছে মিছিলে অংশ নেওয়া গাড়ির আরোহীদের প্রশ্ন করতে। এই অভিনব মিছিলে অংশ নেওয়া সকলেই জানিয়েছেন, মাতৃভূমির জন্য তারা এই মিছিল করছেন এবং সেই সঙ্গে বার্তা দিচ্ছেন ভারত শিখদেরও জন্মভূমি। এর নতুন করে ভাগ-বাটোয়ারা তাঁরা চান না। গুঞ্জন কওর নামে একজন এই ভিডিও আবার টুইটও করেন।
কৃষক বিক্ষোভের সমর্থনে সম্প্রতি টুইটারে ভারত সরকারের সমালোচনা করেন পপ সিঙ্গার রিহানা এবং পরিবেশ আন্দোলনকারী বছর সতেরোর গ্রেটা থুনবার্গ। এমনকী গ্রেটা একটি টুল কিটও শেয়ার করেন। যেখানে কৃষি বিক্ষোভের সমর্থনে ছবি, ভিডিও এবং মন্তব্য সংগ্রহের আহ্বান জানানো হয়েছিল। এই নিয়ে রিহানা ও গ্রেটার বিরোধিতা করে তামাম ভারতবাসী। রিহানা ও গ্রেটারা অথযা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাচ্ছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। বিতর্ক আরও চাগাড় দেয় যখন দেখা যায় রিহানা ও গ্রেটাদের সমর্থনে খালিস্তানি আন্দোলনের সমর্থনকারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে থাকেন। এই সব পোস্টে ভারত সরকারের কড়া সমালোচনার সঙ্গে সঙ্গে খালিস্তানি আন্দোলনের পক্ষে সওয়াল করা হয়। রিহানা ও গ্রেটাদের বিরোধিতায় টুইটারে সোচ্চার হন ভারতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। যার মধ্যে রয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, লতা মঙ্গেশকর, অনিল কুম্বলেদের মতো অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এর মধ্যে অভিযোগ ওঠে, খালিস্তানি আন্দোলনের এক নেতার কাছ থেকে রিহানা নাকি ১৮ কোটি টাকা নিয়েছেন টুইটারে ভারত সরকারের সমালোচনা করতে। ইতিমধ্যেই এই অভিযোগকে ঘিরে তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ। এহেন এক পরিস্থিতিতে বিতর্কের পরিবেশকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে টুইটারে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও। এই ভাইরাল হওয়া ভিডিও-তে খালিস্তান আন্দোলনের পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে একদল শিখকে। ভিডিও-র অডিও-তে শোনা যাচ্ছে যে ইমরান খানের নামে জয়ধ্বনি দেওয়া হচ্ছে। এমনকী, কাশ্মীরকে পাকিস্তানকে এবং পঞ্জাবকে খালিস্তানের অংশ বলেও দাবি করা হচ্ছে। এই ভিডিও-টি পাকিস্তানের একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করা হয়েছে। তবে, এই ভাইরাল ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। ভিডিওটি কবে তোলা হয়েছে সে বিষয়েও কোনও তথ্য মেলেনি। দিন কয়েক আগে এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে ভারতে বসবাসকারী শিখরা রাস্তায় বেরিয়ে খালিস্তানের পক্ষে সওয়াল করছেন। কিন্তু, ফ্যাক্ট চেক-এ দেখা যায় ভিডিও-র অডিওটি ফেক এবং ভিডিওটি বহু পুরনো।
ভারতে চলা কৃষক বিক্ষোভকে আন্তর্জাতিক ইস্যু করাটাকে চক্রান্ত বলেই মনে করছে অপামর ভারতবাসী। কানাডা থেকে আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেট দুনিয়ায়। যেখানে এক জন শিখকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে কৃষি বিল কোনওভাবেই কৃষকদের স্বার্থকে নষ্ট করছে না। আসল বিলটা কৃষকদের সামনে কৃষক নেতারা নিয়ে আসছে না বলেও অভিযোগ করেছেন ওই ব্যক্তি।
কৃষক বিক্ষোভকে ঘিরে যে ভাবে এখন আন্তর্জাতিক স্তরে নাড়াঘাটা চলছে তাতে বিতর্ক যে আরও বাড়বে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু, যেভাবে এই সুযোগে ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে উসকানি ও ইন্ধন জোগানোর চেষ্টা চলছে তাতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবেই তার মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করছেন অনেকে। আর জন্য প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের অখণ্ডতা এবং ঐক্যের পক্ষে সমস্ত প্রবাসী ভারতীয় জনজাতীকে উদ্যোগী হতে হবে বলেও মনে করা হচ্ছে।