
কার্যত শ্মশানপুরী গোটা শ্রীলঙ্কা। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে শ্রীলঙ্কান সেনা। এদিকে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোটবায়া রাজাপাক্ষে বুধবার জানিয়েছেন চলতি সপ্তাহেই তিনি দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নেবেন। সেইসঙ্গে বেছে নেওয়া হবে নতুন মন্ত্রীসভাও। সাংবিধানিক সংস্কারের মধ্যে দিয়ে দেশকে নতুন দিশা দেখানো যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
বুধবার গভীর রাতে জাতির উদ্দেশ্যে একটি টেলিভিশন ভাষণে, রাষ্ট্রপতি গোটবায়া বলেছিলেন যে নতুন প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারকে নিয়োগের পরে সংবিধানের ১৯ তম সংশোধনীর বিষয়বস্তু কার্যকর করার জন্য একটি সাংবিধানিক সংশোধনী আনা হবে, যা সংসদের কাছে আরও ক্ষমতা ন্যস্ত করবে।
গোটবায়া আরও বলেন "আমি রাজাপাকসাদের কাউকে ছাড়াই একটি তরুণ মন্ত্রিসভা নিয়োগ করব,"। এদিন দ্বীপরাষ্ট্রের নৈরাজ্য সম্পর্কে উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক দলগুলির সাথে আলোচনা শুরু করেছিলেন৷ তার বক্তব্যের কয়েক মিনিট আগে, গোটবায়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের সাথে আলোচনা করেন। তিনি আরও বলেন, “নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে নতুন কর্মসূচী তৈরি করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।” শ্রীলঙ্কা গত দুদিন থেকে সরকারহীন।
এদিকে সোমবারই বড় ঘোষণা করে পদ থেকে সরে দাঁড়ান দেশের প্রধানমন্ত্রী। দেশের এই পরিস্থিতির নৈতিক দায় কাঁধে নিয়ে পদ থেকে সরে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাক্ষে। একথা সত্যি যে স্বাধীনতার পর থেকে এতবড় বিপর্যয় আগে দেখেনি দ্বীপরাষ্ট্র।
শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি এবং তাঁর ছোট ভাই গোটবায়া রাজাপাকসে একটি বিশেষ বৈঠকে তাকে দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হিসাবে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে অনুরোধ করেন। এর কয়েকদিন পরই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন মাহিন্দা। দ্বীপরাষ্ট্রটি অর্থনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের কথা ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। সেই পদক্ষেপে গতি দিতেই সরে দাঁড়ালেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলে খবর। অবশ্য রাজাপাক্ষে সরকারের ওপর পদত্যাগ করার প্রভূত চাপ তৈরি হয়েছিল।
এদিকে, শ্রীলঙ্কা সরকার দেশব্যাপী কারফিউ জারি করেছে। সোমবার রাজাপাক্ষে পদত্যাগ করার পর শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রী চান্না জয়াসুমানাও পদত্যাগ করেন। তাঁর পদত্যাগ পত্র রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এপ্রিল মাসের শুরুতেই শ্রীলঙ্কার পুরো মন্ত্রিসভা একসঙ্গে পদত্যাগ করে। তেসরা মে রবিবার রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষে ও তাঁর বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ছাড়া মন্ত্রিসভার ২৬ জন মন্ত্রী একযোগে পদত্যাগ করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবারই আসরে নামেন রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষে। দ্বীপরাষ্ট্রের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তিনি বিরোধী দলগুলির কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।