মেমোরিয়াল স্লোন কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারের চিকিৎসক লুইস ডিয়াজ জুনিয়ার নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিক সাম্প্রতিক গবেষণাপত্রে বলেছেন - এটি একটি চিকিৎসা যা প্রতিটি ক্যান্সাররোগীকে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ করে তুলেছে।
ক্যান্সারও সেরে যাবে- এমনই আশার আলো দেখাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ক্নিলিক্যাল ট্রায়াল। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনেরের মেমোরিয়াল স্লোন কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারে একটি ওষুধের পরীক্ষা করা হয়েছিল। তারপরই দেখা গেছে রোগীদের প্রায় ১০০ শতাংশেরই ক্যান্সার নির্মূল হয়েছে।
তবে খুব ছোট আকারেই এই ট্রায়াল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই ছোট্ট ট্রায়লটি ঘিরেই আশার আলো দেখছেন অনেক বিশেষজ্ঞরা। তবে অনেকেই এখনও সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে নারাজ ড্রাগটিওর ওপর। ক্যান্সার একটি মারণ রোগ। আক্রান্তরা রীতিমত কষ্ট পায়। চিকিৎসা অর্থাৎ, কেমো থেরাপি বা অপারেশনও যথেষ্ট কষ্টদায়ক। কিন্তু এই ওষুধটি যদি আগামী দিনে আরও সফল হয় তাহলে রোগীকে আর এত কষ্ট সহ্য করতে হবে না বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতে ওষুধটি ডোস্টারলিম্যাব। যা মাত্র ১২ জন রেকটাল ক্যান্সার রোগীর ওপর প্রয়োগ করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে একাধিক শারীরিক পরীক্ষা, এন্ডোস্কোপি, পজিট্রন এমিশন টোমোগ্রাফি বা পিইটি এমনকি এমআরআই স্ক্যান দ্বারা রোগটি সনাক্ত করা যায়নি। মনে করা হচ্ছে রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে।
মেমোরিয়াল স্লোন কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারের চিকিৎসক লুইস ডিয়াজ জুনিয়ার নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিক সাম্প্রতিক গবেষণাপত্রে বলেছেন - এটি একটি চিকিৎসা যা প্রতিটি ক্যান্সাররোগীকে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ করে তুলেছে। এর আগে এমন কোনও চিকিৎসা ছিল না বলেও দাবি করেছেন তিনি। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলোরেস্টাল ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ সান ফ্রান্সিসকোস অ্যালান পি ভেনুক এই গবেষণারই অঙ্গ ছিলেন। তাঁরাও বলেছেন- এটি প্রথম। প্রতিটি একক রোগীর সম্পূর্ণ ক্যান্সার নির্মূল হয়েছে।
ভয়ঙ্কর কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন সেশনের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ক্যান্সার রোগী- যারা সুস্থ জীবনের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিবেন তাদের বেশ কয়েকজন এই ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁদের আর কোনও অস্ত্রোপচার করতে হয়নি। কিন্তু তাঁরা বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন বলেও দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এটি সাধারণ ওষুধের মতই। ওষুধ কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের স্পনসর করা ট্রায়াল শেষ হওয়ার ২৫ মাস পরেও রোগীদের মধ্যে ক্যান্সারের কোনও লক্ষ্মণ ছিল না বলেও দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
রোগীদের ৬ মাস ধরে প্রতি তিন সপ্তাহে ডাস্টারলিমাব দেওয়া হয়েছিল। ওষুধটির লক্ষ্য ক্যান্সার কোষগুলিকে উন্মোচন করা । যরীরের ইমিউন সিস্টেমকে প্রাকৃতিকভাবে তাদের সনাক্ত করতে ও ধ্বংস করে দেয় এটি। ট্রায়ালের সময়ই ওষুধটির দাম ধার্য করা হয়েছিল ৮.৫৫ লক্ষ টাকা প্রতি ডোজ।
বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এখনও সংশয় রয়েছে এই ওষুধটি নিয়ে। অনেকেই মনে করছেন মাত্র ১২ জনের ওপর ট্রায়ালের ফলাফল বিবেচনা করে যে বিশেষ সিদ্ধান্তে আসা হয়েছে যা আগামী দিনে অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দিতে পারে। আগামী দিনে আরও বেশি মানুষের ওপর ট্রায়াল করে তার ফলাফল বিবেচনা করে তবেই সিদ্ধান্তে আসা উচিৎ। বিশ্বের সবকটি দেশেই এই ওষুধের ট্রায়াল চলা জরুরি। না হলে কোনও স্থির সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব নয় বলেও অনেকে মনে করছেন।