'ঐক্যই একমাত্র আশা', তিন সপ্তাহ কোমায় থেকে করোনা-কে হারাবার এ এক অনবদ্য কাহিনি

কী ভাবছেন, আপনার ধর্মই শ্রেষ্ট তাই আপনাকে ছুঁতে পারবে না করোনা

ভাবছেন আপনি ধর্মপ্রাণ, ঈশ্বরের সেবা করেন তাই কোভিড-১৯ হওয়ার ভয় নেই

ভাবছেন আপনি অনেক পূণ্যের কাজ করেছেন, তাই ঈশ্বর আপনাকে রোগের হাত থেকে বাঁচিয়ে দেবে

এই ভাবনাগুলো কতটা ঠুনকো তার হাতে নাতে প্রমাণ পেলেন এই করোনা-যোদ্ধা

 

পৃথিবীর বহু মানুষের সেবা করেন তিনি। বিশ্বের জন্য অনেক ভালো ভালো কাজ করেন। তাঁর কোভিড-১৯ রোগ হবে কী করে? এমনটাই ভাবতেন এলি বিয়ার। 'ইউনাইটেড হাতজালাহ' নামে বিশ্বখ্যাত অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। গত মার্চ মাসে ইজরাইলের এই বাসিন্দা বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০০ কিলোমিটার দূরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি-তে কোভিড-১৯ রোগীদের পরিষেবা দিতে গিয়েছিলেন। সেখানে নিজেই আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তিন সপ্তাহ পর করোনাভাইরাস-কে পরাজিত করার পর, তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন।

পপ্রথম জীবনে স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মি হিসাবে কাজ করতেন এলি। সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্স ও অ্য়াম্বুসাইকেল অর্থাৎ মোটরসাইকেলে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু করেছিলেন, তিনি। আজ বিশ্বের অনেকগুলি দেশে তাঁর সংস্থার অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চলে। বিশ্বের অন্যতম দ্রুত স্বাস্থ্য পরিষেবা হিসাবে ধরা হয় 'ইউনাইটেড হাতজালাহ'কে। মার্চের মাঝামাঝি এলি যখন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছিলেন, তখন তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছিল।

Latest Videos

কথা বলা তো দূর, ভালো করে শ্বাসই নিতে পারছিলেন না তিনি। ডাক্তাররা তাঁকে আইসিইউ-তে ভর্তি করেন। কিন্তু, সেখানে রেখেও তাঁরা নিশ্চিন্ত হতে পারেননি। ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে ইনডিউসড কোমা-তে পাঠানো হয়। বাড়ি থেকে ৫০০০ কিলোমিটার দূরের এক শহরে কোমায় আচ্ছন্ন অবস্থায় শুরু হয়েছিল তাঁর কোভিড-১৯'এর বিরুদ্ধে লড়াই। তিন সপ্তাহ পর তাঁকে কোমার প্রভাব থেকে বের করে এনে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট আসে নেতিবাচক।

কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর সম্প্রতি এক ইজরাইলি ধনকুবের-এর ব্যক্তিগত জেট বিমানে দেশেও ফিরেছেন তিনি। অ্যাম্বুল্যান্সে মায়ামি বিমানবন্দরে যাওয়ার পথেও যেমন বহু মানুষ তাঁকে বিদায় ও শুভকামনা জানিয়েছেন, দেশে ফেরার পরও নিজের সংস্থার কর্মী ও উপকৃত মানুষদের কাছ থেকে বীরের সম্মান পেয়েছেন তিনি।

তবে, কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার পরের এলি বিয়ার অনেকটাই পাল্টে গিয়েছেন। কোভিড-১৯ রোগ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর তিনি জানিয়েছেন, তিনি একজন ধর্মপ্রাণ ইহুদি। মনে করতেন, এত মানুষের সেবা করেছেন, ঈশ্বর তাঁকে রক্ষা করবেন। কিন্তু, কোভিড-১৯ রোগ, কোনও ভেদাভেদ করে না। সে দেখে না ধর্ম পরিচয়, কে ইহুদি, কে মুসলমান, কে হিন্দু, কে খ্রিষ্টান। সে দেখে না, কে মানব জাতির সেবা করছে, কে করছে না। সবাইকেই সমান চোখে দেখে।

আর এই ভাইরাসই তাঁর চোখ খুলে দিয়েছে। মানুষের উপকার করেন বলে তাঁর এই রোগ হবে না বলে যে গর্ব ছিল, তা কতটা ঠুনকো তা এই রোগ প্রমাণ করে দিয়েছে। তাই এলি এখন বলছেন, ধর্ম, বর্ণ, আর্থিক সামর্থের বিচারে মানুষকে যতই ভাগ করা হোক না কেন, দিনের শেষে সবাই সমান। বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে, রোগের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে এক হয়ে লড়তে হবে। ভাইরাস তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। তাই, এই ভাইরাসকে পরাজিত করার রাস্তা একটাই, ভেদাভেদ ভুলে এক হতে হবে। ঘৃণা, জাত্যাভিমান সবই ঠুনকো।

Share this article
click me!

Latest Videos

ফিরহাদকে কড়া ডোজ দিলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari #shorts #shortsvideo #suvenduadhikari #shortsfeed
PM Modi Live : কুয়েতে Gulf Spic-এর ভারতীয় কর্মীদের সঙ্গে আড্ডা মোদীর, দেখুন সরাসরি
‘West Bengal-এ জঙ্গিদের সরকারের মুখোশ Mamata Banerjee’ Suvendu Adhikari-র ঝাঁঝালো তোপ মমতাকে
অনলাইনে পুজোর দেওয়ার নামে প্রতারণা! ঘাড় ধরে নিয়ে গেল পুলিশ | Hooghly News Today
কেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করেছিল? আসল কারন ফাঁস করলেন Suvendu Adhikari, শুনলে চমকে উঠবেন