চিন ও ভুটানের মধ্যে সম্পর্ক ১৯৪৯ সাল থেকে উত্তেজনাপূর্ণ। সেই সময় চিন তিব্বত আক্রমণ করেছিল। চিনের নেতা মাও জে-টং-এর নির্দেশে চিন অবৈধভাবে ভুটানের ৩০০ বর্গমাইল ভূখণ্ড দখল করে এবং মানচিত্রে একে চিনের অংশ হিসেবে বর্ণনা করে।
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা পছন্দ করছে না চিন। এ কারণেই প্রতিবেশী দেশ ভুটানকে হুমকি দিতে শুরু করেছে বেজিং। ভারত ও ভুটানের ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে নারাজ ড্রাগনভূমি। ভারতের সঙ্গে জোট বাঁধার জন্য ভুটানকে হুমকি দিয়েছে ড্রাগন। বিশেষজ্ঞদের তৈরি করা বিশেষ রিপোর্টে নেপালের অ্যাপারডাফাস ডটকম এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আঞ্চলিক বিরোধ উস্কে দিতে চিন এখন ভুটানকে হয়রানি করতে পারে।
চিন ও ভুটানের মধ্যে সম্পর্ক ১৯৪৯ সাল থেকে উত্তেজনাপূর্ণ। সেই সময় চিন তিব্বত আক্রমণ করেছিল। চিনের নেতা মাও জে-টং-এর নির্দেশে চিন অবৈধভাবে ভুটানের ৩০০ বর্গমাইল ভূখণ্ড দখল করে এবং মানচিত্রে একে চিনের অংশ হিসেবে বর্ণনা করে। এর পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। এ কারণেই ভারতের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে ভুটান। ভারত ১৯৬১ সালে ভুটানি নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণের জন্য প্রতিবেশী দেশে তার সামরিক প্রশিক্ষণ দল (IMTRAT) মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত ভারত ভুটানকে ক্রমাগত সাহায্য করে আসছে।
ভারত শিক্ষার ক্ষেত্রে ভুটানকে ৪৫০০ কোটি টাকা অনুদান এবং ২০১৮ থেকে ২০২৩ সময়ের জন্য ৪০০ কোটি টাকার ট্রানজিশনাল বাণিজ্য সহায়তা সুবিধা প্রদান করবে, যা উভয়ের মধ্যে অর্থনৈতিক সংযোগকে শক্তিশালী করবে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক ভারত সফর করেন। এ সময় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়। এই কারণেই সম্ভবত দুই দেশের মধ্যে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সে কারণে তিনি এখন ভুটানকে টার্গেট করা শুরু করেছেন।
ভারত ও ভুটানের মধ্যে সুসম্পর্ক
ভারত ভুটানকে বাণিজ্য, শিক্ষা, জলবিদ্যুৎ এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সহ বিস্তৃত ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সহায়তা প্রদান করে আসছে। ভুটানের জন্য ভারত একটি প্রধান রপ্তানি বাজার। তারপর জামাকাপড় হোক বা খেলনা, ভুটানের সব ধরনের পণ্যই বিক্রি হচ্ছে ভারতের বাজারে। ভুটানে ১০ হাজার মেগাওয়াট একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উন্নয়নে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসেই খুলে দেওয়া হয় ভারত ভুটান সীমান্ত। ভারত-ভুটান সীমান্তের জয়গাঁও-ফুন্টশিলিং গেট এবং চামুর্চি-সামসি গেটের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ ও অসম সীমান্তে অবস্থিত দুই দেশের সমস্ত সীমানা খুলে যায়। কোভিডের সময় ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে সীমান্ত দিয়ে পণ্য পরিবহন ও যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সীমান্ত বন্ধ থাকায় ভুটানের বাসিন্দারা তাদের নিত্য প্রয়োজনে, জিনিসপত্র কেনাকাটা ও ওষুষপত্রের প্রয়োজনে যেমন ভারতে আসতে পারছিলেন না, তেমনি সীমান্ত বন্ধ থাকায় ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ভুটানে যেতে পারছিলেন না এবং সীমান্ত এলাকার ভারতীয় ব্যাবসায়ীরাও বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিলেন।