
চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সোমবার রাশিয়া সফরে মস্কো পৌঁছেছেন। এখানে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। শি জিনপিং রাশিয়া সফরের আগে বলেছিলেন যে তার শান্তি পরিকল্পনা ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবে। এতে সব পক্ষের উদ্বেগও দূর হবে। তার শান্তি পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি সাধারণ বোঝাপড়া তৈরিতেও সাহায্য করবে।
রাশিয়া-চিন সম্পর্ক দৃঢ় হচ্ছে
রুশ সংবাদপত্র রাশিয়ান গেজেটে শি জিনপিংয়ের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। শি জিনপিং এই প্রতিবেদনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লিখেছেন। জিনপিং লিখেছেন যে ১০ বছর আগে তিনি যখন চিনের রাষ্ট্রপতি হন, তখন তিনি প্রথম যে দেশটিতে গিয়েছিলেন তা ছিল রাশিয়া। গত দশ বছরে শি জিনপিং আটবার মস্কো সফর করেছেন। এছাড়াও, পুতিন এবং জিনপিং দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে মোট ৪০ বার দেখা করেছেন। নিবন্ধে, জিনপিং দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব জোরদার করার ওপর জোর দেন যাতে যেকোনো দেশের একচেটিয়া আধিপত্য দূর করা যায়। শি জিনপিং এবং ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার বৈঠক করবেন।
জিনপিং লিখেছেন যে রাশিয়া এবং চিন একসাথে একটি নীলনকশা তৈরি করেছে, যার অধীনে দুই দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াবে এবং সময়ে সময়ে দুই প্রধান বিশ্বের নানা ইস্যুতে আলোচনা করবে। এর আগে চিনের বিদেশমন্ত্রী ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন। চিনের বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে তারা আশা করে যে ইউক্রেন এবং রাশিয়া আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখবে এবং রাজনৈতিক মীমাংসার দরজা বন্ধ করবে না।
পুতিনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়
জিনপিংয়ের রাশিয়া সফর এমন এক সময়ে এসেছে যখন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ফৌজদারি আদালতে ১২৩ জন সদস্য থাকায় পুতিনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভ্লাদিমির পুতিনও ইউক্রেন ইস্যুতে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নেওয়ার জন্য শি জিনপিংকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এর আগে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে গুলি করে নামানো হয় চিনা ড্রোন। দেখা যায় চিনে তৈরি এই ড্রোনের ভেতরে ২০ কেজি ওজনের বোমা রয়েছে। ফলে রীতিমত প্রশ্ন উঠতে শুরু রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধে চিনের ভূমিকা নিয়ে। এই বোমাটি নিষ্ক্রিয় করে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। তবে এই ড্রোনটির সঙ্গে চিনা সেনাবাহিনীর কোনো যোগসূত্র ছিল কি না, এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি। কিংবা ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে লড়াইয়ের এলাকায় চাইনিজ ড্রোন থেকে এত বেশি পরিমাণ বিস্ফোরক কে পাঠাচ্ছিল তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ফলে রহস্য রয়েই গিয়েছে।